ঢাকা, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২০ মহররম ১৪৪৬

গুলশানে স্পা সেন্টার: পুলিশের অভিযান হয়, কাজ হয় না


প্রকাশ: ১২ জানুয়ারী, ২০২৩ ১৭:৫৮ অপরাহ্ন


গুলশানে স্পা সেন্টার: পুলিশের অভিযান হয়, কাজ হয় না

আব্দুল হামিদ: রাজধানী গুলশানে অগ্রণী ভিলা লা ওপালা ভবনের পাঁচ তলায় “অল দ্যা বেস্টস্পা সেন্টারের মালিক হাসানুজ্জামান ওরফে হাসান এবং ম্যানেজার তার স্ত্রী পায়েল। ওই স্পা সেন্টারে গত দুই মাসে চারটি অভিযান চালিয়েছে শুধু পুলিশই। কিন্তু কীসের জন্য সেটা বন্ধ হয় না, সেটাও জানে না পুলিশ। এছাড়া বিউটি পার্লারের কথা বলে ভাড়া নিয়ে স্পা ব্যবসা দীর্ঘদিন ধরে চালিয়ে আসছিল। গুলশান এলাকার ওই যুবকের নামে আগেও বিভিন্ন অভিযোগে অভিযান চালিয়েছে। এসময় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতারও হয়েছেন হাসান। আগের দুটি মামলায় গত বুধবার (১১ জানুয়ারি) আদালতে হাজিরা দিতে গেলে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

গতকাল বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) দুপুরের পর থেকে বিকাল পর্যন্ত গুলশান-২-এর ৪৭ নম্বর রোডের ২৫ নম্বর ভবন ও তার আশপাশের এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে আবাসিক এলাকার মধ্যে বিউটি পার্লারের নামে অনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে বলে অনুসন্ধানে নামে বাংলা ট্রিবিউন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, হাসান নামে এক প্রভাবশালী ব্যক্তি ভবনটির চার তলার একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নেন। সেই ফ্ল্যাটে তার স্ত্রী পায়েলকে দিয়ে গত ৮ থেকে ১০ বছর ধরে স্পা সেন্টারটি পরিচালনা করে আসছেন। মূলত সেখানে স্পা সেন্টারের আড়ালে চলতো অনৈতিক কর্মকাণ্ড। আগে একাধিক বার হাসানের স্পা সেন্টারটিতে অভিযান পরিচালনা করেও সেটি বন্ধ করা যায়নি বলে জানান স্থানীয়রা। এছাড়া হাসানের চলাফেরা প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে থাকায় তাকে ভয়ে কিছু বলতে পারতেন না তারা।

বুধবার থেকে পুরো গুলশানে স্পা সেন্টানগুলো বন্ধ রয়েছে বলেও খবর পাওয়া গেছে। একাধিক ব্যবসায়ী জানান, পুরো গুলশান থমথমে। স্পার প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ। ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তারা যে যার মতো গা ঢাকা দিয়েছেন, বলে জানান একজন স্পা ব্যবসায়ী।

আরও জানা যায়, গত ৩ থেকে ৪ বছর আগে হাসানকে ফ্ল্যাটের মালিক পার্লার করতে ভাড়া দেন। ভাড়া নেওয়ার পর হাসান তার স্ত্রী পায়েলকে দিয়ে এখানে স্পা সেন্টারের ব্যবসা শুরু করেন। প্রতিদিন বেলা ১২টার পর থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত স্পা সেন্টারের কার্যক্রম চলতো। স্পা সেন্টারটিতে নিয়মিত আট থেকে দশ জন নারীর যাওয়া-আসা ছিল। মূলত তাদের দিয়েই হাসান ও পায়েল দম্পতি স্পা সেন্টারের ব্যবসা করে আসছেন।

জানা যায়, গতকাল রাজধানীর গুলশানে আবাসিক ভবনে বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধে বুধবার অভিযান পরিচালনা করে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)। গুলশান-২-এর ৪৭ নম্বর রোডের ২৫ নম্বর বাড়িতে অভিযান চালালে অবৈধ স্পা সেন্টারের সন্ধান পায় ডিএনসিসি। সেখানে অভিযান চালাতে গেলে দুই তরুণী ভবন থেকে লাফিয়ে পড়েন। ওই ঘটনায় একজন মারা যান আর একজন আহত হন। দীর্ঘদিন গুলশানের মতো অভিজাত এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে স্পা সেন্টারে আড়ালে একটি চক্র অনৈতিক কাজ করছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গুলশান-২-এর ৪৭ নম্বর রোডের পশ্চিম পাশে একটি এপ্যামেন্ট রয়েছে। এরমধ্যে আরও তিন-চারটি ভবন আছে। তারমধ্যে ২৫ নম্বর নিয়ে ঠাই দাঁড়িয়ে আছে অগ্রণী ভিলা লা ওপালা। ওই ভবনের পাঁচ তালায় “অল দ্যা বেস্ট নামে স্পা সেন্টার পরিচালিত হতো। এসব ভবনের মাঝে পাঁচ থেকে ছয় ফুট ফাঁকা জায়গা আছে। সব ভবনে প্রবশে আলাদা দরজা আছে। এই ভবনটি পাঁচ তলা, প্রতিটি তলায় চারটি করে মোট ২০টি ফ্লাট আছে। সবগুলোই অফিস ভাড়া দেওয়া আছে। ওই ভবনের গ্রাউন্ড ফ্লোরে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা আছে। সেখান থেকেই লিফট ও সিঁড়ি দিয়ে ভবনে উঠার ব্যবস্থা রয়েছে। ভবনের লিফটের সামনেই টেবিল-চেয়ার নিয়ে বসেন ভবনের অতিরিক্ত ম্যানেজার আব্দুল মোতালেব। ওই ভবনের পাঁচ তলার উত্তর পাশের একটি ফ্লাটে স্পা সেন্টার চলতো। পাশের ফ্ল্যাটি একটি গ্রুপ অফ কোম্পানিও রয়েছে। স্পা সেন্টার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তালা দিয়ে রেখে যাওয়ায় ভিতরে প্রবেশ করা যায়নি। তবে দেখা গেছে, ওই ফ্ল্যাটির সামনে হাই সিকিউরিটি ব্যবস্থা। রুমে ঢুকতেই ফিঙ্গারপ্রিন্ট আর দরজার ওপরে সিসি ক্যামেরা লাগানো।

তিনি বলেন, এই ভবনে ২০টি অফিস আছে। সেখানে সব অফিসেই নারী স্টাফ আছেন। এখন এই সুযোগে বাইরের নারীরা এসে ওই ফ্লাটে স্পাতে কাজ করেন। এছাড়া প্রায় সময়ই অভিযান চালায় বিভিন্ন সংস্থা। কিন্তু কীসের জন্য বন্ধ হয় না, সেটা বলতে পারে না এই ম্যানেজার।

অগ্রণী ভিলা লা ওপালা ভবনের অতিরিক্ত ম্যানেজার আব্দুল মোতালেব বলেন, গতকাল বুধবার অভিযান পরিচালনা করে ডিএনসিসি। অভিযানের একপর্যায়ে ভবনের চার তলার স্পা সেন্টারে প্রবেশ করে। এতে অভিযানের কথা শুনে স্পা সেন্টারে কর্মরত নারীরা পালানোর জন্য বিভিন্ন রাস্তা খুঁজতে থাকেন। এসময় ফারজানা ও তার দুই নারী সহকর্মী নিজেদের বাঁচাতে ভবনের উত্তর পাশের একটি কক্ষের এসির কম্প্রেসারের ফাঁক দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। এসময় ফারজানা ও তার আরেক সহকর্মী এসি কম্প্রেসারের ফাঁক দিয়ে পাশাপাশি থাকা দুটি ভবনের নিচের ফাঁকা জায়গায় পড়ে যান। তাদের তৃতীয় সহকর্মী এসির কম্প্রেসারের দিয়ে নামতে গেলে সেখানে ফাঁকে আটকে যান। পরে তাকে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেওয়া হয়। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আসার আগেই তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করেন। এতে তারা এসে বাসার নিচ থেকে চলে যান।

ফায়ার সার্ভিস সিনিয়র স্টেশন অফিসার ফরহাদ উদ্দিন বাংলা ট্রিবিউনকে খবর পেয়ে গুলশান-২এ উদ্ধার করতে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, আমরা সেখানে পৌঁছালে ভবনের নিচ থেকেই জানান হয়। আটক নারীকে উদ্ধার করা হয়ে গেছে। পরে আমরা চলে আসি।

রাস্তা থেকে ভবনের প্রধান দরজার সঙ্গেই সিকিউরিটি গার্ড রুম। সেখানে বসেন সিকিউরিটি গার্ড আব্দুল্লাহ। তার পেছন দিয়ে খুব সরু একটি গলি দিয়ে অগ্রণী ভিলা লা ওপালা ভবনের পেছনে যেতে হয়। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, ভবনের উত্তর পাশে সেফটি ট্যাংকের ওপরে রক্তের দাগ। পাঁচ তলা থেকে ওই সেফটি ট্যাংকের ওপরে পড়েন স্পার কর্মী নিহত ফারজানা বেগম ও আহত রিয়া আক্তার। ওই ভবনের পাশে পুরো গলিতে রক্তের ফোঁটার দাগ স্পষ্ট। পুলিশ জানায়, ফারজানার নিচে পড়ে যাওয়ায় তার মাথা ও শরীরের বিভিন্ন অংশ দিয়ে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়, এ কারণে তিনি হাসপাতালে মারা যান। এছাড়াও ওই ঘটনায় চাঁদনী বেগম নামে আরও একজন নারী আহত হয়।

ভবনের নিরাপত্তাকর্মী আব্দুল্লাহ বলেন, আভিযানিক দলটি ভবনে প্রবেশ করার ১০-১৫ মিনিটের মধ্যে উপর থেকে নিচে কিছু একটা পড়ে যাওয়ার শব্দ শুনে আমরা দৌঁড়ে যাই। আমরা ভবনের বাম পাশের নিচের খালি জায়গায় গিয়ে দেখি, পাশাপাশি দুই ভবনের মাঝে দুই নারী পড়ে আছেন। এদের মধ্যে একজনের মাথা ফেটে রক্ত বের হচ্ছিল, অন্যজন গুরুতর আহত হয়ে কাতরাচ্ছিল। তখন কয়েকজন পুলিশ সদস্য তাদের ধরাধরি করে নিয়ে আসে। এর প্রায় ৩০ মিনিট পর থানা পুলিশ এলে ওই দুই নারীকে গাড়িতে করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। এর মধ্যে স্পা সেন্টার থেকে ৮-১০ জন নারীকে গাড়িতে তুলে নিয়েও যায় তারা।

ক্রয় সূত্রে ওই ফ্লাটের মালিক ইশরাত জাহানের স্বামী হোসেন খান প্রথমে ফ্লাটের কথা অস্বীকার করেন। পরে তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমার ফ্লাট থেকে কেউ পড়ে মারা গেছে, সেটা আমার জানা নেই। আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না। তবে তিনি ফ্লাটের ভাড়াটিয়া হাসান বিউটি পার্লারের কথা বলে বাসা ভাড়া নিয়েছেন। কিন্ত এখন কি করে সেটা আমার জানা নেই। তিনি বলেন, তার কাছে বাসা ভাড়া ও সার্ভিস চার্জ বাবদ অনেক টাকা পাবো। তাকে আমার পাওনা শোধ করে বাসা ছেড়ে দিতে বলেছি। কিন্ত সে টাকাও দেয় না, বাসাও ছাড়ে না। এরআগে তার নামে ওই ভবনের অন্য অফিসের লোকজনও অভিযোগ দিয়েছে। তাকে এখন আর ওই বাসা দিবো না, অন্য কোথাও ভাড়া দিবো।

নিহত ফারজানার স্বামী জাহিদ হাসান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমার স্ত্রী ফারজানা বেগম প্রতিদিন ওখানে যেত না, তার বড় বোনের সঙ্গে সপ্তাহে কয়েকদিন যেত। গতকাল বুধবার বেলা ১১ টায় খিলক্ষেত বাসা থেকে তার বড় বোনের সঙ্গে বের হয় সে। পরে বিকালের দিকে জানতে পারি আমার স্ত্রীকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসে তাকে মৃত অবস্থায় পায়। ওই ভবনে অনৈতিক কাজ হইতো কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা জানতাম ফারজানা বিউটি পার্লারে চাকরি করেন। অনৈতিক কোন কাজ হয় কিনা তা আমার জানা নেই। তবে আমরা যতটুকু জানতে পেরেছি আমার স্ত্রীকে কেউ ফেলে দেয় নি, সে মানসম্মানের ভয়ে পালাতে গিয়েই পড়ে যায়। আর তাতেই তার মৃত্যু হয়েছে।

অপরদিকে আহত চাঁদনী বেগমের স্বামী তারেক বলেন, আমার স্ত্রী গুলশানের একটি সুপার সপে (স্পা সেন্টার) কাজ করতেন। বুধবার সকালে বাসা থেকে বের হয় চাঁদনী। রাতে বাসায় না ফিরলে অনেক খোঁজাখুজির পরে জানতে পারি চাঁদনী অসুস্থ হয়ে ঢাকা মেডিকেলে রয়েছে। আমি সিএনজি চালক। এটা দিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হতো। তাই বাড়তি আয়ের জন্য স্ত্রী কাজে যেতেন।

চাঁদনী বাবা আলমগীর হোসেন বলেন, গতকাল রাতে মেয়েকে ঢামেক হাসপাতাল থেকে হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে নিয়ে আসে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে হাতের ব্যান্ডেজ করে রাত্রে বরগুনায় গ্রামের বাড়ি চলে আসি। সে এখন ভালো আছে। এই ব্যক্তির দুই মেয়ে এক ছেলের মধ্যে এই মেয়েই ছিল সবার বড়। পারিবারিক টানাপোড়নে মেয়েকে ঢাকায় এক সিএনজি চালকের সঙ্গে বিয়ে দেন। মেয়ে-জামাই নিয়ে ঢাকায় থাকতেন। পাশাপাশি চাকরি করতেন বলে জানান তিনি।

এই মামলা তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আসিফ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, হাসান ও পায়েল দম্পতিই চুরি করেই এই স্পা সেন্টার চালাতেন। তাদের নামে স্পা চালানোর জন্য গত নভেম্বর ও ডিসেম্বর দুই মাসেই অনৈতিক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধ আইনে চারটি মামলা হয়েছে। এছাড়া ওই মামলায় হাসানুজ্জামান ওরফে হাসান আগে একবার জামিন নিয়ে আসে। কিন্তু চলতি বছরে আবার আদালত থেকে জামিন নিতে গেলে তাকে কারাগারে পাঠানোর আর্দেশ দেন। বর্তমানে হাসান জেলে আর তার স্ত্রী সাইনুর আক্তার পায়েল পলাতক আছেন।

এসআই আসিফ বলেন, গুলশানের স্পা সেন্টারে অভিযানের ঘটনায় ডিএনসিসির প্রসিকিউশন অফিসার (অঞ্চল-৩) আব্দুস সালাম বাদী হয়ে গুলশান থানায় একটি মামলা করেন। ওই মামলায় তিন জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার আসামিরা হলেন- স্পা সেন্টারের মালিক হাসানুজ্জামান ওরফে হাসান, তার স্ত্রী স্পা সেন্টারের ম্যানেজার পায়েল ও ওই ঘটনায় বাসার মালিক এটিএম মাহবুবুল আলম নামেও মামলা হয়েছে। মামলার এজাহারে ডিএনসিসি থেকে বাসার মালিক হিসাবে তার নাম উল্লেখ করেছেন। আমরা তদন্ত করে দেখবো বাসার প্রকৃত মালিককে, তাকেই আসামি করা হবে।

নিহত ফারজানা আক্তারের বিষয়ে জানতে চাইলে তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেন, ফারজানা আক্তারের মৃত্যুর বিষয়টি অপমৃত্যু হিসেবে রেজিস্টার হয়েছে। আমরা এখন তদন্ত করে দেখব আসলে তার মৃত্যুর কারণ কী। এছাড়া আমরা তদন্তে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করব, সে আসলে কীভাবে মারা গেছে।

মামলার এজাহারে যা আছে- ‘অভিযুক্তরা সংঘবদ্ধভাবে অনৈতিক উপায়ে লাভবান হওয়ার জন্য পতিতালয় চালাচ্ছিল। মামলাটি আমরা তদন্ত করছি। এছাড়া ডিএনসিসির অভিযানে আটক ছয় নারীকে পতিতাবৃত্তিতে জড়িত থাকার অভিযোগে ডিএমপির অধ্যাদেশ অনুযায়ী প্রসিকিউশন ইউনিটের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা মকবুল হোসাইন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘নগরবাসীর চলাচল নির্বিঘ্ন করতে ফুটপাত দখলমুক্ত করার জন্য নিয়মিত অভিযান চালানো হয়। এছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্স খতিয়ে দেখা এবং আবাসিক এলাকায় বিনা অনুমতিতে কোনো ব্যবসা পরিচালনা করছে কিনা তা দেখতেই অভিযানটি পরিচালিত হয়েছিল। ম্যাজিস্ট্রেট ফ্লাটের সামনে গিয়ে দরজা খুলতে বললে সেখান থেকে দুজন তরুণী লাফ দেন। তাৎক্ষণিক বিষয়টি জানতে পেরে ওই দুই তরুণীকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে ওই স্পা সেন্টারে অভিযান আর পরিচালনা করেননি ম্যাজিস্ট্রেট।

জরিমানা দিয়ে মুক্ত আটকরা-

গুলশানের ‘অল দ্য বেস্ট স্পাসেন্টার থেকে আটক নয়জনকে পাঁচশত টাকা জরিমানা অনাদায়ে পাঁচদিনের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার সেই জরিমানার টাকা পরিশোধ করে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের হাজতখানা থেকে মুক্ত হয় তারা। সিএমএম আদালতের হাজত খানার ইনচার্জ শহীদুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার তাদের সিএমএম আদালতে হাজির করে পুলিশ। আদালতে তারা নিজেদের অপরাধ স্বীকার করলে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শহিদুল ইসলামের আদালত তাদের পাঁচশ টাকা করে অর্থদণ্ডের বিনিময়ে মুক্তির আদেশ দেন। আসামিদের মধ্যে এমদাদুল হক তামিম, পিযুষ কান্তি রায় ও মুশফিকুর রহমানের নাম জানা গেলেও বাকি ছয় নারী আসামির নাম জানা যায়নি।


   আরও সংবাদ