ঢাকা, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২০ মহররম ১৪৪৬

ফার্মগেটে চাঁদাবাজ তাজুলের কাছে জিম্মি হকাররা


প্রকাশ: ৬ জুলাই, ২০২২ ২৩:৫১ অপরাহ্ন


ফার্মগেটে চাঁদাবাজ তাজুলের কাছে জিম্মি হকাররা

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঈদ সামনে রেখে জমে উঠেছে ঢাকার ফুটপাত। এই মৌসুমে দ্বিগুণেরও বেশি, কোনো ক্ষেত্রে তিনগুণ হয়ে গেছে চাঁদার অঙ্ক। হকাররা বলছেন, যেখানে ফুটপাত আছে, সেখানে দোকান আছে, আছে চাঁদাবাজরাও। বিশেষ করে রাজধানীর ফার্মগেটে এক চাঁদাবাজের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। 

স্থানীয় হকারদের অভিযোগ, তেজগাঁও থানাধীন ২৭ নম্বও ওয়ার্ড যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক তাজুল ইসলাম একাই পুরো ফার্মগেট এলাকা নিয়ন্ত্রণ করেন। এর আগে বেশকজন লাইনম্যান নামধারী চাঁদাবাজ থাকলেও তারা তাজুলের চাকরি করছেন। শুধু ফুটপাতের দোকানপাট নয় গ্রীনরোড টেম্পু স্ট্যান্ডের দোতলায় বসিয়েছেন গাঁজা ও ইয়াবার পাইকারি আড়ৎ। প্রতিদিন সেখানে বিপুল অংকের মাদকদ্রব্য বিক্রি হলেও অজ্ঞাাত কারণে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়না পুলিশ।

এছাড়া ২৭ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদকও এই টাকার ভাগ পান না। তাজুলের ক্ষমতার কাছে অনেকটা জিম্মি হয়ে পড়েছেন সেখানকার যুবলীগের নেতাকর্মীরা। এ বিষয়ে তাজুলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এদিকে পুলিশের দাবি, ফুটপাত সিটি করপোরেশনের জায়গা, এসব জায়গায় হকার বসায় সিটি করপোরেশনের লোকজন কিংবা রাজনৈতিক লোকজন। চাঁদাবাজি করে তারা। এ বিষয়ে পুলিশের কী করণীয় আছে। ফুটপাতকে কেন্দ্র করে অনৈতিক স্বার্থ হাসিল করে বিভিন্ন মহল। আর দোষ দেওয়া হয় পুলিশের ওপর। পুলিশ এ চাঁদাবাজির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়। কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেলে পুলিশ ব্যবস্থা নেয়। এছাড়া পুলিশ সিটি করপোরেশনের জায়গায় হস্তক্ষেপ করে না। সিটি করপোরেশন চাইলে হকার উচ্ছেদ কিংবা পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নিতে পারে।

বাংলাদেশ হকার্স ফেডারেশনের সভাপতি এমএ কাশেম বলেন, ঢাকা শহরে সাড়ে তিন লাখ হকার আছে। ঈদ সামনে রেখে আরো লাখ দেড়েক হকার যুক্ত হয়েছে। তাদের কাছ থেকে সর্বনি¤œ প্রতিদিন ৩০০ থেকে সর্বোচ্চ এক হাজার টাকা নেওয়া হয়। এটা এলাকা ও আকারের ওপর নির্ভর করে। তিনি বলেন, ঈদের আগে রেট বাড়িয়ে যার কাছে যেভাবে পারছে সেভাবেই আদায় করছে লাইনম্যানরা। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তিনগুণও বাড়ানো হয়েছে।

একেকজন লাইনম্যানের অধীনে একটি করে ‘ফুট’ থাকে। একটি ফুটে সর্বোচ্চ ৩০০ হকার বসতে পারে। তাদের একটি করে চৌকির জায়গা (দেড় হাত থেকে দুই হাতাত) বরাদ্দ দেওয়া হয়। তবে ফুটপাত ছাড়াও সরাসরি রাস্তায়ও হকারদের বসতে দেওয়া হয়। 

ফুটপাতে চাঁদার অভিযোগ এবং উচ্ছেদ অভিযান সম্পর্কে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. রাসেল সাবরিন জানান, ফুটপাতে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদে নিয়মিত অভিযান অব্যাহত আছে। আমরা সকালে অভিযান পরিচালনা করলেও বিকালেই নতুন করে এসব দোকান গড়ে ওঠে। আমাদের মাত্র দুজন নির্বাহী মাজিস্ট্রেট থাকায় চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত অভিযান পরিচালনা সম্ভব হচ্ছে না।


   আরও সংবাদ