প্রকাশ: ২১ অগাস্ট, ২০১৯ ১৪:০০ অপরাহ্ন
‘পৃথিবীর ফুসফুস’-খ্যাত অ্যামাজন জঙ্গলে ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়েছে দাবানল। আগের চেয়ে আরও দ্রুতগতিতে দাবানলে পুড়ছে এ জঙ্গল।
ব্রাজিলের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্পেস রিসার্স (আইএনপিই) বলছে, এ বছর এখন পর্যন্ত ব্রাজিলে ৭২,৮৪৩টি অগ্নিকাণ্ড হয়েছে। এরমধ্যে অর্ধেকের বেশি আগুনের ঘটনা অ্যামাজন জঙ্গলের, যা আগের বছরের তুলনায় ৮০ শতাংশ বেশি। তাদের হিসাব মতে, দাবানলে প্রতি মিনিটে অ্যামাজনের প্রায় ১০,০০০ বর্গমিটার এলাকা পুড়ে যাচ্ছে, যা একটি ফুটবল মাঠের প্রায় দ্বিগুণ আয়তনের সমান (একটি ফুটবল মাঠের আয়তন প্রায় ৫ হাজার ৩৫১ বর্গমিটার)।
পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে থাকা অক্সিজেনের ২০ শতাংশেরই উৎপত্তি অ্যামাজনে। গবেষকদের মতে এই বন প্রতিবছর ২০০ কোটি মেট্রিক টন কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে। সে কারণে একে ডাকা হয়ে থাকে ‘পৃথিবীর ফুসফুস’ নামে। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির হারকে ধীর করতে অ্যামাজনের ভূমিকাকে বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়। বিশ্বের দীর্ঘতম এ জঙ্গলটির আয়তন যুক্তরাষ্ট্রের আয়তনের প্রায় অর্ধেক।
ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট ফর স্পেস রিসার্স ২০১৩ সাল থেকে অ্যামাজন জঙ্গলে আগুন লাগা নিয়ে গবেষণা করছে। মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) প্রকাশিত নতুন এক প্রতিবেদনে তারা জানিয়েছে রেকর্ড হারে পুড়ছে অ্যামাজন জঙ্গল। এরইমধ্যে ব্রাজিলের রোন্ডানিয়া, অ্যামাজোনাস, পারা, মাতো গ্রোসো অঞ্চলের কিছু অংশে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। অ্যামাজনে আগুন লাগা কোনও অস্বাভাবিক ঘটনা নয়, কিন্তু এবারের মতো আগুন আগে কখনও ছড়ায়নি জঙ্গলে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাও পাওলোর আকাশ কালো হয়ে গেছে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এটা আসলে মেঘ নয়, হাজার কিলোমিটার দূরে ভয়াবহ এক অগ্নিকাণ্ডের ধোঁয়া চলে এসেছে সেখানে।
সামাজিক মাধ্যম ও সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যাচ্ছে, মধ্যদুপুরেও সেখানকার আকাশ কালো, সূর্য ঢেকে গেছে ধোঁয়া ও ছাইয়ে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের স্যাটেলাইট প্রকল্প কোপের্নিকাস আগুনের ধ্বংসযজ্ঞের একটি ম্যাপ প্রকাশ করেছে। ব্রাজিল থেকে পূর্ব আটলান্টিক উপকূল পর্যন্ত পুরো ‘আগুন পথের’ চিহ্ন আঁকা হয়েছে। দেশটির অর্ধেক এলাকাজুড়েই এখন কালো ধোঁয়া। সেই ধোঁয়া পৌঁছে গেছে পাশ্ববর্তী পেরু, বলিভিয়া এবং প্যারাগুয়েতেও।