ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ ভাদ্র ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

'নকল' গবেষণা পত্র দিয়ে ঢাবি শিক্ষকের পদোন্নতির অভিযোগ


প্রকাশ: ১৪ অগাস্ট, ২০২০ ১৪:০০ অপরাহ্ন


'নকল' গবেষণা পত্র দিয়ে ঢাবি শিক্ষকের পদোন্নতির অভিযোগ

   

ঢাবি প্রতিনিধি : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদভুক্ত ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (এমআইএস) বিভাগের আবু নাসের মুহম্মদ সাইফের নামে এক শিক্ষক 'নকল' গবেষণা দিয়ে প্রভাষক থেকে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পেয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গবেষণার সিংহভাগই হুবহু নকল বলে তথ্য মিলেছে। এ সংক্রান্ত প্রমাণাদি বিএন নিউজের প্রতিবেদকের কাছে এসেছে।

তথ্যানুসন্ধানে দেখা যায়, ২০১৩ সালের জুলাইয়ে বাংলাভিশন রিসার্চ জার্নালের (Banglavision Research Journal) ১৭-২৬ পৃষ্ঠায় আবু নাসের মুহম্মদ সাইফের একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ হয়, যার শিরোনাম ছিল Adoption of Mobile Banking in Bangladesh: Challenges and Prospects। এটি ২০১২ সালের ডিসেম্বরে Bangladesh Journal of MIS এর ১৮১-২০০ পৃষ্ঠায় প্রকাশিত একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবুল কাশেম এবং আরও দুজন গবেষকের M-banking in Bangladesh: Consumer Perceptions and Expectation শিরোনামের গবেষণাপত্রটির হুবহু নকল (প্রায় ৯৯ শতাংশ)।

বাংলাভিশন রিসার্চ জার্নালে প্রকাশিত ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আবু নাসের মুহম্মদ সাইফের গবেষণার ৯ পৃষ্ঠার (রেফারেন্স অংশ ব্যতীত) পত্রটিতে প্রথম পৃষ্ঠায় ২৪ লাইনের মধ্যে ১৭ লাইন, দ্বিতীয় পৃষ্ঠায় ৩৪ লাইনের মধ্যে ২৭ লাইন, তৃতীয় পৃষ্ঠায় ৩৫ লাইনের মধ্যে ৩৩ লাইন, চতুর্থ পৃষ্ঠায় ৩২ লাইনের মধ্যে ২৫ লাইন, পঞ্চম, ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম পুরো পৃষ্ঠা এবং নবম পৃষ্ঠায় ৩৪ লাইনের মধ্যে ২৪ লাইন বিরাম চিহ্নসহ হুবুহু নকল। বাকি লাইনগুলোতে কিছু শব্দ পরিবর্তন করে সম্পাদন করা হয়েছে। গবেষণার ক্রস ট্যাবুলেশন, মিন গুডনেস স্কোর, স্যাম্পল টি-টেস্ট, অ্যানালাইসিস, কম্যুন্যালিটিস, ম্যাট্রিক্স ফলাফল হুবহু নকল বলে প্রতীয়মান হয়েছে।

সূত্র জানিয়েছে, আবু নাসের মুহম্মদ সাইফ প্রভাষক পদ থেকে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পেতে এ গবেষণা নকল করেছিলেন এবং তার এ কাজের মূল্যায়নও হয়েছিল। তিনি প্রভাষক থেকে সহকারী অধ্যাপক পদ লাভ করেছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএন নিউজের প্রতিবেদকে আবু নাসের মুহম্মদ সাইফ জানান, এটা অনেক বছর আগের গবেষণা। একই বিভাগের পার্টটাইম শিক্ষক জহিরউদ্দীন মুহম্মদ বাবরের সাথে এ কাজটি করেছিলাম। এটা আমি কোথাও ব্যবহার করিনি।

গবেষণা নকল কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এ কাজটি হয়েছিল। আমি প্রকাশ করতে চাইনি এবং এ গবেষণার কৃতিত্ব আমি কোথাও উল্লেখ করিনি।

যদিও নিজের জীবন বৃত্তান্তের ‘প্রকাশিত প্রবন্ধসমূহের তালিকা’ অংশের ৫ নম্বরে গবেষণার স্বত্ব স্বীকার করেন আবু নাসের মুহম্মদ সাইফ।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান।


   আরও সংবাদ