ঢাকা, রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ ভাদ্র ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জেএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রের দায়িত্বে কোচিং বাণিজ্যে জড়িত শিক্ষকেরা


প্রকাশ: ৫ নভেম্বর, ২০১৯ ১৩:০০ অপরাহ্ন


জেএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রের দায়িত্বে কোচিং বাণিজ্যে জড়িত শিক্ষকেরা

   

মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি : মণিরামপুরে প্রাইভেট-কোচিং বাণিজ্যের সাথে জড়িত শিক্ষকেরা জেএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জ কেন্দ্র সচিব বিআরডিবি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ উঠেছে। কোচিং বাণিজ্যে জড়িত শিক্ষকদের কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন থেকে অব্যাহতি দিতে অভিভাবকদের আবেদনের প্রেক্ষিতে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার দায়িত্ব না রাখতে লিখিত পত্র দিলেও তাতে কর্ণপাত করেননি কেন্দ্র সচিব। এ নিয়ে অভিভাবকসহ শিক্ষকদের মাঝে বিরুপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

জানা যায়, রাজগঞ্জ কেন্দ্রে উপজেলার পশ্চিাঞ্চলের ২৪ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৯’শ১৩ জন (জেএসসি ও ভোকেশনাল) শিক্ষার্থী চলতি বছর পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। কেন্দ্র সচিবের দায়িত্ব পালন করছেন উপজেলা বিআরডিবি কর্মকর্তা আব্দুস সবুর। 

এপরীক্ষা কেন্দ্রের ৩ লাখ ৮৭ হাজার ৮৫০ টাকা কেন্দ্র ফিসের সিংহভাগই হজম করতেই কেন্দ্র সচিব আব্দুস সবুরের পছন্দের শিক্ষকরা কেন্দ্রের দায়িত্ব পেয়েছেন। বিনিময়ে এসব শিক্ষকদের কোচিং-এ আসা শিক্ষার্থীদের সুযোগ দিতেই দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। গত ৪ নভেম্বর ইংরেজী পরীক্ষার দিন রাজগঞ্জ স্কুলের ইংরেজী শিক্ষক আফসানা শারমিনকে কক্ষ পরিদর্শকের দায়িত্বে দেয়া হয়। ওই শিক্ষক রিতিমত কোচিং বাণিজ্যের সাথে জড়িত রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

গত ২৯ নভেম্বর শিক্ষক ওবাইদুর রহমান, কার্ত্তিক চন্দ্র হালদার, মিজানুর রহমানসহ ওই এলাকার একাধিক অভিভাবক কোচিং বাণিজ্যে জড়িত থাকার অভিযোগে শিক্ষক রবিউল ইসলাম, উত্তম কুমার পাল, আব্দুল মাজিদ, কামরুজ্জামান, নূরুল ইসলাম, রেজাউল করিম, হাবিবুর রহমান, মাহাবুর রশিদ, রবীন্দ্রনাথ সরকার, শাহীন আলম, আফসানা শারমিন, উপান্দ, বিকোনন্দ ও মনিরুজ্জামানকে দায়িত্ব পালন থেকে অব্যাহতি দিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত আবেদন করেন। 

ইউএনও আহসান উল্লাহ শরিফী এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিকাশ চন্দ্র সরকারকে দায়িত্ব দেন। সে মোতাবেক শিক্ষা অফিসার সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা গ্রহণের স্বার্থে অভিযুক্ত শিক্ষকদের দায়িত্ব পালন সমীচীন নয় মর্মে লিখিত পত্র দিলেও কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে কেন্দ্র সচিব আব্দুর সবুর সহকারি শিক্ষক উত্তম কুমার পালকে হল সুপার এবং রবিউল ইসলাম, আব্দুল মাজিদ, হাবিবুর রহমানকে কেন্দ্র পরিচালনা কমিটির সদস্য মনোনীত করে অন্যান্য দায়িত্ব দেন।

অভিবাবকদের অভিযোগ, শিক্ষক উত্তম কুমার পাল, আব্দুল মাজিদ ও কামরুজ্জামান রাজগঞ্জ বাজারের জনতা হোটেলের মালিক জনৈক নান্নুর বাসা ভাড়া নিয়ে কোচিং সেন্টার চালাতেন। কিন্তু প্রশাসনের নরজরদারির কারনে  কিছুদিন আগে সেটা বন্ধ করলেও শিক্ষক উত্তম কুমার পাল সকালে জনৈক বাশারের বাড়িতে এবং বিকেলে রাজগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৪-তলা ভবনের নিচ তলায়, শিক্ষক আব্দুল মজিদ দন্ত চিকিৎসক আব্দুর রউফ সাহেবের বাড়িতে এবং রবিউল ইসলাম নিজের বাড়িতে চন্দ্রা স’মিলের সামনে টেবিল-বোর্ড বানিয়ে ব্যাচ করে প্রাইভেট  কোচিংয়ে পড়ান। 

কেন্দ্র সচিব আব্দুর সবুর তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কয়েকজন শিক্ষককে দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দেয়া হয়েছে। তবে, উত্তম কুমার পালকে বাদ দেয়া হলে তিনিও দায়িত্ব পালন করবেন না বলে ছাপ জানিয়ে দেন। 

মাধ্যমকি শিক্ষা কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র সরকার বলেন, অভিভাবকদের আবেদনের প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত শিক্ষকদের অব্যহতি দিতে পত্র দেয়া হয়েছে। 

যশোর শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাধব চন্দ্র রুদ্র বলেন, বিষয়টির তদন্ত করে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।


   আরও সংবাদ