ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ ভাদ্র ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫

সরকার মহাসড়কে টোল আদায়ে অনড় 


প্রকাশ: ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ ১৪:০০ অপরাহ্ন


সরকার মহাসড়কে টোল আদায়ে অনড় 

   

মহাসড়কে টোল আদায়ের সিদ্ধান্তের বিষয়ে সরকার অনড়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলার পর এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার কোনো সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

আজ বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী একথা বলেন।

তিনি বলেন, টোল ফি কত হবে সেটা নিয়ে প্রক্রিয়া চলছে। মন্ত্রণালয় ও বিআরটি এ বিষয়ে কাজ করছে। একটা রিজেনেবল প্রাইস দিতে চেষ্টা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, মন্ত্রণালয় কাজ করছে।

সম্প্রতি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘উন্নত দেশের মতো আমাদের দেশেও বড় বড় মহাসড়ক যেমন ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট, ঢাকা রংপুর ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে টোলের ব্যবস্থা রাখতে হবে। কেবল তা-ই নয়, টোলের মাধ্যমে আদায় করা টাকার জন্য একটি আলাদা ব্যাংক হিসাব করতে হবে। সেই টাকা দিয়ে মহাসড়কগুলো সংস্কার করা যাবে।’

এ বিষয়ে এক সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, চার মহাসড়কে টোল আরোপের বিষয়ে প্রক্রিয়া চলছে। পৃথিবীর সব দেশেই সড়কে টোল আছে। চার লেন, ছয় লেন, আট লেনের সড়ক হবে। পৃথিবীর সব দেশেই সড়ক যারা ব্যবহার করে তাদের কাছ থেকে টোল নেওয়া হয়। বাংলাদেশ কেন ব্যতিক্রম থাকবে? সড়ক মেরামত ও সংস্কার করতে হয়। বিভিন্নভাবে সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয় ওভারলোডের জন্য।

সড়কে টোল আদায়ের বিষয়ে সরকার অনড় কি-না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিজেই এ বিষয়ে ঘোষণা দিয়েছেন। নড়ন-চড়নের কোনো বিষয় দেখছি না। আমরা যখন এ বিষয়ে কিছু করবো তখন আপনারা জানবেন। এটা কোনো গোপনীয় বিষয় না।

আরেক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, এখানে সাধারণ মানুষের জন্য রাস্তা, তাই যারা রাস্তা ব্যবহার করবেন তারাই টোল দেবেন। পৃথিবীর সবদেশেই এ নিয়ম। বাংলাদেশেও এ নিয়ম মেনে চলতে হবে। যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী গাড়িসহ সব গাড়িতেই টোল দিতে হবে। প্রাইভেটকার, বাস, ট্রাক বলেন- একেকটার একেকরকমের টোল হবে। ভারী পণ্যবাহী হলে যে টোল হবে অন্যদের হালকা হলে সে রকম হবে না।

সব মহাসড়কে টোল বসানো হবে কি-না জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, জাতীয় মহাসড়কের সব সড়কেইতো আর টোল বসানো হবে না। আমরা প্রধানত জাতীয় মহাসড়কের মধ্যে যেগুলো চার, ছয় এবং আট লেন সড়ক আছে বা নতুন করে হবে, এসব সড়কগুলোতেই টোল আরোপের চিন্তা-ভাবনা করছি। আমরা জেলা শহরগুলোর বড় সড়কগুলো যদি টোলের আওতায় নিয়ে আসি সেটি হবে না। আমরা সেভাবে চিন্তা-ভাবনাও করছি না। ঢাকা-মাওয়া, ঢাকা-চিটাগাং, এক্সপ্রেসওয়ে, এলেঙ্গা এসব সড়কে টোল আরোপ হবে। এলেঙ্গা থেকে রংপুর পর্যন্ত ফোরলেন হবে, মূলত সেগুলো টোলের আওতায় আনা হবে।

এই টোল আরোপে অর্থনীতিতে কোনো প্রভাব পড়বে কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি না এতে কোনো প্রভাব পড়বে। আগে যেখানে চিটাগাং যেতে আট ঘণ্টা সময় লাগতো, এখন সাড়ে ৩ ঘণ্টায় চিটাগাং যাচ্ছেন। কত ঘণ্টা সাশ্রয় হচ্ছে কত ঘণ্টা বেশি কাজ করছেন। এ কারণে ক্ষয়ক্ষতির কোনো আশঙ্কা নেই।

পদ্মাসেতুর টোল নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, পদ্মাসেতুর টোল নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সেতুর নির্মাণ প্রক্রিয়া এগিয়ে চলছে। আগামী বছরের ডিসেম্বর নাগাদ আমাদের ভৌত অবকাঠামোর কাজ শেষ হবে। এরপর হয়তো তিন-চার মাসের মধ্যে পদ্মাসেতু যানচলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে।

সরকার টোলের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে করের আওতায় আনার চেষ্টা করছে বলে বিএনপির অভিযোগের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি কোনো ফোর লেন করেনি। কাজেই তাদের এসব বিষয়ে কোনো অভিজ্ঞতা নেই। ফ্লাইওভার, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ফোর লেনসহ বাংলাদেশে যা হয়েছে এবং হচ্ছে, এগুলো শেখ হাসিনার সরকারই করেছে। কাজেই এগুলোর অভিজ্ঞতা তাদের নেই, তারা এগুলো বলতেই পারে। যেহেতু বলার মতো কিছুই নেই, কিছুতো বলতে হবে, নেতাকর্মীদেরতো চাঙ্গা রাখতে হবে।


   আরও সংবাদ