ঢাকা, সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ ভাদ্র ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে লাল পেয়ারা 


প্রকাশ: ২১ অগাস্ট, ২০১৯ ১৪:০০ অপরাহ্ন


দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে লাল পেয়ারা 

   

 

স্টাপ রিপোর্টার: উপজেলার বাড়বকুন্ড, মোহন্তের হাট, শুকলাল হাট, কুমিরা বাজার ও দারোগারহাট বাজার সরেজমিনে দেখা যায়, প্রতিদিন ভোর থেকে চাষিরা দলে দলে বাগান থেকে পেয়ারা তুলে পেয়ারার ভার কাঁধে নিয়ে আসতে থাকেন
পাহাড়ের সুস্বাদু লাল পেয়ারা এখন দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রফতানি হচ্ছে। সীতাকুন্ডের বাড়বকুন্ড এলাকার প্রায় ২০ কিলোমিটার পাহাড়ী অঞ্চল জুড়ে গড়ে উঠেছে এ পেয়ারা বাগান।

সীতাকুন্ডে দুই ধরনের পেয়ারার চাষ হলেও বাড়বকুন্ডের লাল পেয়ারা চাষে কৃষকদের উৎসাহ বেশি। স্থানীয় চাষিদের ভাষায় এই পেয়ারার নাম ‘আঞ্জির পেয়ারা’। এই পেয়ারার বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, বাইরে হলুদ অথবা সবুজ আর ভেতরটা লালচে গোলাপি, আকারে খুব একটা বড় না হলেও স্বাদে অতুলনীয়। যেকোনো পেয়ারাতেই ভিটামিন ‘সি’ থাকলেও লাল পেয়ারায় ‘সি’-এর সঙ্গে অতিরিক্ত আছে ভিটামিন ‘এ’। বাড়বকুন্ডে মাহমুদাবাদ গ্রামের পেয়ারা চাষি নুরুল আবছার বন বিভাগ থেকে লিজ নিয়ে বাড়বকুন্ডে পাহাড়ে পেয়ারা চাষ শুরু করেন। তিন বছর পর থেকে পেয়ারা ধরতে শুরু করে। তিনি জানান, ৪০ শতক জায়গায় পেয়ারা বাগান করতে জঙ্গল পরিষ্কারসহ মোট ৩০-৩৫ হাজার টাকা খরচ পড়ে। তিন বছর পর পেয়ারা ধরতে শুরু করলে মাত্র তিন মাসে ৮০ হাজার টাকার পেয়ারা বিক্রি করেন। জানান, পেয়ারা চাষ করেই তাদের আটজনের পরিবারের ভরণ-পোষণ চলছে। চাষি ছমিউল হক বলেন, এই পেয়ারা চাষ করে আমরা অনেক লাভবান। এই চাষে মাত্র তিন মাস সময় দিয়ে এর লাভ থেকে সারা বছর সংসার খরচের টাকা আয় করি। তিনি বলেন, তার দু’একর জমিতে বাগান পরিষ্কারসহ ২০ হাজার টাকা খরচ করে ৬০ হাজার টাকার মতো লাভ হয়েছে। শুধু তারাই নন, পেয়ারা চাষই এখানকার অধিকাংশ মানুষের জীবন-জীবিকার একমাত্র অবলম্বন।

বাড়বকুন্ড পাহাড়ে গিয়ে দেখা যায়, পেয়ারার আঞ্চলিক নাম ‘গয়াম’। সীতাকুন্ড এলাকার প্রায় ২০ কিলোমিটার পাহাড়ী অঞ্চল জুড়ে গড়ে উঠেছে পেয়ারা বাগান। অনেকে বংশানুক্রমিক পাহাড়ে পেয়ারা চাষ করে আসছেন। আষাঢ় থেকে ভাদ্র এই তিন মাস এলেই চাষিদের চোখে-মুখে আনন্দের চিহ্ন দেখা যায়। কৃষিবিদদের মতে, লাল পেয়ারা একটি বিশেষ প্রজাতির পেয়ারা, তাই আর্কষণীয়। আর চাষিদের কথায়, চাহিদা এবং লাভ দুটোই আছে তাই চাষ করি। বাড়বকুন্ড পাহাড়ে গেলে বাগানে চাষিদের ব্যস্ততা দেখে মনে হয় সারা দেশেই যদি লাল পেয়ারা চাষ হতো, তাহলে এই পেয়ারা রফতানি করে দেশ হয়তো কোটি কোটি টাকা আয় করত। সরকারি উদ্যোগ ও সহযোগিতায় এখানকার পেয়ারা চাষিরা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারতেন।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন বাজারগুলোতে। পাইকারি ব্যবসায়ীরা এখান থেকে কিনে ট্রাকযোগে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাচ্ছেন। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বলেন, এই পেয়ারা চাষ করাটা কঠিন কিছু না। মাটি বা প্রকৃতির বিশেষত্বের কারণে এটা অন্যত্র চাষ হয় না এ কথা ঠিক না। সঠিক নিয়মে লাগালে বা পরিচর্যা করলে এর ফলন সব অঞ্চলে খুবই ভালো হবে।


   আরও সংবাদ