Severity: Warning
Message: mysqli::real_connect(): Headers and client library minor version mismatch. Headers:100324 Library:30120
Filename: mysqli/mysqli_driver.php
Line Number: 201
Backtrace:
File: /home/bnnews24/public_html/application/controllers/SS_shilpi.php
Line: 6
Function: __construct
File: /home/bnnews24/public_html/index.php
Line: 316
Function: require_once
প্রকাশ: ২৪ অগাস্ট, ২০২০ ০০:০০ পূর্বাহ্ন
চৌগাছা (যশোর) প্রতিনিধি : যশোরের চৌগাছার নোভা এইড প্রাইভেট হাসপাতাল, পল্লবী ক্লিনিক ও কপোতাক্ষ ক্লিনিকে তৃতীয় দফা অভিযান চালিয়েছেন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা। অভিযানের সময়ে বারবার ক্লিনিকগুলির মালিকদের নির্দেশনা দেয়া সত্বেও তারা সেগুলি না মেনে নিজেদের মতেই ক্লিনিক পরিচালনা করে যাওয়ায় অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। এছাড়া গত ৬ আগস্টের অভিযানে বন্ধ করে দেয়ায় মায়ের দোয়া ক্লিনিকসহ কয়েকটি প্যাথলজি ক্লিনিক বন্ধ থাকায় সেগুলোতে অভিযান চালানো হয়নি।
সোমবার (২৪ আগস্ট) দুপুর ১টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত যশোরের সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহিনের নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। তবে সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহীন এটাকে অভিযান না বলে বলছেন শেষবারের মত পরিদর্শন।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে সাবেক যশোর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মীর আবু মাউদ, চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোছাঃ লুৎফুন্নাহার লাকি, যশোর সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. রেহনেওয়াজ, সিভিল সার্জন অফিসের এ্যাডমিনিষ্ট্রিটিভ অফিসার আরিফ আহমেদ, যশোর সদর উপজেলা স্যানিটারী ইন্সপেক্টর পার্থ প্রতিম লাহিড়ীসহ স্থানীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমের কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
অভিযানকালে ৩টি ক্লিনিকের সুনির্দিষ্ট কয়েকটি ত্রুটি চিহ্নিত করেন সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহীনসহ স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। সেগুলো হলো; নোভা এইড প্রাইভেট হাসপাতালে সার্বক্ষণিক মেডিকেল অফিসার থাকলেও তিনি রোগীদের ওয়াার্ডে রাউন্ড দেন না।
পোস্ট অপারেটিভ রুমে শুধুমাত্র অপারেশনের রোগী রাখার কথা থাকলেও সেখানে অন্য রোগী রাখা হয়েছে। ক্লিনিকটির ব্লাড ব্যাংক নেই (ব্লাড ব্যাংক না থাকলে রক্ত দেয়া-নেয়া যাবেনা) অথচ তারা রক্ত সংগ্রহ করছেন এবং রোগীদের শরিরে রক্ত দিচ্ছেন। বর্জ ব্যবস্থাপনা সঠিক নেই, যে রংয়ের বর্জ বক্সে যে ধরণের বর্জ রাখার কথা তা না করে উল্টাপাল্টা রাখা হয়েছে।
এছাড়া ক্লিনিকটিতে প্যাথলজি বিল সরকার নির্ধারিত বিলের চেয়ে বেশি নেয়া হচ্ছে অর্থাৎ রোগীর রশীদে যা লেখা হচ্ছে প্রকৃতপক্ষে তার চেয়ে বেশি বিল নেয়া হচ্ছে। যে পরিমান বেড রয়েছে তার চেয়ে বেশি রোগী ভর্তি করা হচ্ছে অর্থাৎ হাসপাতালটি ২০ শয্যার হলেও অভিযানের সময়ে ৩১ রোগী ভর্তি পাওয়া যায়।
পল্লবী ক্লিনিকে দেখা যায় তাদের সার্বক্ষণিক কোন ডাক্তার নেই। সেখানে একজন মেডিকেল এ্যাসিন্টেন্ট (জাকির হোসেন) রোগী দেখেন এবং প্রেসক্রিপশনে স্বাক্ষর করেন তার (মেডিকেল এ্যাসিন্টেন্টের) স্ত্রী। যিনি ডাক্তার নন, সাধারণ ব্যক্তি। ক্লিনিকটির বর্জ ব্যবস্থাপনায় মারাত্মক ত্রুটি রয়েছে, যা বারবার নির্দেশ দেয়া সত্বেও সংশোধন করা হয়নি।
ক্লিনিকটিতে ডাক্তার হিসেবে শিক্ষানবিসদের নেমপ্লেট-সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে (যারা ১ম বর্ষ থেকে শেষ বর্ষে অধ্যায়ণরত)। যা আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। এছাড়াও যারা ক্লিনিকটিতে আসেন না এমন সব বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের নেমপ্লেট-সাইনবোর্ড টাঙিয়ে রাখা হয়েছে। অভিযানকালে তাৎক্ষণিকভাবে এ দু’ধরনের প্লাস্টিক প্যানাসাইন ছিড়ে ফেলা হয়। ক্লিনিকের প্যাথলজিতে রোগীর কোন তথ্য সংরক্ষণ করা নেই।
ডাক্তার না হয়েও ক্লিনিকটির যে দু’জন তাদের নামের আগে ডাক্তার ব্যবহার করে প্রেসক্রিপশন করতেন (৬ আগস্টের অভিযানে যাদের প্রায় ২ হাজার প্রেসক্রিপশন প্যাড পুড়িয়ে দেয়া হয়) তাদের নিষেধ করা সত্বেও আবারো তারা ‘ডাক্তারীর ভুয়া পদবী’ ব্যবহার করছেন। ক্লিনিকটিতে ব্লাড ব্যাংক নেই (ব্লাড ব্যাংক না থাকলে রক্ত দেয়া-নেয়া যাবেনা) অথচ তারা রক্ত সংগ্রহ করছেন এবং রোগীদের শরিরে রক্ত দিচ্ছেন।
এর আগের দুটি অভিযানে দেখা যায় ক্লিনিকটির ২০১৬ সালের লাইসেন্স নবায়ন নেই, ক্লিনিকটিতে কেবিনসহ ১০ বেডের প্রাইভেট হাসপাতালের অনুমোদন চাওয়া হলেও অতিরিক্ত বেড এবং কেবিন রয়েছে।
এছাড়া কপোতাক্ষ ক্লিনিকেও সার্বক্ষণিক কোন ডাক্তার নেই, এমনকি কে রোগী দেখছেন এমন কোন ব্যক্তিকেও পাওয়া যায়নি। বর্জ ব্যবস্থাপনা সঠিক নেই, অপরিস্কার। ক্লিনিকটির ব্লাড ব্যাংক নেই (ব্লাড ব্যাংক না থাকলে রক্ত দেয়া-নেয়া যাবেনা), অথচ তারা রক্ত সংগ্রহ করছেন এবং রোগীদের শরিরে রক্ত দিচ্ছেন। ক্লিনিকটির যে প্যাথলজিক্যাল রুম রয়েছে সেটি ঠিক নেই। ক্লিনিকটির প্যাথলজিক্যাল রুম পরিবর্তন করে সঠিক মাপে করতে হবে বলেও অভিযানকালে নির্দেশনা দেয়া হয়।
এসময় সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহীন ক্লিনিকগুলোর মালিকদের বলেন আমি এখানে আসতে চাইনি বলে আমার প্রতিনিধিদের বারবার পাঠিয়েছি। কিন্তু আপনারা তাদের নির্দেশনা মানেন নি। বাধ্য হয়ে আমাকেও আসতে হয়েছে। পরিদর্শনে যেসব অব্যবস্থাপনা পরিলক্ষিত হলো সে অনুযায়ী চুড়ান্ত রিপোর্ট তৈরি করে গোপনীয় প্রতিবেদন হিসেবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠিয়ে দেয়া হবে।
এ বিষয়ে যশোরের সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন বলেন সরকারের স্বাস্থ সেবা নীতি বাস্তবায়নে বেসরকারি ক্লিনিক ব্যবস্থাপনায় যে সুবিধাগুলো থাকার কথা চৌগাছার ক্লিনিকগুলোতে তার যথেষ্ট ত্রুটি রয়েছে। আগে তাদের বিষয়গুলি একাধিকবার বলা হয়েছিল। তারা সেগুলি মানেন নি।
আজ শেষবারের মত ভিজিট করা হলো। যে ত্রুটিগুলো চিহ্নিত হয়েছে তা রিপোর্ট আকারে গোপনীয় প্রতিবেদন হিসেবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠানো হবে। আমাদের উদ্দেশ্য হলো সরকারি নির্দেশনা এবং নীতিমালা মেনে বেসরকারি ক্লিনিকগুলো পরিচালনা হোক।
তিনি বলেন, জনসাধারণ চিকিৎসাক্ষেত্রে যে সুবিধা পেতে চায় সেগুলি দেয়ার জন্য সরকারি যে এজেন্ডা আছে আমরা সরকারি সে এজেন্ডা বাস্তবায়নে বদ্ধপরিকর।