ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ ভাদ্র ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

এটা ঔষধ নয়, যে খেলেই মারা যাবে : উপাচার্য


প্রকাশ: ৯ জুন, ২০২০ ১৪:০০ অপরাহ্ন


এটা ঔষধ নয়, যে খেলেই মারা যাবে : উপাচার্য

   

গবি থেকে স্পন্দন : এফ.আর.সি.এস দ্বিতীয় পর্ব পরীক্ষা না দিয়ে মাতৃভূমির স্বাধীনতার জন্য দেশে আসেন তিনি। পাকিস্তানি পাসপোর্ট হাইট পার্কে জনসম্মুখে ছিড়ে ফেলেন। আবু সাঈদ চৌধুরীকে সঙ্গে নিয়ে বিত্তবানদের দরজায় ঘুরে ঘুরে রসদ জোগাড় করেন তিনি। ভারতের আগরতলায় হাসপাতাল তৈরি করেন এবং যোদ্ধাহতদের চিকিৎসা সেবা দেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। 

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী'র জীবনের উল্লেখযোগ্য অবদান সম্পর্কে সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (চলিত দায়িত্ব) অধ্যাপক ডা. দেলওয়ার হোসেন বলেন, দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধের পরে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। স্বাধীনতার পরে সেই হাসপাতালের নাম হয়েছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। নামটি কিন্তু উনার নিজের দেওয়া নয়, বঙ্গবন্ধু দিয়েছেন।

দেশের গরীব জনগোষ্ঠীর নিকট চিকিৎসা সেবা সহজলভ্য করা ছিল গণস্বাস্থ্যের মূল উদ্দেশ্য। জনগণের দ্বারপ্রান্তে চিকিৎসা সেবা পৌছে দেয়ার প্রত্যয় নিয়ে বাংলাদেশের গ্রামে-গঞ্জে বহু সাব সেন্টারও খোলা হয়েছে বলে জানান তিনি।

অধ্যাপক বলেন, পরবর্তী সময় উনি দেশের ঔষধ নীতি প্রণয়ন করেন। যার আসল লক্ষ গরীব-শোকার্ত মানুষ যাতে স্বল্প মূল্যে ঔষধ কিনে খেতে পারে। এর কিছুদিন পরে (১৯৮৯ সালে) পুনরায় তিনি স্বাস্থ্য ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন এনে স্বাস্থ্য নীতি প্রনয়ণ করেন। যা এখন পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি।

উপাচার্য আরো বলেন, উনার জীবনের একটি মুহূর্ত ও উনি বসে থাকেনি। সবর্দা চিন্তা ছিল- কিভাবে দেশের সাধারণ মানুষেকে সঠিক পথ দেখানো যায়। সেজন্য তিনি বিনা লাভে গণ বিশ্ববিদ্যালয় ও গণস্বাস্থ্য সমাজ ভিত্তিক মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। 

গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালসের পাশে ক্যান্সার হাসপাতাল তৈরির প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে। এখনো তা শুরু করতে পারেনি। নগর হাসপাতাল ধানমন্ডিতে ৫০০ টাকার ডায়ালাইসিসের ব্যবস্থা করেন। ইহা পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ডায়ালাইসিস সেন্টার এবং ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী'র একটি যুগান্তকারী অধ্যায়।

অধ্যাপক ডা. দেলওয়ার হোসেন বলেন, গত কয়েক বছর যাবত উনি কিডনি রোগে ভোগছেন। এজন্য উনাকে সপ্তাহে তিনবার ডায়ালাইসিস করতে হয়। এরই মধ্যে বাংলাদেশ ও বিশ্ববাসী করোনা রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে এবং তা নির্ণয়ের জন্য আমাদের দেশে কোন ব্যবস্থা নেই। উনার মাথায় তখন হঠাৎ করে চিন্তা আসে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের এখানে আধুনিক ও উন্নত বিশ্বের ন্যায় মানসম্মত ল্যাব আছে এবং বেশ কয়েকজন ডক্টরেট অধ্যাপকও আছেন। তাদের সাথে পরামর্শ করেন তিনি। 

তন্মধ্যে ড. বিজন কুমার শীল নামক একজন বিজ্ঞানী আছেন। যাকে তিনি দুই বছর আগেই নিয়োগ দিয়েছিলেন। যিনি সার্স ভাইরাস কিট উদ্ভাবন করেছেন। যেটা চীন ওনার নিকট থেকে কিনে নিয়েছে। ড. বিজন কুমার শীল তখনই আরও তিন গবেষক নিয়ে করোনা ভাইরাস নির্ণয়ের জন্য কিট আবিষ্কারের কথা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে জানান। উনি সেই অনুযায়ী জাতির ক্রান্তিলগ্নে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে মার্চ মাসে এই ঘোষণা দেন। 

গণবিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আরও বলেন, প্রথমদিকে সরকারের সদিচ্ছার কোনো ঘাটতি ছিল না। যখনই আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় আটকে গিয়েছে তখনই প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে তা থেকে উদ্ধার পেয়েছে। 

ড. বিজন কুমার শীল করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য স্বল্প ব্যয়ে গণবিশ্ববিদ্যালয়ের অনুজীব বিজ্ঞান ল্যাবে কিট প্রস্তুত করেন। সেই কিট দিয়ে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ও তাঁর পরিবারের সবার পরীক্ষা করে করোনা পজিটিভ ফলাফল পেয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত এই কিটটি স্বীকৃতি পায়নি। তাই সাধারণ মানুষ তার ফল ভোগ করতে পারছে না। এটা ঔষধ নয় যে খেলেই কেউ মারা যাবে। এটি রোগ নির্ণয়ের জন্য একটি কিট মাত্র!

সর্বোপরি আমরা আশা করছি, প্রধানমন্ত্রী এই বিষয়টি দেখবেন এবং দেশের সাধারণ মানুষের কল্যাণেই কিটগুলো ব্যবহারে যথার্থ স্বার্থকতা লাভ করবে বলে উপাচার্য যোগ করেন।


   আরও সংবাদ