ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ ভাদ্র ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

করোনা আতঙ্কে ঢামেকে কানাডা ফেরত এক শিক্ষার্থীর নির্মম মৃত্যু


প্রকাশ: ১৫ মার্চ, ২০২০ ১৪:০০ অপরাহ্ন


করোনা আতঙ্কে ঢামেকে কানাডা ফেরত এক শিক্ষার্থীর নির্মম মৃত্যু

   

স্টাফ রিপোর্টার : নাজমা আমিন (২৪) নামের এক কানাডার সাসকাচোয়ান প্রদেশের ইউনিভার্সিটি অব রেজিনের স্নাতক শিক্ষার্থীর গ্যাস্ট্রোইন- টেস্টাইনাল অসুস্থতায় মৃত্যু হয়েছে।

শনিবার দুপুর একটায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢামেকের ২১৯নম্বর ওয়ার্ডের সার্জারী বিভাগে তার মৃত্যু হয়।

মৃত শিক্ষার্থীর বাবা আমিন উল্লাহ জানান, আমার মেয়ে কানাডাতে লেখাপড়া করতেন গত ৯ মার্চ সে বাংলাদেশে আসেন গত শুক্রবার হঠাৎ তার প্রচন্ড পেটের ব্যাথা অনুভব করলে তাকে প্রথমে বাংলাদেশ মেডিকেল নেওয়া হয় পরে সেখান থেকে আল মানার হাসপাতাল তারপরে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল নেওয়া হয়।

পরের শনিবার ১৩ ই মার্চ সকাল ৭টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি বলেন, প্রথমে ঢামেকে চিকিৎসকরা তাকে সব ধরনের চিকিৎসারা সেবা দেয় স্যালাইন ইনজেকশন দেয় ও অক্সিজেন দেয় পরবর্তীতে তার পেটের ব্যথা কিছুটা কমে যায়।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, তাকে প্রাথমিক অবস্থায় সব ধরনের চিকিৎসার দিলেও পরবর্তীতে দ্বিতীয় সিফটের চিকিৎসক ও নার্সরা জানতে পারে যে সে কানাডা থেকে আসছে  চিকিৎসক ও নার্স দের মধ্যে করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক শুরু হলে তারপর থেকে আমার মেয়ের কাছে দায়িত্বরত চিকিৎসক নার্স ওয়ার্ড বয়রা তার কাছে আর আসেনি।

তিনি আরো জানান, পরীক্ষার নিরীক্ষা পর জানা যায় নাজমার করোনা ভাইরাস নেই।

আমিন উল্লাহের কাছে জানতে চাইলে আপনার মেয়ের অবহেলার বিষয়ে আপনি কি ঢামেক কর্তৃপক্ষের কে কোন অভিযোগ করেছেন সে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, না কোনো অভিযোগ করা হয়নি।

নাজমার তদারকির দায়িত্বে থাকা সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডাঃ এবিএম জামাল জানান আমরা সন্দেহ করছি, তার অন্ত্রে ছিদ্র ছিল। অর্থাৎ, তার অন্ত্রের কোথাও ফাটল ছিল। তাকে যখন ভর্তি করা হয়েছিল, তখন তার শরীর থেকে প্রচুর তরল বের হয়।

তিনি আরো বলেন, এই রোগীটির বিষয়ে ঢামেকে ভর্তি হওয়ার পর থেকে আমরাও আমাদের চিকিৎসকরা সব ধরনের চিকিৎসা সেবা দিয়েছে ইনজেকশন স্যালাইন তবে তার চিকিৎসার কোনো ত্রুটি ছিল না। তবে এক পর্যায়ে ওয়ার্ল্ড এর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের রোগীর স্বজনরা জানতে পারে যে মেয়েটি কানাডা থেকে এসেছে তাদের মধ্যে করোনাভাইরাস আতঙ্কে ওয়ার্ল্ডের মধ্যে একটু বিশৃংখলার সৃষ্টি হয়েছিল তবে চিকিৎসা সেবার কোনো গাফিলতি আমাদের চিকিৎসকরা করেননি।

তিনি আরো বলেন, আমরা মেয়েটির বাবাকে বলেছি আমাদের চিকিৎসকরা ও নার্স যদি দায়িত্ব অবহেলা করেই থাকে তাহলে অভিযোগ দায়ের করেন এবং আপনার মেয়েকে ময়নাতদন্ত করান তবে এ বিষয়গুলো কোন কিছুই তিনি করেননি।

মৃত নাজমা চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার গুনিয়া গ্রামের আমান উল্লাহের মেয়ে নাজমা।

বর্তমানে মোহাম্মদপুর কাটাসুর রোডে পরিবারের সাথে নিজ বাড়িতে থাকতেন। পাঁচ বোনের মধ্যে সে ছিল সবার বড়। কানাডাতে লেখাপড়া করলেও করোনাভাইরাস আতঙ্কের কারনে তার বাবা কানাডা থেকে দেশে নিয়ে আসেন।


   আরও সংবাদ