প্রকাশ: ২০ এপ্রিল, ২০২১ ০৫:৫৭ পূর্বাহ্ন
মণিরামপুর(যশোর)প্রতিনিধিঃ মণিরামপুরের পল্লীতে দু’টি মাছের ঘেরে শত্রুতামূলকভাবে বিষ দিয়ে প্রায় ৫লাখ টাকার ক্ষতি করেছে দুবৃত্তরা।
সোমবার রাতে উপজেলার সদর ইউনিয়নের কাকুড়ী বিলে তপন কুমার দাস ও সাইদুল হক নামে দুই মৎস্য ঘের ব্যবসায়ীর ঘেরে এই ঘটনা ঘটেছে। বিষক্রিয়ায় ওই ঘেরের বিপুল পরিমান রুই, কাতল, মৃগেলসহ বিভিন্ন প্রকারের মাছ মরে গেছে। এ ঘটনায় মণিরামপুর থানায় সাধারন ডায়েরি করা হয়েছে।
জানা যায়, উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাকোশপোল গ্রাম সংলগ্ন কাকুড়ী বিলে বাকোশপোল গ্রামের তপন কুমার দাস একই এলাকার হারাধন দেবনাথগং-এর কাছ থেকে ১একর ১৩ শতাংশ জমি লিজ নিয়ে এবং সাইদুল হক ও আতিয়ার রহমানের কাছ থেকে ৮৪ শতাংশ জমি বাৎসরিক চুক্তিতে লিজ নেয় পৃথকভাবে দুটি ঘের তৈরী করে মাছ চাষ করে আসছিল। তারা ঘেরে রুই, কাতল, থাইপুটি, জাপানি, বিভিন্ন প্রকারের কার্প জাতীয় মাছ, তেলাপিয়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করে থাকেন।
সোমবার রাত ৯টা থেকে সাড়ে ন’টার মধ্যে ঘের মালিকদের অনুপস্থিতিতে কে বা কারা ঘেরে বিষ প্রয়োগ করে। সোমবার রাত হতে মঙ্গলবার সারাদিন ঘেরের সমুদয় মাছ মরে ভেসে উঠে। এতে ঘের মালিকদের প্রায় ৫/৬ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
ঘের মালিক তপন কুমার দাস জানান, ‘রাতে ঘেরের পাড়ের ঘরে ছিলাম। রাত ৮টার দিকে ঘের থেকে আধা কিলোমিটার দুরে নিজ বাড়ীতে রাতের খাবার খেতে এসেছিলাম। খাবার খেয়ে সাড়ে ৯টারদিকে ঘেরের পাড়ে এসে দেখি ঘেরের মাছ লাফালাফি করছে। তাৎক্ষনিকভাবে অনুমান করলাম মাছের কোনো সমস্যা হয়েছে। এরপর এলাকার কয়েকজনকে বিষয়টি জানালে তারা সরেজমিন দেখে বলে বলে পুকুরে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছে। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মাছের লাফালাফি বন্ধ হয়ে যায় এবং সব মাছ মারা যায়।
অপর ঘের মালিক সাইদুল বলেন, ‘আমি তারাবীর নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন, ফিরে এসেই বুঝলাম ঘেরে বিষ প্রয়োগ করা হয়েছে। আমি এনজিও থেকে ঋন নিয়ে এ মাছ চাষ করেছি। এ ঘেরের মাছই ছিল আমার একমাত্র সম্বল। মাছ চাষ করে আমি আমার পরিবারের জীবিকা নির্বাহ করতাম। এখন আমি কি করব? কি ভাবে ঋণের টাকা পরিশোধ করব।’
প্রতিবেশি ব্যবসায়ী ও সাবেক ইউপি সদস্য আতিয়ার রহমান বলেন, ‘আমাদের এই অঞ্চলের বেশিরভাগ মানুষ কৃষি কাজের পাশাপাশি মাছ চাষ করে। অনেক টাকা বিনিয়োগ এবং দীর্ঘ সময় অপো করতে হয় মাছ বিক্রি করতে। কিন্তু দুর্বৃত্তদের দেওয়া বিষে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সব মাছ মরে গেল তপন ও সাইদুলের ঘেরে। প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি এর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করেন তবে এ সময়ে মাছ চাষ বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না।’
মণিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রফিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। ক্ষতিগ্রস্থরা অভিযোগ করেছেন। অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে দোষীদের শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।