ঢাকা, শনিবার, ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৬ জৈষ্ঠ্য ১৪৩১, ৯ শাবান ১৪৪৬

সময়ের নির্মমতা ও আমাদের চ্যালেঞ্জ


প্রকাশ: ১৮ এপ্রিল, ২০২১ ০০:৪৬ পূর্বাহ্ন


সময়ের নির্মমতা ও আমাদের চ্যালেঞ্জ

এস এম জাহাঙ্গীর আলম সরকার পিপিএম : ক্রাইসিস এবং স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট বিষয়টাতে আমাদের  সকলের সম্যক প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকলেও রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনা থেকে শুরু করে ব্যক্তি জীবন পর্যন্ত নানা ক্ষেত্রে আমরা প্রতিনিয়ত এটি মোকাবেলা করেই সামনের পথ হাটার চেষ্টা করেছি বলেই সভ্যতা বর্তমানে এসে পৌছেছে। একজন নিরেট সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে অতি জ্ঞানীদেরকেও প্রতিনিয়ত এ অবস্থা মোকাবেলা করতে হয়। 

কিছু ঘটনা আছে যা বারংবার আসে বলে পূর্বাভিজ্ঞতা মূল্যায়ন করে গদবাধা কিছু পদক্ষেপ গ্রহন করলেই নুন্যতম ক্ষতিসাধন সাপেক্ষে কিংবা অনেক ক্ষেত্রে কোন ক্ষতি ছাড়াই ঐ সকল পরিস্থিতি মোকাবেলা করে কাংখিত ফল লাভ করা যায় কিংবা বিপদ থেকে নিজেকে উৎড়ানো সম্ভব হয় । কিন্তু যে বিষয় টা মানুষ কখনও দেখেনি বা অনুমান করেনি হঠাৎ সৃষ্ট কোন সমস্যা তা মানুষ কর্তৃক হতে পারে আবার সোর্স প্রাথমিকভাবে একেবারে অজ্ঞাতও থাকতে পারে আর মুস্কিল টা মুলতঃ সেখানে।

 আজকের বিশ্বের নীরবতা স্তব্ধতা,ভয় জরাগ্রস্থতা যাই কিছুই বলি না কেন  এমন প্রেক্ষাপট সামাল দেয়ার অভিজ্ঞতা যে খুব একটা নেই তা দৃশ্যমান। বিশ্বমানবের শ্রেণী বিভাজন,ধনী,দরিদ্র শিক্ষিত অশিক্ষিত, কম শিক্ষিত ,উন্নত অনুন্নত, ধার্মিক অধার্মিক যেমন করেই বলিনা কেন বর্তমান  করোনা আক্রান্ত বিশ্বে এগুলোর কোন মূল্য নেই কারন সকলের কাছেই এটি অপরিচিত এবং নতুন। ফলে বিশেষায়িত কোন গোষ্টি বা জনপদের জন্য এটি নিরাপদ আর অবশিষ্টাংশের জন্য এটি অনিরাপদ তেমনটি নয়। করোনা বিশ্বের সকল মানুষের জন্য একই রকম বিষয় । যারা ইতিমধ্যে আক্রান্ত তারা এর শারিরীক প্রভাবটা উপলব্ধি করেছেন আর যারা যারা এখন ও মুক্ত রয়েছেন তারা সবাই এক অজানা আতঙ্কে দিনাতিপাত করছেন। সামাজিক মাধ্যম থেকে শুরু করে বিভিন্ন গনমাধ্যম যা পাচ্ছে তা প্রচার করার চেষ্টা করছেন আর মানুষের কোন প্রাথমিক পূর্ব পরিচিতি না থাকায় যা সামনে আসছে তাই জানার চেষ্টা করতে হচ্ছে।

 বলা বাহূল্য বাংলাদেশে এ সংক্রান্ত এত মানুষ লেখালেখিতে বিশেষ করে ফেইসবুকে লিখছেন সত্যিই এটি জঙ্গল ব্যবস্থাপনায় পরিনত হয়েছে। অর্থাৎ কোনটি ঠিক , কোনটি বেঠিক কার সোর্স কি ,কারো শোনা কথা ,কারো ধর্মীয় বক্তব্য সব কিছু মিলে এত তথ্য আর তত্ত্বের মিশ্রন ঘটেছে যে কার্যত এটি জঙ্গলে পরিনত হয়েছে । এরই মধ্য থেকে বস্তুনিষ্ঠ বক্তব্যটি আহরন করা খুবই দুস্কর হয়ে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে অনুসরণ করাটা সকলের জন্যই মঙ্গল জনক মনে করি । অধুনা বিলুপ্তির পথে চলে যাওয়ায় বাঁচা গেছে  এক শ্রেণীর ঝাড়ফুক দেওয়া মানুষ আছে তারা সব কিছুতেই ঝাড়ফুক দিয়ে সারিয়ে তোলেন এ প্রবনতাটা এখনও বিশ্বাস করি প্রতারনার মাঠে নামে নাই। মাঠে আর না নামুক সেটাই ভাল। শেষে ঘর পোড়ার মধ্যে আলু পুড়ানোর দৃশ্য দেখতে হতো।

প্রসঙ্গক্রমে যে কারনে আজকের কলম হাতে নেওয়া তা অবশ্য করোনা থেকে শুধু মুক্তির লক্ষে নয় বরং ভবিষ্যতে পৃথিবী ও পৃথিবীর মানুষকে কি পরিমান ক্ষতি বহন করতে হবে সে লক্ষে দৃষ্টি প্রসারিত করবার চেষ্ঠা মাত্র। আমরা বস্তত এখনও অব্দি কেউই জানিনা করোনার ক্ষতি করবার সামগ্রিক ক্ষমতা কতটুকু।তবে ছিটে ফোটা যা কিছু আঁচ করতে পারছি তা নিশ্চয় অমূলক ও নয়। চলমান বিশ্বব্যবস্থায় যা কিছু আছে বর্তমানে অচল কিংবা সাময়িক স্থগিত রয়েছে সব কিছুতেই পরিবর্তন আসবে তাতে কোন সন্দেহ নেই । শুধু একটা নির্দিষ্ট সময় অন্তে বুঝা শুরু হয়ে যাবে কোন খাতে কতটুকু পরিবর্তন আসতে পারে কিংবা কোন ক্ষেত্রে কতটুকু পরিবর্তন অনিবার্য নতুনভাবে  পৃথিবীকে বাসযোগ্য করতে। 

শিক্ষা, বিজ্ঞান, ব্যবসা বানিজ্য অর্থনীতি রাজনীতি, রাষ্ট্রনীতি  কুটনীতি কলাসাহিত্য এমনকি মানব মস্তিষ্কের চিন্তা জগতে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে এবং কোন কোন ক্ষেত্রে আনতে হবে । অন্যাথায় প্রকৃতি ও চলমান বিশ্ব মানুষের জন্য অনিরাপদ ও অনাস্থার ক্ষেত্র তৈরি করবে যার পরিনাম আরো ভয়াবহ হতে পারে। খেয়াল করুন প্রচলিত সকল বক্তব্যের বাইরে মানুষে মানুষে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে এটাই হচ্ছে যথাযথ । এরকম নানান  নতুনত্বের সাথে  মানুষকে ভবিষ্যৎ অভিযোজন করতে হবে । মনে পরে জাপানের হিরোশিমা নাগাসিককে কত কাল অভিশাপ টানতে হয়েছে? 

ভাবুন তো আমাদের কোন খামখেয়ালী বক্তব্যে আমাদের দেশের মানুষকে যদি ভয় আর আতঙ্ক দ্বারা চালিত হয়ে লম্বা একটা সময় দিনাতিপাত করতে হয়  তা হলে নারী শিশু কিংবা বয়স্ক মানুষের যদি এটা মস্তিস্কে স্থায়ী আসন পেতে বসে, সে ক্ষেত্রে ভালো থাকা সুস্থ মানুষকে কি পরিমান অসুস্থ্য  কিংবা মানুষিক জরাগ্রস্থ নতুন মানুষকে বহন করতে হবে তা কিন্তু এই মূহুর্তে চোখ বন্ধ করে অনুমান করা দুষ্কর। বাস্তবে এমনটা অমূলক হোক সেটাই কাম্য। তবুও বলতে হয়  যেমন টা আমরা ইটালি ফ্রান্স সহ কয়েকটি দেশে দেখলাম বিভিষিকায় পড়ে তারা বৃদ্ধ বা ষাটোর্ধ্ব মানুষকে করোনা চিকিৎসা না দিতে । তারা ধরেই নিয়েছে বয়সের কারনে ঐ সকল লোকের আর কিছু নতুন করে দেবার নাই এ বিশ্বকে । তাই তাদেরকে আর প্রয়োজন নাই। সময়টা কত বেশি চ্যালেন্জিং ডাক্তার পুত্র বাবাকে এ বিপদকালিন সময়ে চিকিৎসা না দিয়ে সন্তর্পনে দু'ফোটা অশ্রু ঝড়িয়ে বাবাকে বিদায় জানাচ্ছেন! 

আমি এতক্ষন যা কিছুই বলার চেষ্টা করেছি কিংবা বুঝানোর চেষ্টা করেছি তা হল এই অবরুদ্ধ অবস্থার মধ্যেও শিশুদের যতদূর সম্ভব পুষ্টিকর খাবার নিশ্চিত করতে হবে যেন বিশ্ব শিশুরা অপুষ্টির স্বীকার না হয় । দূরদর্শন বা ডিজিটাল ক্ষেত্রে শিশুদের মনোস্তত্ব ও মেধা বিকাশে সাহায্য করবে এমন শিক্ষা ও বিনোদনের ব্যবস্থা করা । পারিবারিক কেয়ারে থাকা শিশুদের জন্য ভাইবোন ও বাবা মাকে এই সময়ে তাদের মনোস্তত্ব বুঝে আচরণ ও সাপোর্ট করাটা খুব বেশি কাজে দিবে ।তেমনটা সাধারন নারী পুরুষ ও বৃদ্ধদের ক্ষেত্রেও বিশেষ আচরণে মনোযোগী হতে হবে। 

প্রাপ্ত বয়স্কদের ক্ষেত্রে পরিমিত ব্যায়াম লেখাপড়া করে সময় কাটানো , খানিকটা  গান কবিতা নাটক সিনেমা ইত্যাদি দেখে বিনোদন উপভোগ করতে হবে।


   আরও সংবাদ

A PHP Error was encountered

Severity: Notice

Message: fwrite(): write of 34 bytes failed with errno=122 Disk quota exceeded

Filename: drivers/Session_files_driver.php

Line Number: 263

Backtrace:

A PHP Error was encountered

Severity: Warning

Message: session_write_close(): Failed to write session data using user defined save handler. (session.save_path: /var/cpanel/php/sessions/alt-php56)

Filename: Unknown

Line Number: 0

Backtrace: