প্রকাশ: ৯ এপ্রিল, ২০২১ ০৯:১৬ পূর্বাহ্ন
মোঃ ফখরুল, চৌগাছা প্রতিনিধি : চৌগাছার সিংহঝুলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান নিপু (৬২) করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তিনি উপজেলার সিংহঝুলী বিশ্বাসপাড়ার মৃত সুজা বিশ্বাসের ছেলে। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় অ্যাম্বুলেন্সে খুলনা নেওয়ার পথে শুক্রবার ভোররাত চারটার সময় তার মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছেন মরহুমের বড় ছেলে নওয়াপাড়া পৌরসভায় কর্মরত রাজিবুর রহমান।
নিপু প্রায় ২২ বছর ধরে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছিলেন।
হাফিজুর রহমান করোনা পজেটিভ ছিলেন বলে নিশ্চিত করেছেন চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচঅ্যান্ডএফপিও) ডা. মোছা. লুৎফুন্নাহার লাকি।
ডা. লাকি জানান, হাফিজুর রহমান ও তার স্ত্রী বৃহস্পতিবার চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনার নমুনা দেন। সেই নমুনা পরীক্ষার পর শুক্রবার বেলা ১১টায় তার ফলাফল পজেটিভ আসে।
তিনি আরো বলেন, হাফিজুর রহমানের দাফন সম্পন্নের জন্য পিপিই দেওয়া হয়েছে এবং পরিবারের সদস্যদের মধ্যে যারা তার সংস্পর্শে এসেছিলেন তাদের শনিবার করোনা নমুনা দেওয়ার জন্য হাসপাতালে আসার জন্য বলা হয়েছে।
লুৎফুন্নাহার আরো জানান, বৃহস্পতিবার চৌগাছা থেকে মোট ১৬টি নমুনা পাঠানো হয়। এরমধ্যে হাফিজুর রহমানসহ দুজনের করোনা পজেটিভ রিপোর্ট এসেছে। এ নিয়ে গত নয় দিনে চৌগাছায় নতুন করে নয়জনের করোনা শনাক্ত হলো।
মরহুমের পারিবারিক সূত্র জানায়, গত কয়েকদিন ধরে তার ঠান্ডা-জ্বর, শ্বাসকষ্ট, কাশি, গলায় ব্যথা ছিল। বৃহস্পতিবার তিনি ও তার স্ত্রী চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনার নমুনা দেন। এরপর বাড়ি নেওয়ার পর সন্ধ্যার দিকে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। তখন তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে অ্যাম্বুলেন্সে করে খুলনায় নেওয়ার পথে শুক্রবার ভোররাত চারটার দিকে তার মৃত্যু হয়।
মরহুমের দুই ছেলে রয়েছেন। তারা দুজনেই সরকারি চাকরি করেন। সকালে তার মৃতদেহ নিজ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। করোনাভাইরাস আক্রান্ত হওয়ায় ভয়ে গ্রামের লোকজন তার গোসল দিতে চাননি।
চৌগাছা কপোতাক্ষ ক্লিনিকের সত্বাধিকারী জুয়েল ছাড়া মৃতদেহের কাছেই যাননি তেমন কেউ। পরে চৌগাছা পৌরসভার মেয়র নূর উদ্দীন আল মামুন হিমেলের নেতৃত্বে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘অগ্রযাত্রা’র সভাপতি ব্যবসায়ী হাসিবুর রহমান, আব্দুর রশীদ রাজু, হোমিও চিকিৎসক ফয়সাল আহমেদ, ব্যবসায়ী জাহিদ হাসান ও চৌগাছা সরকারি হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স চালক আলমগীর জুমার নামাজের পর তার মৃতদেহ গোসল করান। এরপর নামাজে জানাজা শেষে বিকেল তিনটার দিকে অগ্রযাত্রার স্বেচ্ছাসেবীদের সহায়তায় তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। দাফনের সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ফুলসারা ইউপি চেয়ারম্যান মেহেদী মাসুদ চৌধুরীসহ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন।