প্রকাশ: ২ ডিসেম্বর, ২০২০ ১৭:২০ অপরাহ্ন
ধুনট থেকে রফিকুল আলম: বগুড়ার ধুনট উপজেলায় গোসাইবাড়ি এএ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ তদন্ত করেছেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হযরত আলী। ওই বিদ্যালয়ে দাতা সদস্য ও ধুনট উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সালেহ স্বপনের করা এই অভিযোগেটি তিনি বুধবার দুপুরের পর সরেজমিন তদন্ত করেছেন।
জানা গেছে, উপজেলার গোসাইবাড়ি এএ উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারি প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য ১৫ মার্চ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন প্রধান শিক্ষক। ওই পদে ৮জন প্রার্থী আবেদন করেন। গত ২৩ জুলাই অত্র বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় ৩ জন প্রার্থী অংশ নেন। তারা হলেন সাজিয়া আফরিন, শামীম হোসেন ও নুরুল ইসলাম। এরমধ্যে সাজিয়া আফরিনকে সহকারি প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ দেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গত ২৯ জুলাই সাজিয়া আফরিন ওই বিদ্যালয়ে সহকারি প্রধান শিক্ষক পদে যোগদান করেছেন।
কিন্ত বিধি মোতাবেক প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী নুরুল ইসলামের ওই পদে আবেদন করার শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা ছিল না। তারপরও পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট নিয়োগ কমিটি কাগজপত্র যাচাই বাছাই না করে নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করেছেন। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য আবু সালেহ স্বপন লিখিত ভাবে রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের উপ-পরিচালকের নিকট অভিযোগ করেন। তিনি এ অভিযোগটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দিয়েছেন।
বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য আবু সালেহ স্বপন বলেন, বিধি মোতাবেক একটি পদে নিয়োগের জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা সম্পন্ন কমপক্ষে ৩জন প্রার্থীর আবেদনের নিয়ম রয়েছে। এই বিদ্যালয়ে সহকারি প্রধান শিক্ষক পদে ৩ জন আবেদনকারীর মধ্যে নুরুল ইসলামের শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা না থাকার পরও অবৈধভাবে নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে। এ কারণে সাজিয়া আফরিনের নিযোগ বৈধ নয়।
এ বিষয়ে সাজিয়া আফরিন বলেন, কাম্য যোগ্যতা অনুযায়ী আবেদনের মাধ্যমে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর উক্ত পদে আমাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তবে ওই পদে প্রতিদ্বন্দ্বি কোন প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা না থাকার বিষয়টি নিয়োগ কর্তৃপক্ষের যাচাই-বাছাই করে দেখার কথা ছিল। তারপরও এ ধরনের কোন ত্রুটি হয়ে থাকলে সেটা দেখার দায়িত্ব আমার না।
গোসাইবাড়ি এএ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাজ্জাদুর রহমান বাবলু বলেন, একটি পদে নিয়োগের জন্য কমপক্ষে ৩জন প্রার্থীর আবেদন করতেই হবে এমন কোন বিধান নেই। তাই বিধি মোতাবেক সাজিয়া আফরিনকে সহকারি প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। শিক্ষক নিয়োগের নিতিমালা না জেনেই বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য অভিযোগ করেছেন।
বিদ্যালয়ের সভাপতি শফিকুল ইসলাম বলেন, সরকারি প্রতিনিধিসহ ৫ সদস্য বিশিষ্ট নিয়োগ কমিটি কাগজপত্র যাচাই বাছাইয়ের পর সাজিয়া আফরিনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এই নিয়োগের বিরুদ্ধে অভিযোগের কোন ভিত্তি নেই।
বগুড়া জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) হযরত আলী বলেন, বিধি মোতাবেক একটি পদে নিয়োগের জন্য কমপক্ষে ৩জন যোগ্য প্রার্থীর আবেদন করা প্রয়োজন। গোসাইবাড়ি এএ উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে এ নিতিমালা মানা হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। শিক্ষক নিয়োগের কাগজপত্র পর্যালোচনা করে রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের উপ-পরিচালকের নিকট প্রতিবেদন পাঠানো হবে। তিনি এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।