ঢাকা, বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩ বৈশাখ ১৪৩২, ২৬ জ্বমাদিউল সানি ১৪৪৭

ছাত্রলীগের জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে সম্পদ আত্মসাৎ ও হয়রানির অভিযোগ


প্রকাশ: ১৮ নভেম্বর, ২০২০ ১৭:৪৮ অপরাহ্ন


ছাত্রলীগের জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে সম্পদ আত্মসাৎ ও হয়রানির অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার : এতিমদের জুলুম-অত্যাচার করে সম্পদ আত্মসাৎ, মিথ্যা মামলায় হয়রানির অভিযোগ উঠেছে পটুয়াখালী জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি হাসানের বিরুদ্ধে। তার হাত থেকে জান-মাল রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী এতিম পরিবার।

বুধবার (১৮ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন (ক্র্যাব) মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- এতিম পরিবারের সদস্য তাজনুর আক্তার, তার স্বামী বাকী বিল্লাহ, মাহমুদ প্রমুখ।

লিখিত বক্তব্যে বাকী বিল্লাহ জানান, এতিম ভাই-বোন স্বপরিবারে ২২ বছর সৌদি আরবে বাস করতেন। গত ২০০৮ সালের ২৩ মে সড়ক দূর্ঘটনায় মা-বাবা ও বড় ভাইয়ের মৃত্যু হয় ও তিন ভাই-বোন আহত হয়ে এক বছর চিকিৎসা শেষে বাংলাদেশে আসে। এরই মধ্যে হাসানের পিতা সেলিম ও তার ভাই আলতাফ কাউকে কিছু না জানিয়ে এতিমদের অভিভাবক নিযুক্ত হন। তারা ব্যাংকে থাকা দুই কোটি টাকা ও ৭০ ভরি স্বর্নালঙ্কার এবং পটুয়াখালী সদরের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আত্মসাৎ করে।

বাংলাদেশে এসে তারা জমাকৃত টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার ফেরত চাইলে তাদের তাড়িয়ে দেয়। ২০১৩ সালে দোকানপাট ভাংচুর ও তাদেরকে কুপিয়ে জখম করে। এ ঘটনায় মামলা হলে (মামলা নং-২০২/১৩) ৫৩ লাখ টাকা ও ৩৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার বুঝিয়ে দিয়ে বাকী টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার পরে দেবে বলে জামিন নেয়। তাদের সহায়তা করায় ২০১৩ সাল থেকে ধারাবাহিক একাধিক মামলা দিয়ে হয়রানি করে। পুলিশ তদন্তে অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় আদালত সেগুলো খারিজ করে দেয়।

তিনি আরো জানান, হত্যা, চাঁদাবাজী ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের একাধিক মামলার আসামী হওয়ার পরও ২০১৭ সালে হাসান পটুয়াখালী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হয়। এরপরই সে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে, না দিলে খুন করার হুমকি দেয়। গত ৭ জুন  এতিম নাবালক ২ ভাইসহ তাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে মারাত্মক জখম করে। এ ঘটনায় তাজনুর আক্তার বাদী হয়ে আদালতে মামলা করেন (সি.আর মামলা নং- ৩৯৯/২০)। সম্পদ জবর দখল ও চাঁদাবাজির ঘটনা ধামাচাপা দিতে তাদের নির্যাতন করে। ওই মামলা থেকে রেহাই পেতে হাসান ১৫ দিনে এতিমদের বিরুদ্ধে ১৭টি মিথ্যা মামলা করে।

এছাড়াও জালাল, আলী আশরাফ, আবদুর রব, নেছার উদ্দিনসহ কয়েকজনকে দিয়ে নামে-বেনামে বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি ও র‌্যাব- ৮-এ ১৫টি মিথ্যা অভিযোগ করানো হয়। হাসানের বিরুদ্ধে বর্তমানে বিজ্ঞ আদালতে হত্যা, চাঁদাবাজী, ডাকাতিসহ আরও বিভিন্ন মামলা চলমান রয়েছে। এসব মামলা থাকা সত্ত্বেও জেলা ছাত্রলীগের সভাপতির পদে বহাল তবিয়তে রয়েছেন।

তার বিরুদ্ধে চলমান মামলাগুলো- (জি.আর ২৫৯/২০, ৩১৬/২০, সি.আর ৩৯৯/২০, ৫৬১/২০, ৫৩৮/২০, ৫৬১/২০, ৮২৭/২০,৭৮৮/২০, ৮৭৪/২০, জি,আর ৩২৭/২০১১, ২০২/১৩, ১০৬/১৬, সি,আর ৩৫৭/১৩, জি.আর ৩৮/৮৫, জি.আর ৪৬৬/২০১৭, সি,আর ৩৭১/১৯, জি.আর ৪৫৭/১৮, সি.আর ৪১৮/১৮, সি.আর ১৫৫/১৯)। যেকোনো সময় প্রাণনাশ ও জমি জবর দখল করতে পারে বলে আশঙ্কা করেন।

তাই হাসান ও তার বাহিনীর হাত থেকে জান-মালের নিরাপত্তার জন্য প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি আকূল আবেদন জানান তিনি। হাসানের বিরুদ্ধে প্রশাসন কোনো প্রদক্ষেপ না নেয়ায় ভুক্তভোগী পরিবার পটুয়াখালী ত্যঅগ করে শরীয়তপুরে বসবাস করছে।


   আরও সংবাদ