প্রকাশ: ২৪ অগাস্ট, ২০২০ ১৪:০০ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, “বঙ্গবন্ধু হত্যা ক্ষমতার পরিবর্তনে হত্যা নয়, বঙ্গবন্ধু হত্যা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশকে হত্যা। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সমস্ত তথ্য-উপাত্ত উদঘাটনের জন্য একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিশন দরকার। আমরা দৃশ্যমান হত্যাকারীদের বিচার করেছি। কিন্তু কমিশনের রিপোর্ট হয়ে থাকবে ইতিহাসের একটি মাইলফলক। তাহলে অনাগত ভবিষ্যৎ বলতে পারবে এই হত্যাকাণ্ডে কারা কারা জড়িত ছিলো।
আগামী প্রজন্মের জন্য বঙ্গবন্ধুর খুনের পরিকল্পনা প্রণয়নকারী, বাস্তবায়নকারী ও উপকারভোগীদের স্বরূপ উন্মোচন করা প্রয়োজন। সে উন্মোচনের ভেতরে যেই পড়ে মানুষকে জানাতে হবে।”
মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) রাজধানীর ফার্মগেটে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল মিলনায়তনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস ২০২০ উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের উদ্যোগে আয়োজিত দোয়া ও আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের নির্বাহী সভাপতি মোঃ হামিদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক এবং বিশেষ অতিথি হিসাবে আরো উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।
এছাড়া আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য হোসনে আরা এমপি ও মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়েল সচিব রওনক মাহমুদ। সভায় স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের নির্বাহী সাধারণ সম্পাদক বদিউজ্জামান বাদশা।
শ ম রেজাউল করিম আরো বলেন, “দীর্ঘ রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছে। ১৯৬৯ সালের ২০ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু জানতে পারেন তাকে হত্যার জন্য পাকিস্তান থেকে অততায়ী পাঠানো হয়েছে। ১৯৬৯ সালে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার মাধ্যমে রাষ্ট্রদ্রোহীতার অভিযোগে তাকে হত্যার পরিকল্পনা হয়েছিলো। ১৯৭০ সালের নির্বাচনী ক্যাম্পে তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিলো। ১৯৭২ সালের ১৩ জুলাই মেজর ফারুক ও ১৯৭৩ সালের ১১ জুলাই কর্ণেল রশিদ বঙ্গবন্ধুকে হত্যার উদ্দেশ্যে মার্কিন দূতাবাসের মাধ্যমে অস্ত্র কিনতে চেয়েছিলেন।
১৯৭৪ সালের ১৩ মে উচ্চ পর্যায়ের সেনা কর্মকর্তাদের নির্দেশে কর্ণেল ফারুক শেখ মুজিব সরকারকে উৎখাতের জন্য আমেরিকার সাহায্য চেয়েছিলেন। ১৯৭৫ সালের ২০ মার্চ আর্মড রেজিমেন্টের সেকেন্ড ইন কমান্ড ফারুক রহমান জিয়াউর রহমানকে অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিতে বলেছিলেন। জিয়াউর রহমান তাতে রাজি না হলেও ষড়যন্ত্র প্রতিহত করেননি। এই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভয়াবহ অভ্যুত্থান ঘটিয়ে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। এভাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্রব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হয়েছিলো।”
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আরো বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। এ কারণে সপরিবারে তাকে হত্যা করা হয়েছে। জাতির পিতার হত্যাকান্ডের বিচার হবেনা সেই বিলে স্বাক্ষর করেন জিয়াউর রহমান। এভাবে তিনি বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পূনর্বাসন করেছেন। স্বাধীনতাবিরোধীদের দেশে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এভাবে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত পতাকাকে অবদমিত করে, অপমানিত করে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশকে ধ্বংস করা হয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “১৫ আগস্ট ও ২১ আগস্টের হত্যাকান্ড একই সূত্রে গাঁথা। শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা আবার মুক্তিযুদ্ধের চেতনার উন্মেষকে হত্যা। জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর খুনিদের রক্ষা করতে চেয়েছিলেন আর খালেদা জিয়া শেখ হাসিনার হত্যা চেষ্টার সাথে জড়িতদের রক্ষা করেছিলেন।”
আলোচনা সভার শুরুতে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের শহিদদের স্মরণে ১মিনিট নিরবতা পালন করা হয় এবং দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।