ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ ভাদ্র ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাপানে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত টেকনিক্যাল ইন্টার্নরা শিল্পোন্নয়নে অবদান রাখতে পারে : কর্মসংস্থান মন্ত্রী


প্রকাশ: ২২ অগাস্ট, ২০২০ ১৪:০০ অপরাহ্ন


জাপানে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত টেকনিক্যাল ইন্টার্নরা শিল্পোন্নয়নে অবদান রাখতে পারে : কর্মসংস্থান মন্ত্রী

   

স্টাফ রিপোর্টার : প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেছেন, জাপানে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত টেকনিক্যাল ইন্টার্নরা বাংলাদেশের শিল্পোন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে। দেশে বিদেশে আধুনিক প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতি নির্ভর শিল্প প্রতিষ্ঠানে তাদের চাকুরির সম্ভাবনা রয়েছে। 

তিনি বলেন, জাপানিজ ভাষায় অধিকতর দক্ষতা অর্জন করায় তারা জাপানিজ ভাষার প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে প্রশিক্ষক হিসেবে যুক্ত করার চিন্তাভাবনা করছে সরকার। এছাড়াও শিক্ষানবিশ কালে জাপানে উপার্জিত অর্থ দিয়ে তারা বাংলাদেশে প্রশিক্ষণ সংশ্লিষ্ট সেক্টরে উদ্যোক্তা হিসেবে ব্যবসা করতে পারে।

আজ রোববার (২৩ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০ টায় জনশক্তি কর্মসংস্থান প্রশিক্ষণ ব্যুরোর আয়োজনে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে IM Japan প্রোগ্রামের আওতায় জাপানে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ৮ জন টেকনিক্যাল ইন্টার্ন এর দেশে প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে সংবর্ধনা ও চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, সরকার অনগ্রসর জেলাগুলো থেকে অধিক সংখ্যক কর্মী বিদেশে প্রেরণের উপর গুরুত্ব আরোপ করেছে। এছাড়াও বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারে বৈদেশিক কর্মসংস্থান সংক্রান্ত লক্ষ্য পূরণে মন্ত্রণালয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। 

তিনি আরো বলেন, করোনাত্তর পরিস্থিতিতে শ্রমবাজারের পরিবর্তিত চাহিদার প্রেক্ষিতে কর্মী প্রেরণের লক্ষ্যে কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। বিদেশ প্রত্যাগত অভিজ্ঞ কর্মীদের দেশের অভ্যন্তরে কর্মসংস্থানের সুযোগ দেওয়ার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহবান জানান।

মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন এর সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সভাপতি কামরান টি রহমান এবং জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালক শামসুল আলম।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ও বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সভাপতি কামরান টি রহমান বাংলাদেশের প্রশিক্ষিত কর্মীদের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি তথা মিউচুয়াল রিকগনিশন এর উপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বিদেশ প্রত্যাগত দক্ষ কর্মীদের বাংলাদেশে কর্মসংস্থানের জন্য গ্রহণ করবেন বলে জানান।

অনুষ্ঠানে সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন বলেন, আমরা সব সময় সুষ্ঠু ও নিয়মতান্ত্রিক অভিবাসনের স্বপ্ন দেখি। আইএম জাপান প্রোগ্রামের আওতায় যারা জাপানে প্রশিক্ষণ নিয়ে বাংলাদেশে ফিরে এসেছেন তারা আমাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখছে। 

মন্ত্রী বলেন, দেশের ৩১ টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে জাপানি ভাষায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।যারা জাপানিজ ভাষায় অধিকতর দক্ষতা অর্জন করেছেন, তারা জাপানে গমনে অগ্রাধিকার পাচ্ছেন।

উল্লেখ্য, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মাসংস্থান মন্ত্রণালয় ও আইএম জাপান (আন্তর্জাতিক জনশক্তি উন্নয়ন সংস্থা জাপান) এর মধ্যে স্বাক্ষরিত এমওইউ অনুযায়ী এ পর্যন্ত ১৪৪ জন টেকনিক্যাল ইন্টার্ন জাপানে গমন করেছে।

প্রথম ব্যাচে ১০ জন টেকনিক্যাল ইন্টার্ন গত ১৭ সালের ৩০ আগস্টে জাপান গমন করেন। গমনকৃত ১০ জন টেকনিক্যাল ইন্টার্নদের প্রত্যেকেই ৩ বছর টিআইটিপি (প্রযুক্তিগত ইন্টার্ন ট্রানিং প্রোগ্রাম) প্রশিক্ষণকাল সফলভাবে সম্পন্ন করেছে এবং তাদের মধ্যে ৮ জন চলতি বছর ২১ আগস্ট বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করেছে। 

জাপানে টিআইটিপি (প্রযুক্তিগত ইন্টার্ন ট্রানিং প্রোগ্রাম) প্রোগামে প্রশিক্ষণকালীন পারিশ্রমিক হিসেবে তারা মাসিক এক লাখ ৫০ হাজার থেকে এক লাখ ৯০ হাজার জাপানিজ ইয়েন বেন পেয়েছে। 

এতে তিন বছরে তারা প্রত্যেকেই ৫৪ লাখ থেকে ৬৮ লাখ ৪০ হাজার জাপানিজ ইয়েন যাহা বাংলাদেশী মূদ্রায় প্রায় ৪৩ থেকে ৫৪ লাখ টাকা উপার্জন করেছে। 

উল্লিখিত ১০ জন টেকনিক্যাল ইন্টার্ন জাপানের বিভিন্ন কোম্পানীতে ইনড্রাস্ট্রিয়াল প্যাকেজিং, প্লাস্টিক মোল্ডিং, রড বাইন্ডিং ও স্কাফোল্ডিং ট্রেডের উপর জাপানের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে কাজ করে দক্ষতা অর্জন করেছে এবং তারা জাপানিজ ভাষার উপর দক্ষতা অর্জন করতে পেরেছেন।  

আই এম জাপান প্রোগামের আওতায় ৬ লক্ষ টাকার চেক প্রাপ্ত ৮ জন ইন্টার্নরা হলেন- মাহিন হাওলাদার, সাদ্দাম হোসেন, নবির হোসেন, তাহির তৈয়ব, ফিরোজ মাহমুদ লিটন, মিজানুর রহমান, রুহুল আমিন ও নাজমুল হুদা।


   আরও সংবাদ