প্রকাশ: ১৮ অগাস্ট, ২০২০ ১৪:০০ অপরাহ্ন
বশেমুরবিপ্রবি থেকে খাদিজা জাহান : গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার থেকে ৪৯ কম্পিউটার চুরির ঘটনায় গঠিত সাত সদস্যের তদন্ত কমিটির এক সদস্য বশেমুরবিপ্রবির সহকারী রেজিস্ট্রার নজরুল ইসলামকে অব্যাহতির দেয়ার নোটিশ প্রদান করেছে কমিটি।
মঙ্গলবার (১৮ আগস্ট) বশেমুরবিপ্রবির রেজিস্ট্রার ড. নূরউদ্দিন আহমেদ সাক্ষরিত চিঠিতে জানানো হয়।
সেখানে উল্লেখ করা হয়, তদন্ত কমিটির কার্যক্রম সকল প্রশ্নের উর্ধ্বে রাখতে অপর ছয় সদস্যের মতামতের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
এর আগে ১৮ আগস্ট চুরির ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে আয়োজিত এক মানববন্ধনে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলেন, কম্পিউটার চুরির সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাসরুল ইসলাম পনি শরীফকে একটি রেস্টুরেন্ট থেকে গ্রেফতার করে তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন কর্মকর্তাও পনির সাথে রেস্টুরেন্টে উপস্থিত ছিলেন।
যেই রেস্টুরেন্ট থেকে পনিকে গ্রেফতার করা হয়েছে সেই বারবিকিউ রেস্টুরেন্টে কর্মরত রেজওয়ান মোল্লাও বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, যখন তাদের রেস্টুরেন্ট থেকে শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করা হয় তখন নজরুল ইসলাম সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ফাহাদ সার্জিল বলেন, ১৮ জুলাই বিকেলে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন। এসময় গেটে দায়িত্বরত নিরাপত্তা কর্মীরা তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে বাঁধা দেয় এবং জানায় করোনা মহামারীর কারণে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিত প্রবেশ নিষেধ। কিন্তু একইসময় তিনি চুরির ঘটনায় গ্রেফতারকৃত শিক্ষার্থী পনিসহ আরও কয়েকজনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে জয়বাংলা চত্বরে দেখতে পান।
এসময় তিনি নিরাপত্তা কর্মীদের নিকট জানতে চান পনি কিভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করেছে। উত্তরে নিরাপত্তা কর্মীরা তাকে জানান, পনি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন কর্মকর্তার অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করেছে।
বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে ১৮ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে দায়িত্বপালনকারী নিরাপত্তাকর্মী আবু বকর বলেন, ১৮ জুলাই পনি নামের ওই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে চাইলে তারা প্রথমে তাকে বাঁধা দেই এবং কর্তৃপক্ষের কারো অনুমতি নিতে বলি।
এসময় পনি নজরুল ইসলামকে ফোন দেন এবং নজরুল ইসলাম তাদেরকে বলেন, পনি যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাকে যেনো প্রবেশ করতে দেয়া হয়।
এ বিষয়ে নজরুল ইসলাম জানান, তদন্ত কমিটির একজন সদস্য হিসেবে তিনি সবসময় প্রশাসন ও পুলিশকে সহযোগিতা করেছেন এবং তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ভিত্তিহীন।
পনিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের অনুমতি প্রদানের বিষয়ে তিনি বলেন, “পনি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আর একজন শিক্ষার্থী হিসেবেই তাকে প্রবেশের অনুমতি দিয়েছি। তার জায়গায় অন্য কোনো শিক্ষার্থী থাকলেও এমনটিই করতাম।”
এ বিষয়ে গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) ছানোয়ার হোসেন বলেন “এটি তদন্তাধীন বিষয় হওয়ায় আমরা এখনই বিস্তারিত কিছু বলবো না তবে আশা করছি খুব শীঘ্রই ঘটনার প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন হবে।”
প্রসঙ্গত, ঈদুল আজহার ছুটিতে বশেমুরবিপ্রবির কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার থেকে ৪৯ টি কম্পিউটার চুরি হয় এবং পরবর্তীতে ৩৪ টি কম্পিউটার বনানীর একটি হোটেল থেকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।