ঢাকা, বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২ বৈশাখ ১৪৩২, ২৬ জ্বমাদিউল সানি ১৪৪৭

অপরুপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি গবি ক্যাম্পাস


প্রকাশ: ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২১ ০৯:৫৮ পূর্বাহ্ন


অপরুপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি গবি ক্যাম্পাস

গবি থেকে আল মামুন : সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয় (গবি) ক্যাম্পাসে প্রবেশ করার সময় প্রথমেই কয়েক সেকেন্ডের জন্য চোখ গিয়ে থমকে দাড়াবে প্রধান ফটকে। নান্দনিক কারুকার্যে খচিত এবং পোড়ামাটির ফলকে ভাষা শহীদদের স্মৃতিগাথা। 

উপমহাদেশে নারী আন্দোলনের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া, ইলা মিত্রের তেভাগা আন্দোলন থেকে শুরু করে সুফিয়া কামালের সংগ্রামী জীবন এবং রফিক জব্বারের ভাষার জন্য আত্মত্যাগ সবই এখানে স্থান পেয়েছে।

আস্তে আস্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে যত প্রবেশ করা যাবে ততই সৌন্দর্য জালে আটকা পড়বে যে কারো মন। এ যেন জীবনানন্দের রুপসী বাংলারই খন্ডচিত্র।

 চারদিকে সবুজের গালিচা বিছানো ৩১ একরের রুপসী স্বাগত জানাবে বারবার। দক্ষিণা বাতাসের সাথে ফুল থেকে মধু সংগ্রহে মৌমাছির গুঞ্জন আর শুকনো পাতার মর্মর শব্দে প্রাণে ভিন্নরকম দোলা দিয়ে যাবে। ফুলে ফুলে নিষেক ঘটানোর দায়িত্বে রয়েছে সৌন্দর্যের রাণী প্রজাপতি।

আরও একটু ডান-বাম তাকালে চোখে পড়বে কাঠবাদাম গাছের বিস্তৃত সারি। নিবিড় ছায়ায় ঘন বিস্তৃত ছাতার মতো দাড়িয়ে থাকা গাছগুলো যেন চৈত্রের ক্লান্ত পথিকের একমাত্র আশ্রয়স্থল। রবীন্দ্রনাথ হয়তো দূর অতীতে এই ক্যাম্পাসে বসেই লিখেছিলেন, 'তালগাছ এক পায়ে দাঁড়িযে সব গাছ ছাড়িয়ে উঁকি মারে আকাশে।' এই কবিতার সাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে রয়েছে ক্যাম্পাসের তালগাছগুলো।

আঁকাবাঁকা ইটের রাস্তায় কৃষ্ণচূড়ার পাপড়ি বিছানো বৃষ্টিস্নাত পথ ধরে খালি পায়ে যুগল হেটে যাওয়ার থপথপ শব্দ যেন এখানেই বিদ্যমান। 

ওপাশে হিটলার চত্ত্বর থেকে পেয়াজ, কাঁচামরিচ আর সসা কুঁচিকুঁচির শব্দে ইথারটা যেন ক্লান্ত হয়ে পড়ে। ট্রান্সপোর্ট পেরিয়ে উত্তর দিকের সোজা ইটের রাস্তা ধরে একটু হাটলে চোখে পড়বে খেজুর গাছের সারি।

সময়ের সাথে সাথে এই ক্যাম্পাসের রুপের পালাবদল হতে থাকে। বিকেল বেলার অপরূপ সৌন্দর্যের কাছে হার মানে সমস্ত পৃথিবীর সৌন্দর্য। পশ্চিমাকাশের লাল সূর্যটার স্নিগ্ধ আলোয় আলোকিত হয়ে পরিস্ফুটিত হয় আরেক দফা সৌন্দর্যের। 

তবে গোধূলি লগ্নে ভূতের মত কালো অন্ধকারে চারপাশ ছেয়ে আসলেও কারো কাছে এই সৌন্দর্য যেন অন্যরকম আমেজ বয়ে নিয়ে আসে। 

ভূতুড়ে অন্ধকারে অদূরে শেয়ালের ডাক যেন ভিন্ন মাত্রা যোগ করে। অতি উৎসুক মানুষেরা রাতের সৌন্দর্যকে উপলব্ধি করবার জন্য কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের চারপাশে বিস্তৃত ছাউনির তলে বসে উপভোগ করেন চাঁদের রোমান্টিকতা। সব সৌন্দর্যের লীলাভূমি যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩১ একরের পরিপাটি ক্যাম্পাস।


   আরও সংবাদ