প্রকাশ: ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২১ ১১:২৬ পূর্বাহ্ন
জাবি থেকে শাহাদাত সুমন : করোনা মহামারীতে দর্শনার্থীদের উৎপাত কম থাকায় এই শীতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকগুলোতে এ যাবতকালের সর্বোচ্চ সংখ্যক পরিযায়ী পাখির দেখা মিলেছে।
গত ১৬ ও ১৭ই জানুয়ারী, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ কর্তৃক পরিচালিত এক পাখি শুমারীতে এসব তথ্য উঠে এসেছে বলে জানিয়েছেন পাখি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক কামরুল হাসান। শুমারি অনুসারে এই শীতে ইতিমধ্যে ৭ হাজারেরও বেশি পাখি ক্যাম্পাসে দেখা গেছে।
এর মধ্যে ১২ প্রজাতির পাখির দেখা মিলেছে, যা পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। গত বছর ক্যাম্পাসে ৬ টি প্রজাতির চার হাজার থেকে পাঁচ হাজার পাখি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান চারটি লেকে দেখা গিয়েছিলো।
প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান বলেন, এবছর বড় সরালি এবং ছোট সরালি ক্যাম্পাসের অন্যান্য প্রজাতির চেয়ে বেশি এসেছে। তবে আফ্রিকান কম্বডাকসহ কিছু বিরল প্রজাতির পাখিও দেখা গেছে যা এই বছরের আগে কখনও ক্যাম্পাসে আসেনি।
এছাড়া নাকতাহাঁস, গার্গেনি, খুনতেহাঁস, জিরিয়াহাঁস, ভুতিহাঁস, লেঞ্জাহাঁস, পাতারিহাঁস, গ্রেটার স্টর্ক, ফুলুরিহাঁস এবং ইউরেশিয় সিঁথিহাঁসও দেখা গেছে বেশী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মোস্তফা ফিরোজ বলেন, দর্শনার্থীর উৎপাত কম থাকায় বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পূর্বে ঘোষিত ৪টি প্রধান লেক ছাড়াও অন্যান্য লেকে অতিথি পাখি দেখা গেছে।
তিনি আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই বছর ক্যাম্পাসে মানুষের চলাচলকে করোনভাইরাস মহামারীর কারনে সীমাবদ্ধ করায় পাখির সংখ্যা সহ প্রজাতিও বেড়েছে।
তবে পাখি বিশেষজ্ঞরা অভিযোগ করেছেন যে অনিয়মিত আবর্জনা পরিষ্কার, লেকগুলোতে দর্শনার্থীদের ঢিল ছোড়া, লেকের পানিতে করোনাবর্জ্য যেমন ব্যবহৃত মাস্ক, স্যানিটাইজার বোতল, খাবারের বর্জ্য ফেলায় অতিথি পাখির বাস্তুসংস্থান নষ্ট হচ্ছে।এটি প্রতিরোধ করা সম্ভব হলে পাখির সংখ্যা আরও বাড়বে বলে দাবি করেছেন পাখি বিশেষজ্ঞরা।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, যে কর্তৃপক্ষ ক্যাম্পাসের লেকগুলিতে ইতিমধ্যে তীররেখা তৈরি করেছে এবং কিছুদুর পরপর সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড স্থাপন করেছে।
জানা যায়, নিরাপদ আবাসস্থল এবং খাবারের সন্ধানে সাইবেরিয়া, চীন, নেপাল, ভারতের আসাম, অরুণাচল প্রদেশ এবং আমাদের দেশের হাওড় অঞ্চল থেকে ১৯৮৬ সালে সর্বপ্রথম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পরিযায়ী পাখিদের আগমন শুরু হয়।