ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২ বৈশাখ ১৪৩২, ২৫ জ্বমাদিউল সানি ১৪৪৭

দেশে রাজনৈতিক ভিন্নতা থাকতে পারে কিন্তু উন্নয়ন থাকবে অভিন্ন : এলজিআরডি মন্ত্রী


প্রকাশ: ২৯ জানুয়ারী, ২০২১ ১৯:৪১ অপরাহ্ন


দেশে রাজনৈতিক ভিন্নতা থাকতে পারে কিন্তু উন্নয়ন থাকবে অভিন্ন : এলজিআরডি মন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার : রাজনৈতিক ভিন্নতা থাকতে পারে কিন্তু দেশ ও দেশের মানুষের উন্নয়নে কোনো ভিন্নতা থাকতে পারে না বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম। আওয়ামী লীগ অথবা অন্য রাজনৈতিক আদর্শে ভিন্নতা থাকলেও একটি জায়গায় ভিন্নতা থাকার কোনো সুযোগ নেই আর তা হচ্ছে দেশ, মানুষ এবং দায়িত্ব ও কর্তব্য। রাজনৈতিক ভিন্নতা বিবেচনায় না নিয়ে দেশের উন্নয়নে অর্থাৎ ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও উন্নত-সমৃদ্ধ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।

আজ শুক্রবার (২৯ জানুয়ারি) সিলেটে সিটি কর্পোরেশন আয়োজিত উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা: সিলেটের উন্নয়ন বিষয়ক মতবিনিময় সভায় সিলেট হোটেল ষ্টার প্যাসিফিকে এক আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, সিলেটের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ভিন্ন রাজনৈতিক আদর্শের হতে পারেন। কিন্তু উন্নয়নের ক্ষেত্রে তাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার সর্ব্বোচ সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। তা না হলে ১২০০ কোটি টাকার মত বড় প্রজেক্ট বরাদ্দ করার কথা না। তবে কয়েকটি উন্নয়নমূলক কাজ দেখে মনে হচ্ছে মেয়র আরিফও বরাদ্দকৃত টাকা জনগণের উন্নয়নে কাজে লাগাচ্ছেন। এভাবে সরকারের টাকা সঠিক জায়গায় কাজে লাগালে আমাদের পক্ষ থেকে সবসময় সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

দেশকে উন্নত সমৃদ্ধ করতে হলে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি উল্লেখ করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণের দায়িত্ব নিয়েছেন শেখ হাসিনা। আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক এবং শেখ হাসিনার সহকর্মী হিসেবে সে লক্ষ্য বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়নের রোডম্যাপ তৈরি করে দিয়েছেন আমরা সে রোডম্যাপ অনুযায়ী এগিয়ে যাচ্ছি।

তাজুল ইসলাম জানান, উত্তরবঙ্গ, দক্ষিণবঙ্গ অথবা পাহাড়ি-উপকূলীয় অঞ্চল সবই বাংলাদেশের অংশ। তাই সকল অঞ্চলকে অগ্রাধিকার দিয়ে সমগ্র দেশের উন্নয়নে কাজ করে সরকার। সকল অঞ্চল এবং মানুষের উন্নয়ন করতে না পারলে দেশ উন্নত হবে না। আর এই স্বপ্নটাই বঙ্গবন্ধু দেখেছেন বলেও জানান তিনি।

সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হককে উদ্দেশ্য করে মন্ত্রী বলেন, এই শহর মানুষের জন্য। শহরে মানুষের সমস্যা কোথায় খুজে বের করেন। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও খেলার মাঠ আছে কি না, আরও লাগবে কিনা তা খুজে বের করেন। টাকা কোথা থেকে আসবে তা দেখার বিষয় নয়। শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় থাকলে টাকা আসবে, কাজ হবে। কোনো কাজই আটকে নেই আর থাকবেও না। পদ্মা সেতুর কাজও আটকে যাবে বলে একটি পক্ষ গুজব রটিয়েছিলো। কিন্তু কেউকি আটকাতে পেরেছে। শেখ হাসিনা দেখিয়ে দিয়েছেন তার সরকার সব পারে। 

মন্ত্রী তাজুল ইসলাম আরো বলেন, টাকা কামানোর জন্য ধান্দা করা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। ঘুষ খেয়ে সমস্যা সৃষ্টি করে আমাদের চলমান উন্নয়নের ধারাবাহিকতাকে নষ্ট করবেন না। এসব করলে আমরা আমাদের গন্তব্যে যেতে পারবো না। আমরা সবাই মিলে কাজ করবো। মানুষের জন্য কাজ করবো। তাতে আমার সকল সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। সিলেট নগরীর বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিদর্শনের কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, পূণ্যভূমি ও পর্যটন নগরী সিলেটকে আধুনিক নগরীতে রূপান্তরিত করতে হলে মাস্টার প্ল্যান অর্থাৎ দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করতে হবে।

এসময়, প্রস্তাবিত বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্স, সুরমা রিভার ফ্রন্ট এক্টিভিটিজ, শেখ হাসিনা শিশু পার্কের উপরে প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করা হয়।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন বলেন, সিলেটে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা খুবই কম। শিক্ষার হার বাড়াতে হলে আমাদের সবার কাজ করতে হবে। বাড়াতে হবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা। কারণ সিলেটে চাহিদার তুলনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা খুবই কম। 

সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ। এলজিইডি’র প্রধান প্রকৌশলী জনাব আব্দুর রশীদ খান, ডিপিএইচই'র প্রধান প্রকৌশলী মোঃ সাইফুর রহমান এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।  
এর আগে, মন্ত্রী চৌহাট্টা-বন্দর সড়ক, জেলা পরিষদের মার্কেট উদ্বোধন এবং লালমাটিয়া ডাম্পিং গ্রাউন্ড, কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল পরিদর্শনসহ সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন বেশ কিছু উন্নয়নমূলক কাজ পরিদর্শন করেন।


   আরও সংবাদ