প্রকাশ: ৩১ ডিসেম্বর, ২০২০ ১৭:৪৯ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: আমার সব পরিচয়ের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং মূল্যবান পরিচয়, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ঢাকা জেলা ইউনিটের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
তিনি আজ দুপুরে নগর ভবনের শীতলক্ষ্যা হলে মহান বিজয় দিবস ২০২০ উপলক্ষে ঢাকা জেলা রেড ক্রিসেন্ট ইউনিট আয়োজিত বীর মুক্তিযোদ্ধা আজীবন সদস্যদের সম্মাননা স্মারক প্রদান অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন।
ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস এ সময় বলেন, আমি সংসদ সদস্য ছিলাম। আপনারা আমাকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হিসেবে নির্বাচিত করেছেন, ঢাকাবাসী আমাকে মেয়র নির্বাচিত করেছেন। কিন্তু আমার সব পরিচয়ের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং মূল্যবান যে পরিচিতি, যেটা আমাকে ছোটকাল থেকে অনুপ্রাণিত করেছে, আমাকে গভীরভাবে নাড়া দিয়েছে, আমাকে গর্বিত করেছে - সেটা হলো আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান।
এ সময় মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, আপনারা মুক্তিযুদ্ধে নিজেদেরকে আত্মত্যাগ করেছিলেন, আত্ম উৎসর্গ করেছিলেন। এই উৎসর্গ এবং আত্মত্যাগের মহিমায় রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি চলে। সুতরাং আমি মনে করি যে, আপনাদের সম্পৃক্ততা নতুন প্রজন্মের যারা রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির এই মূল মঞ্চ পরিচালনা করবেন, তাদের জন্য অনুপ্রেরণা যোগাবে।
ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস আরও বলেন, আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নেতৃত্বে, জাতীয় চার নেতা দিকনির্দেশনায়, ৩০ লক্ষ শহীদের অসম সাহসী ভূমিকায় ও ২ লক্ষ মা-বোনের আত্মত্যাগের বিনিময়ে। একজন শত্রু এদেশের মাটিতে থাকা পর্যন্ত আমাদেরকে সংগ্রাম চালিয়ে যেতে- বঙ্গবন্ধু সেই অনুপ্রেরণায় আপনাদের আত্মত্যাগ ও নিজের জীবনের পরোয়া না করে রণাঙ্গনে ঝাঁপিয়ে পড়া - এই বিষয়গুলো নতুন প্রজন্ম যতই জানবে ততই অনুপ্রাণিত হবে
টেবিলে বসে এদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়নি মন্তব্য করে ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস আরও বলেন, আমরা কোন বেতার কেন্দ্রে বক্তব্য দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করিনি, আমরা সেই ৪৮ সাল থেকে দীর্ঘ সংগ্রামের পথ পাড়ি দিয়ে, বারবার রক্ত দিয়ে, কারাগারে নিষ্পেষিত-অত্যাচারিত হয়ে, তারপর দীর্ঘ সংগ্রামের পথ পরিক্রমায় রণাঙ্গনে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে রক্ত দিয়ে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। সুতারাং, আমরা বীরের জাতি। সে ভাবনা, চিন্তা-চেতনা আমাদেরকে সবসময় অনুপ্রাণিত করবে। সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করব।
ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার তাপস আরও বলেন, আমরা মনে করি, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি আমাদের জন্য একটা বড় প্লাটফর্ম, যেখানে আমরা আর্তমানবতার সেবায় নিজেদেরকে উৎসর্গ করতে পারি।
বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং তাদের পরিবারের বিষয়গুলো অগ্রাধিকারে থাকবে জানিয়ে ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস এসময় আরও বলেন, আমরা মেরাদিয়া হাটে একটি কাঁচাবাজার ও মার্কেট করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। আমরা সেখানে অবশ্যই অত্র এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের যে পরিবার আছেন, তাদেরকে আমরা সেখানে ও ঢাকা শহরে ডিএসসিসি'র যে সকল মার্কেট রয়েছে, সেখানে আপনাদের পূনর্বাসনের বিষয়ে বিবেচনা করব।
ডিএসসিসি মেয়র এ সময় আরও বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে বৃহত্তর পরিসরে অনুষ্ঠান করতে পারিনি, তারপরও ক্ষুদ্র পরিসরে আপনাদেরকে সম্মানিত করার আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রয়াস। আমরা আশাবাদী যে, আগামী মার্চ মাস নাগাদ বিশ্ববাসী করোনা মহামারির প্রকোপ কিছুটা হলেও কাটিয়ে উঠতে পারবে। পরিস্থিতি সেরকম হলে আমরা ভবিষ্যতে আরো বৃহৎ পরিসরে আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা জানাব।
অনুষ্ঠানের রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ঢাকা জেলা ইউনিটের আজীবন সদস্য এরকম ২৬ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ঢাকা জেলা ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক লায়ন শরিফ আলী খানের সঞ্চালনায় এ সময় বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির আজীবন সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
এর আগে নগর ভবন প্রাঙ্গণে ডিএসসিসি মেয়রসহ ঢাকা জেলা রেড ক্রিসেন্ট ইউনিটের কার্যনির্বাহী সদস্যবৃন্দ নগর ভবন প্রাঙ্গণে স্থাপিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন।
অনুষ্ঠানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম আমিন উল্লাহ এবি এম আমিন উল্লাহ নুরী উপস্থিত ছিলেন।