ঢাকা, বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২ বৈশাখ ১৪৩২, ২৬ জ্বমাদিউল সানি ১৪৪৭

বশেমুরবিপ্রবি'র প্রকল্প পরিচালকের বিরুদ্ধে কোটি টাকা অনিয়মের অভিযোগ


প্রকাশ: ২১ ডিসেম্বর, ২০২০ ২০:৪৭ অপরাহ্ন


বশেমুরবিপ্রবি'র প্রকল্প পরিচালকের বিরুদ্ধে কোটি টাকা অনিয়মের অভিযোগ

বশেমুরবিপ্রবি থেকে খাদিজা জাহান: বঙ্গবন্ধু শেখ মু‌জিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের(বশেমুরবিপ্রবি) প্রকল্প পরিচালক আশিকুজ্জামান ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকা অনিয়মের প্রমাণ পে‌য়ে‌ছে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ধর্ম বিষয়ক অডিট অধিদপ্তর।

এ অনিয়‌ম সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও দুদক অবগত থাকলেও এখনো প্রকল্প পরিচালক পদে বহাল তবিয়তে রয়েছেন তিনি।

বশেমুরবিপ্রবির রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, ২০১৯ এর ১৭ জুলাই আশিকুজ্জামান ভুঁইয়াকে বশেমুরবিপ্রবি অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক দায়িত্ব দেয়া হয়। কিন্তু এরপরই এই প্রকল্পে ঘটে একের পর এক অনিয়ম। আর এসকল অনিয়মের বিষয় উঠে এসেছে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ধর্ম বিষয়ক অডিট অধিদপ্তরের প্রতিবেদনেও।

শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ধর্ম বিষয়ক অডিট অধিদপ্তরের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আশিকুজ্জামান ভূঁইয়া প্রকল্প পরিচালকে দা‌য়িত্ব গ্রহ‌নের পর তিনি বিধিবহির্ভূতভাবে খুলনা শিপইয়ার্ডকে বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি এবং আসবাবপত্র ও অন‌্যান‌্য সরঞ্জাম ক্রয় বাবদ সর্বমোট ২৮ কোটি ৩৫ লাখ ৩৫ হাজার ১৯৯ টাকা অগ্রীম প্রদান করেন। এসকল পণ্যের একটি বড় অংশের চাহিদা না থাকায় বর্তমানে অব্যবহৃত থেকে নষ্ট হচ্ছে

এছাড়া, গত বছ‌রের ২৪ জুলাই নি‌জে বিশ্ব‌বিদ‌্যাল‌য়ের না‌মে আলাদা অ‌্যাকাউন্ট খু‌লে ১ কোট‌ি ৪৪ লাখ ১৯ হাজার স‌রি‌য়ে নেন আশিকুজ্জামান ভূঁইয়া। বিষয়‌টি বিশ্ব‌বিদ‌্যাল‌য়ের অভ‌্যন্ত‌রে জানাজা‌নি হ‌লে ত‌ড়িঘ‌ড়ি ক‌রে সেই টাকা ১৪ ন‌ভেম্বর আবার আগের অ্যাকাউন্টে ফেরতও দেন তিনি। এরপর সেই অ‌্যাকাউন্ট‌টি বন্ধ ক‌রে দেন। এ ক্ষে‌ত্রে কোন নিয়মই মা‌নে‌ননি প্রকল্প প‌রিচালক। তার এমন অ‌নিয়ম এর কার‌ণে প্রক‌ল্পে লভ‌্যাংশ ক্ষ‌তি হ‌য়ে‌ছে দেড় লাখ টাকা। এটি নিয়ম বহির্ভূত ও অ‌নিয়ম বলছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।

উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা নিজে ভিন্ন একাউন্টে নেওয়াসহ এসব অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে এ বিষয়ে আশিকুজ্জামান ভুঁইয়া কথা বলতে রাজি হননি।

এ বিষয়ে বশেমুরবিপ্রবি উপ-পরিচালক (হিসাব) শেখ সুজাউদ্দিন বলেন, "এতে আমাদের কোনো পরামর্শ ও নেওয়া হয়নি। আমাদের কাছে কোনো ফাইল ও আসেনি। পরিকল্পনা, প্লানিং ও ওয়ার্কস অফিস তাদের নিজ দায়িত্বে অ‌্যাকাউন্ট খুলে লেন‌দেন ক‌রে‌ছে।

আর উপ-পরিচালক (প্লানিং) তুহিন মাহমুদ বলেন, "সহকারী পরিচালক (‌হিসাব) আমার রুমে এসে বলেছিলান একটি একাউন্ট খোলা লাগবে যৌথ একাউন্টে সিগনেচার দেওয়ার কথা। আমি পিডি ওদের কথায় সিগনেচার দিয়ে দিয়েছি।"

এদিকে; ব‌শেমুর‌বিপ্রবি অগ্রনী ব‌্যাংক শাখার তৎকালীন শাখা ব‌্যবস্থাপক কা‌র্তিক চন্দ্র মন্ডল ব‌লেন; বিশ্ব‌বিদ‌্যাল‌য়ের পি‌ডি'র লি‌খিত আবেদ‌নের প্রেক্ষি‌তে নতুন অ‌্যাকাউন্ট খু‌লে লেন‌দেন করা হয়। এ ক্ষে‌ত্রে কোন অ‌নিয়ম হ‌য়ে‌ছে কি না; সেটা তি‌নি বল‌তে পার‌‌বেন।

অনিয়মের সকল বিষয় নিয়ে জানতে চাইলে বশেমুরবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক এ কিউ এম মাহবুব বলেন, অনিয়মের এই বিষয়টি ইউজিসি জানে, দুদক জানে,সরকার জানে সুতরাং আমার বিশেষ কিছু করার নেই। বিষয়টা উপর মহল অবগত না থাকলে আমি তাদের অবগত করতাম।


   আরও সংবাদ