ঢাকা, বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২ বৈশাখ ১৪৩২, ২৬ জ্বমাদিউল সানি ১৪৪৭

বাংলাদেশের বিশাল জনশক্তিকে জনসম্পদে পরিণত করতে হবে: শিল্পমন্ত্রী


প্রকাশ: ৩০ নভেম্বর, ২০২০ ১৯:৩৮ অপরাহ্ন


বাংলাদেশের বিশাল জনশক্তিকে জনসম্পদে পরিণত করতে হবে: শিল্পমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার: বঙ্গবন্ধুর অর্থনৈতিক উন্নয়নের দর্শন বাস্তবায়নে যোগ্য ব্যবস্থাপক ও জনবল গড়ে তোলার তাগিদ দিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন এমপি। তিনি বলেন, দেশীয় শিল্প-কারখানায় উৎপাদনশীলতা বাড়াতে যোগ্য স্থানে যোগ্য লোককে দায়িত্ব অর্পণ করতে হবে। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ বেশ কিছু শিল্প কারখানার মালিক হলেও ব্যবস্থাপনার দক্ষতার অভাবে এগুলো লাভজনক করা যায়নি। এ বাস্তবতা উপলব্ধি করে বঙ্গবন্ধু শিল্প কারখানার উন্নয়নে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ম্যানেজমেন্ট সার্ভিস গঠন করেছিলেন।

শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এমপি আজ বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট (বিআইএম) আয়োজিত 'আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে দক্ষ ব্যবস্থাপনাঃ বঙ্গবন্ধু ও তাঁর দর্শন' শীর্ষক ভার্চুয়াল সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় একথা বলেন। সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার এমপি ও অতিরিক্ত সচিব সালাহউদ্দিন মাহমুদ।  বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি)'র বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসাইন সেমিনারে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান এতে মুখ্য আলোচক হিসেবে বক্তৃতা করেন। বিআইএম 'র মহাপরিচালক তাহমিনা আখতার সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুফল কাজে লাগাতে বাংলাদেশের বিশাল জনশক্তিকে জনসম্পদে পরিণত করতে হবে। এ লক্ষ্যে যুবগোষ্ঠীকে কার্যকর প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উদ্যোক্তা ও ব্যবস্থাপক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। তাহলেই কাঙ্খিত আর্থসামাজিক উন্নয়ন ঘটিয়ে অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন সম্ভব হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। বঙ্গবন্ধুকে একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে উল্লেখ করে শিল্পমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর নিজে তাঁর জীবনী লিখে গেছেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর কর্মময় জীবনের উপর গবেষণা করে নতুন প্রজন্মকে যোগ্য শিল্প ব্যবস্থাপক ও ভিশনারি নেতৃত্ব হিসেবে গড়ে তোলার পরামর্শ দেন। এর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত রূপকল্প ২০২১ এবং রূপকল্প ২০৪১ এর সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি শিল্পসমৃদ্ধ রাষ্ট্রে গড়ে তোলা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় শিল্প প্রতিমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পর জাতির পিতা শ্রমিক জনতার স্বার্থে পরিত্যক্ত শিল্প কারখানাগুলোকে জাতীয়করণ করেন। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, কারখানাগুলোর ব্যবস্থাপকদের দক্ষতার অভাবে কারখানাগুলো অলাভজনকে পরিণত হয়। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জনশক্তির দক্ষতা উন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করে শিল্প প্রতিমন্ত্রী বলেন, শিল্প কারখানাগুলোকে লাভজনক করতে কারখানার শীর্ষ পদে দক্ষ ব্যবস্থাপক নিয়োগ দিতে হবে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বের প্রচণ্ড সম্মোহনী শক্তিতে জনগণের মাঝে স্বাধীনতা অর্জনের জন্য একটি তীব্র আকাঙ্ক্ষা ও তাঁর নেতৃত্বের প্রতি আস্থা তৈরি হয়েছিল। তাঁর সফল নেতৃত্বের কারণেই মাত্র নয় মাসে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে।  

উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন একাধারে সুদক্ষ রাজনীতিবিদ, আদর্শ নেতা ও সফল ব্যবস্থাপক। স্বাধীনতার আগে ও পরে তাঁর পরিকল্পনা ও সেগুলোর বাস্তবায়ন পদ্ধতি ছিল অসাধারণ। একতরফাভাবে ৭ই মার্চের বক্তৃতায় স্বাধীনতা ঘোষণা করলে বাংলাদেশ কখনও স্বাধীন হতোনা। স্বাধীনতা যুদ্ধের রণনীতি, রণকৌশল কি হবে সেটি স্পষ্টভাবে দিয়েছেন। ছয় দফায় শিল্প ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা  দিয়েছিলেন।

ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসাইন বলেন, একজন দক্ষ ব্যবস্থাপকের সকল গুণাবলী বঙ্গবন্ধুর মাঝে ছিল। স্বাধীনতা অর্জন ও স্বাধীন বাংলাদেশকে একটি আদর্শ ও আধুনিক রাষ্ট্রে পরিণত করতে গিয়ে সুদক্ষ নেতৃত্বের যে স্বাক্ষর রেখেছেন সেটি নজিরবিহীন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু সবসময় ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করতেন এবং তা সহজেই তাঁর কর্মী ও জনগণের মাঝে ইতিবাচক অনুপ্রেরণার সঞ্চারণ করতে পেরেছেন।  

এর আগে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ এমপি বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট ভবনে 'বঙ্গবন্ধু কর্নার'-এর উদ্বোধন করেন। বিআইএম 'র মহাপরিচালক তাহমিনা আখতারসহ শিল্প মন্ত্রনালয় ও বিআইএম 'র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ এসময় উপস্থিত ছিলেন।

 


   আরও সংবাদ