প্রকাশ: ২৪ অক্টোবর, ২০২০ ২১:৫৮ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : বিশ্ব ব্যাংক ও আইএমএফ এর বার্ষিক সভা-২০২০ এর অংশ হিসাবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মু্স্তফা কামালের নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল ও বিশ্ব ব্যাংকের দক্ষিন এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মি.হার্টউইগ শ্যেফার এর নেতৃত্বে বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধি দলের মধ্যে ২২ অক্টোবর সন্ধ্যায় একটি ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসাবে অর্থমন্ত্রী, অর্থ সচিব ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব আলোচনায় অংশ গ্রহণ করেন। অন্যদিকে, বিশ্ব ব্যাংকের পক্ষে মি.হার্টউইগ শ্যেফার ও মিজ মার্সি মিয়াং টেম্বন আলোচনায় অংশ গ্রহণ করেন।
সভার প্রারম্ভে অর্থমন্ত্রী বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিশ্ব ব্যাংকের অব্যাহত সহযোগীতার জন্য কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। তিনি পৃথিবীতে করোনা টিকা আসার সাথে সাথে বাংলাদেশের সংগ্রহের বিষয়ে প্রয়োজনীয় সহযোগীতা প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করতে অনুরোধ করেন। তিনি কোভিড-১৯ টিকা ক্রয়ের জন্য ঋণ সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে আইডিএ ভূক্ত দেশগুলোর মধ্যে জনসংখ্যাধিক্যের দিক দিয়ে ৩য় স্হানে থাকা বাংলাদেশের জন্য জনসংখ্যার ভিত্তিতে নায্যতার সঙ্গে দ্রুত ঋণ মঞ্জুরের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের জন্য মি হার্টউইগ শ্যেফার এর সহযোগীতা কামনা করেন।
অর্থমন্ত্রী কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলার লক্ষ্যে বিশ্বব্যাংকের গৃহীত দ্রুত ও সময়োযোগী বিভিন্ন উদ্যোগেরও প্রশংসা করেন। তিনি এ প্রসঙ্গে কোভিড-১৯ মোকাবেলার ক্ষেত্রে দ্রুততার সঙ্গে বাংলাদেশকে ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ সহায়তা প্রদানের বিষয়টি উল্লেখ করেন। বিশ্বব্যাংকও এ বিষয়ে আশ্বস্ত করেন যে বাংলাদেশের বিষয়টি অবশ্যই ইতিবাচকভাবে দেখা হবে।
সভায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অভিপ্রায় অনুযায়ী করোনার টিকা আবিষ্কারের সঙ্গে সঙ্গে দেশের সকল জনগনের জন্য টিকা প্রাপ্তি নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে বর্তমান ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে বাংলাদেশের জন্য বিশ্ব ব্যাংকের আইডিএ ১৯ এর আওতায় বরাদ্দকৃত অর্থের অতিরিক্ত হিসাবে করোনা টিকা আমদানী, ক্রয়, সংরক্ষণ, পরিবহন ও বিতরনের কাজে ব্যবহারের উদ্দশ্যে ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সহায়তা প্রদানের জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়। কোভিড-১৯ জনীত কারণে সংঘটিত দেশের বিভিন্নমুখী ক্ষয়-ক্ষতি পূরণের লক্ষ্যে প্রস্তাবিত কোভিড-১৯ পুনরুদ্ধার এবং প্রতিক্রিয়া প্রকল্পের মোট বরাদ্দ ৫০০ মিলিয়ন ডলারের মধ্য থেকে বর্তমান ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে জরুরী ভিত্তিতে অন্তঃত ২৫০ মার্কিন মিলিয়ন ডলার ছাড়করণের জন্য বিশ্ব ব্যাংকের প্রতি বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জোর অনুরোধ জানানো হয়েছে।
চলমান করোনা মহামারীজনিত কারণে দেশের ক্ষতিগ্রস্হ শ্রমবাজার, আর্থিক ও সামাজিক খাত সচল রাখবার লক্ষ্যে বর্তমান ২০২০-২০২১ অর্থবছরে বিশ্বব্যাংকের প্রোগ্রাম্যাটিক জবস ডেভলপমেন্ট পলিসি ক্রেডিট (ডিপিসি) প্রকল্পের আওতায় ৩য় কিস্তির ২৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বাজেট সাপোর্ট হিসাবে দ্রুত ছাড়করণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা গ্রহণের জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিশ্বব্যাংককে অনুরোধ করা হয়েছে।
চাকরি ডিপিসি এর জন্য প্রয়োজনীয় শর্তাবলীর অধিকাংশই ইতোমধ্যে পূরণ করা হয়েছে। অবশিষ্ট শর্তাবলীও সহসাই পূরণ করা সম্ভব হবে মর্মে আব্দুর রউফ তালুকদার, সিনিয়র সচিব, অর্থবিভাগ সভাকে অবহিত করেন।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন আলোচনাকালে বলেন যে, আইডিএ-১৮ এর আওতায় বাংলাদেশ কোর আইডিএ হতে ৫(পাঁচ) বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং এসইউএফ হতে আরো ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নে সক্ষমতা প্রদর্শন করেছে, যা আইডিএ ভূক্ত দেশগুলোর মধ্যে একক সর্বোচ্চ পরিমান।
তিনি প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নে সক্ষমতা প্রদর্শন করায়, আইডিএ-১৯ এর আওতায় বাংলাদেশকে বিগত বছরগুলোর তুলনায় অধিক পরিমানে বরাদ্দ প্রদানের অনুরোধ করেন।