ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২ বৈশাখ ১৪৩২, ২৫ জ্বমাদিউল সানি ১৪৪৭

বিসিকের তহবিল থেকে ক্ষতিগ্রস্থ উদ্যোক্তাদের ঋণ প্রদানের দাবি


প্রকাশ: ২১ অক্টোবর, ২০২০ ১৯:১৪ অপরাহ্ন


বিসিকের তহবিল থেকে ক্ষতিগ্রস্থ উদ্যোক্তাদের ঋণ প্রদানের দাবি

স্টাফ রিপোর্টার : করোনা মহামারীতে ক্ষতিগ্রস্থ অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তাদের (এমএসএমই) জন্য বিসিক নিজস্ব তহবিল থেকে ঋণ প্রদানের দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট শিল্পখাতের উদ্যোক্তারা। 

তারা বলেন, এ লক্ষ্যে বিসিককে ৮শ’ কোটি এবং এসএমই ফাউন্ডেশনকে ৫শ’ কোটি টাকা বিশেষ বরাদ্দ দিয়ে একটি ঋণ তহবিল গঠন করতে হবে। এ তহবিল থেকে তৃণমূল পর্যায়ের ক্ষতিগ্রস্থ উদ্যোক্তাদের অর্থায়ন করে করোনাকালীন ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া সম্ভব। এ ধরণের উদ্যোগ দেশের অর্থনীতিকেও চাঙ্গা করবে বলে তারা মন্তব্য করেন।

আজ বুধবার (২১ অক্টোবর) শিল্প মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত  "ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পখাতে কোভিড-১৯ এর প্রভাব এবং জাতীয় এসএমই নীতি ২০১৯ বাস্তবায়ন (ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের উপর কোভিড -১৯ এর প্রভাব এবং এসএমই নীতি -২০১৯ বাস্তবায়নের উপর সংলাপ)" শীর্ষক সংলাপে অংশ নিয়ে উদ্যোক্তারা এ কথা বলেন। 

জাতীয় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সমিতি, বাংলাদেশ (নাসিব) এবং অ্যাকশন এইড বাংলাদেশ যৌথভাবে এ সংলাপের আয়োজন করে। শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সালাহ্উদ্দিন মাহমুদ এতে প্রধান অতিথি ছিলেন।

জাতীয় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সমিতি, বাংলাদেশ (নাসিব) এর সভাপতি মির্জা নুরুল গণী শোভনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে পৃথকভাবে দুটি মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শিল্প মন্ত্রণালয়ে সিনিয়র সহকারী সচিব মোঃ সলিম উল্যাহ এবং অ্যাকশন এইড এর উপব্যবস্থাপক মোঃ হাতেম আলী। সংলাপে এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিকুল ইসলাম, বিসিক পরিচালক আলমগীর হোসেন, ন্যাশনাল প্রোডাক্টিভিটি অর্গানাইজেশনের (এনপিও) পরিচালক নিশ্চিন্ত কুমার পোদ্দার, অ্যাকশন এইড বাংলাদেশ-এর পরিচালক আজগর আলী সাবরী, নাসিবের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ মজিবুর রহমান বেলালসহ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প উদ্যোক্তা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, গণমাধ্যমকর্মী ও উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা আলোচনায় অংশ নেন।

মুক্ত আলোচনায় বক্তারা বলেন, কোভিড-১৯ এর ফলে অপ্রাতিষ্ঠানিক শিল্পখাতসহ তৃণমূলের এমএসএমই শিল্পখাত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। পণ্য বিপণন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখাতের উদ্যোক্তাদের একটি বিরাট অংশ করোনাকালে চলতি মূলধন হারিয়ে ফেলেছে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাথে সংযোগের সক্ষমতা না থাকায় তারা প্রণোদনার সুফল থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে। 

তারা ব্যাংকিং সুবিধাবঞ্চিত অতি ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প উদ্যোক্তাদের সহজে ঋণ প্রাপ্তির ব্যবস্থা করতে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। জাতীয় এসএমই নীতি ২০১৯ বাস্তবায়নের মাধ্যমে করোনা পরবর্তী অর্থনীতি বেগবান করতে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের নিয়ে একটি কেন্দ্রিয় মনিটরিং কমিটি গঠনেরও পরামর্শ করেন তারা।

বক্তারা আরও বলেন, এমএসএমই শিল্পখাত বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের মূল চালিকা শক্তি। দেশের জিডিপিতে এখাতের অবদান ২৫ শতাংশ হলেও ব্যাংকিং জটিলতার কারণে সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তারা প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় পর্যাপ্ত ঋণ সুবিধা পাচ্ছেন না। এসএমইখাতের জন্য বরাদ্দকৃত প্রণোদনার ২০ হাজার কোটি টাকার অধিকাংশ এখনও অব্যবহৃত রয়ে গেছে। তারা দ্রুত অর্থায়ন সুবিধা নিশ্চিত করে এমএসএমইখাতকে ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ দিতে সরকারের সহায়তা কামনা করেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সালাহ্উদ্দিন মাহমুদ বলেন, তৃণমূল পর্যায়ের এমএসএমই উদ্যোক্তারাই দেশের অর্থনীতির প্রাণশক্তি। করোনার ফলে তাদের পণ্য বিপণন বাধাগ্রস্ত হওয়ায় জাতীয় অর্থনীতিতে মারাত্মক ধাক্কা লেগেছে। এর মোকাবেলায় অপ্রাতিষ্ঠানিকখাতসহ এমএসএমই উদ্যোক্তাদের অর্থায়ন নিশ্চিতে সরকার কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনা মহামারীর শুরুতেই ১ লাখ ৩ হাজার ১১৭ কোটি টাকা প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন, যা জিডিপির ৩.৬ শতাংশ। 

তৃণমূল পর্যায়ের উদ্যোক্তাদের কাছে এ প্রণোদনার সুবিধা পৌছে দিতে শিল্প মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে পরিকল্পিত উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ২০২৫ সাল নাগাদ জিডিপিতে এসএমইখাতের অবদান ৩২ শতাংশে উন্নীত করতে জাতীয় এসএমই নীতিমালা ২০১৯ প্রণয়ন করা হয়েছে। মন্ত্রণালয় গঠিত ৭টি কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করে এ নীতি বাস্তবায়নের কাজ চলছে। এ লক্ষ্যে শিল্প মন্ত্রণালয়ে একটি এসএমই উইং গঠনের প্রক্রিয়া চলছে বলে তিনি জানান।


   আরও সংবাদ