ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২ বৈশাখ ১৪৩২, ২৫ জ্বমাদিউল সানি ১৪৪৭

মৎসজীবি সমিতির বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত না করেই ফিরে গেল কমিটি


প্রকাশ: ৩০ অগাস্ট, ২০১৯ ০০:০০ পূর্বাহ্ন


মৎসজীবি সমিতির বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত না করেই ফিরে গেল কমিটি

যশোর থেকে খান সাহেব : যশোরের চৌগাছার মৎসজীবি সমবায় সমিতির গঠিত কমিটি অবৈধ মর্মে যশোর জেলা ও চৌগাছা উপজেলা সমবায় অফিসে অভিযোগের পর গঠিত তদন্ত কমিটি তদন্ত না করেই ফিরে গেছেন। 

বৃহস্পতিবার বেড়গোবিন্দপুর বাওড় মৎস অফিসে এই তদন্ত কমিটি অভিযোগকারী এবং অভিযুক্ত পক্ষের শুনানি গ্রহণ করার কথা ছিল। কিন্তু অভিযোগকারী পক্ষের লোকজন তদন্ত কমিটির সামনে সাক্ষ্য দিতে না আসায় প্রায় এক ঘন্টা অপেক্ষা করে ফিরে যায়। 

জানা যায়,  বেড়গোবিন্দপুর মৎসজীবি সমবায় সমিতি লিঃ এর ব্যবস্থাপনা কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় গত ২৫ এপ্রিল চৌগাছা উপজেলা সমবায় অফিসার 

ছালাহউদ্দিন স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে তিন সদস্যের আহব্বায়ক কমিটি গঠন করে দেয়া হয়। আহব্বায়ক কমিটি গঠনের ১২০ দিনের মধ্যে বিশেষ সাধারণ সভার নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নির্বাচিত কমিটির নিকট দায়িত্ব হস্তান্তরের জন্য আহব্বায়ক কমিটিকে নির্দেশ দেয়া হয়। 

১৫ মে মৎসজীবি সমিতির সদস্য ইমরান হোসেন উপজেলা সমবায় অফিসার বরাবর সমিতির ব্যবস্থাপনা কমিটি সমবায় সমিতি আইন ও বিধি মোতাবেক গঠনের জন্য আবেদন করেন। সেখানে তিনি লেখেন দীর্ঘ ৮-১০ বছর ধরে সমিতির কোন নির্বাচন হয় নাই। যার কারণে সমিতিটি অকার্যকর ও দুর্বল হয়ে পড়েছে। 

এরপর ৩১ জুলাই আহব্বায়ক কমিটি অধির কুমারকে সভাপতি ও রতন কুমারকে সাধারণ সম্পাদক করে ছয় সদস্যের একটি কমিটি উপজেলা সমবায় অফিসার বরাবর জমা দেন। 

সেই কমিটিকে অবৈধ, আইন ও বিধি পরিপন্থী বলে ১৮ আগস্ট উপজেলা সমবায় অফিসার বরাবর একটি আবেদন করেন সমিতির সদস্য বিকাশ। আবেদনের সাথে সমিতির ২০২ জন সদস্যের মধ্যে ৫৮ জন সদস্যের স্বাক্ষরযুক্ত করা হয়। সেখানে অভিযোগ করা হয় বেড়গোবিন্দপুর মৎসজীবি সমবায় সমিতিতে দীর্ঘ ৮-১০ বছর কোন নির্বাচন হয়নি। যার ফলে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির কারনে সমিতিটি অচল হয়ে পড়ায় গরিব জেলেরা চরম দুর্ভোগে পড়েছে। যাতে সমিতিতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। 

সেখানে আরো বলা হয় মৎসজীবিদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে আমরা সমবায় সমিতির আইন ও বিধি মোতাবেক একটি নির্বাচিত কমিটি আশা করেছিলাম। কিন্তু কিছু কুচক্রী মহলের কু-পরামর্শে তফসিল ঘোষণা না করে অতি গোপনে অবৈধ কমিটি দাখিল করেছে। যা আমার সমিতিরি সদস্যগণ মানতে রাজি না। আবেদনে ওই কমিটি বাতিল করে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার দাবি জানানো হয়। 

একই আবেদনপত্র ১৯ আগস্ট জেলা সমবায় অফিসার বরাবরও করেন সমিতির সদস্য বিকাশ। তার আবেদনের প্রেক্ষিতে ২১ আগস্ট জেলা সমবায় অফিসার এসএম মুঞ্জুরুল হক বেড়গোবিন্দপুর মৎসজীবি সমবায় সমিতির ২৯ জুন নির্বাচন সমবায় সমিতি আইন ও বিধিমালা মোতাবেক অনুষ্ঠিত হয়েছে কি না তা সরেজমিনে তদন্ত পূর্বক সুস্পষ্ট মন্তব্যসহ ৩০ আগস্টের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ প্রদান করে জেলা সমবায় কার্যালয়ের উপ-সহকারী নিবন্ধক শরিফুল ইসলামকে আহব্বায়ক ও পরিদর্শক উবাইদুজ্জামানকে সদস্য করে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে দেন।

অভিযোগকারী মৎসজীবি ইমরান হোসেন বলেন সমিতির দশ শতাংশ সদস্য অভিযোগ করলে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ কমিটি ভেঙে দিতে পারেন।

তদন্ত কমিটির আহব্বায়ক ও জেলা উপ-সহকারী নিবন্ধক শরিফুল ইসলাম ২৫ আগস্ট এক নোটিশে বিষয়ে যাচাইয়ের জন্য সমিতির কার্য্যালয়ে বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) সকাল দশটায় তদন্তের দিন ধাযর্য করেন। কিন্তু গতকাল তদন্ত কমিটি তদন্তের জন্য সমিতির কাযর্যালয়ে উপস্থিত হলেও অভিযোগকারী পক্ষ হাজির না হওয়ায় কমিটি তদন্ত না করেই ফিরে যায়। 

এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির আহব্বায়ক ও যশোর জেলা উপ-সহকারী নিবন্ধক শরিফুল ইসলাম মোবাইল ফোনে বলেন মৎসজীবি সমিতির একপক্ষ হাজির হন। কিন্ত আর এক পক্ষ হাজির হয়নি। তারা বলেছে তারা নিরাপত্তা জনিত কারনে হাজির হতে পারিনি। তিনি আরো বলেন দশ শতাংশ সদস্য অভিযোগ দিলে সেটা তদন্তের ভিত্তিতে কমিটি ভেঙে দেয়া যায়।


   আরও সংবাদ