ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ ভাদ্র ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

মণিরামপুরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুর্বৃত্তদের হামলায় আহত ৫


প্রকাশ: ৬ অগাস্ট, ২০২০ ১৪:০০ অপরাহ্ন


মণিরামপুরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুর্বৃত্তদের হামলায় আহত ৫

   

মণিরামপুর (যশোর) সংবাদদাতা : মণিরামপুরের পল্লীতে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুর্বত্তরা ধারালো গাছি দা দিয়ে কুপিয়ে নারী-পুরুষসহ ৫ জনকে মারাত্বক জখম করেছে । 

গতকাল বৃহস্পতিবার (৬ আগস্ট) বেলা ১২ টার দিকে উপজেলার চালুয়াহাটী ইউনিয়নের লক্ষনপুর ঋষী পল্লীতে এ সহিংস ঘটনাটি ঘটেছে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত ওই পল্লীর বাসিন্দা 

সুনীল দাসের ছেলে হাজরা দাস (৩৫) ও মান দাসের ছেলে শেখর দাস (৩০) কে স্থানীয়রা  রক্তাক্ত জখম অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। অন্য আহতদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। 

পুলিশ ওই দিন বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। এ নিয়ে বিবাদমান দু’টি পক্ষের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে।  শুক্রবার সকালে সরেজমিন ঘটনাস্থলে গেলে স্থানীয়রা জানান, তাদের পল্লীর চিহিৃত সুদখোর কৃষ্ট দাসের ছেলে দেবদাস সুদে কারবারির পাওনা টাকার জন্য ঘটনার দিন সকালে শিবপদ দাসের বাড়িতে যেয়ে টাকার জন্য চাপ দিয়ে হুমকি-ধামকি দিয়ে আসে। 

যার ফলে দেবদাস ও শিবপদ দাসের দুই পরিবারের মধ্যে ঝগড়া-কলহের এক পর্যায়ে অতর্কিতভাবে দেবদাসসহ তার ভাই অশোক দাস ও তাদের বাবা কৃষ্ট দাস ধারালো দা’ নিয়ে শিবপদ দাসের বাড়ীর লোকজনের উপর হামলা চালায়।  

এসময় এলোপাতাড়িভাবে ধারালো দা দিয়ে কুপিয়ে শিবপদ দাসের ভাই হাজরা দাস  ও চাচাতো ভাই শেখর দাসকে গুরুত্বর জখম করে। এ ছাড়া শিবপদ দাসের স্ত্রী দেবলা দাস, ছেলে শান্ত দাস ও চাচা মানদাসও এ ঘটনায় আহত হয়। তাদেরকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। 

এ সহিংস ঘটনায় গুরুতর আহত হাজরাদাস জানান, তাকে দেবদাসের ভাই ও বাবা ধারালো দা দিয়ে বাম হাতে ও বুকে কুপিয়েছে। তার বাম হাতের জখমের স্থানে চিকিৎসকরা ৭টি সেলাই ও বেন্ডেজ দিয়েছেন। অন্য আহত শেখর দাসের মাথায় দা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে। তার মাথায় ৪টি সেলাই দিতে হয়েছে। দায়ের কোপ ঠেকাতে যেয়ে তার হাতের কব্জি কেটে গেছে বলে তিনি জানান। তিনি অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেছেন বলে জানান

এ দিকে এ সহিংস ঘটনার প্রকৃত কারণ জানতে চাইলে শিবপদ দাসের কলেজ পড়–য়া ছেলে শান্ত দাস জানান, গত চার বছর আগে আমার বাবা দেবদাসের কাছ থেকে মাসে ৬০০ টাকা সুদ দেওয়ার শর্তে ৩ হাজার টাকা নেয়। চার বছর ধরে সুদ টানার পর আমার বাবা গত ৬ মাস আগে সুদ ও আসল টাকা পরিশোধ করে দিয়েছেন। এরপরও দেবদাস বিভিন্ন সময়ে তাদের কাছে  ৪ হাজার টাকা পাওয়া আছে হিসেবে দাবী করে আসছে। 

সম্প্রতি টাকার জন্য দেবদাস ও তার ভাটাটে লোকজন তাদের পরিবারের উপর চাপ দিতে থাকে এমনকি বিভিন্ন সময়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিল। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার সকালে তারা আমাদের পরিবারের উপর অতর্কিতভাবে হামলা চালিয়েছে। 

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিবপদ দাস বলেন, স্থানীয় মেম্বার ও গন্যমান্য ব্যক্তি বিষয়টি মিমাংসার দায়িত্ব নিয়েছেন। এর কোন সুরাহ না হলে আইনের আশ্রয়ে যেতে হবে। 

এদিকে সহিংস ঘটনার অভিযুক্ত দেবদাস বিষয়টি ভিন্নখাতে নিতে উল্টো থানায় অভিযোগ দিয়েছেন বলে ভুক্তভোগী শিবপদ দাস জানান। স্থানীয় ইউপি সদস্য ফজলুর রহমান জানান, দেবদাস এলাকার একজন 

চিহিৃত সুদখোর। ইতিপূর্বে তার নিয়ে কয়েকবার সালিস করেছি। বিষয়টি নিয়ে দুইপক্ষকে ডেকে তিনি মিমাংসার উদ্যোগ নিয়েছেন বলে জানান। 

এ ঘটনায় অভিযুক্ত দেবদাসের মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে তা বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।


   আরও সংবাদ