ঢাকা, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ ভাদ্র ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫

শেখ কামালের ৭১ তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করেছে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়


প্রকাশ: ৫ অগাস্ট, ২০২০ ১৪:০০ অপরাহ্ন


শেখ কামালের ৭১ তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করেছে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়

   

স্টাফ রিপোর্টার : সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র আধুনিক ক্রীড়াঙ্গণের রুপকার শহীদ শেখ কামালের ৭১ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি পালন করেছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়।

আজ শহীদ শেখ কামালের ৭১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সকাল ৯টায় যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর ধানমন্ডিস্থ আবাহনী ক্লাব মাঠে শহীদ শেখ কামালের প্রতিকৃতিতে এবং বনানী কবরস্থানে শহীদ শেখ কামালের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তিনি।

আজ বেলা ১১টায় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ অডিটোরিয়ামে শেখ কামালের বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনের ওপর ভার্চুয়াল আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে উপস্হিত ছিলেন বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, শেখ কামালের মত একজন মেধাবী এবং ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি বেঁচে থাকলে সমাজ ও দেশকে অনেক কিছুই দিতে পারতো।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকেই ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। বঙ্গবন্ধু তার পরিবারের সদস্য-স্বজনদের পাশাপাশি আর্মি অফিসাররা তাদের সহকর্মীদেরও হত্যা করেছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ কামালের স্মৃতিচারণ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ছেলে হিসেবে শেখ কামাল নিজের জন্য কিছুই করেনি বরং বিয়ের পরে তাকে ৩২ নম্বরের বাড়ির তৃতীয় তলায় স্ত্রীসহ থাকার জায়গা করে দিতে হয়েছে।

তিনি বলেন, সব সন্তানই বাবার হাত ধরে স্কুলে গেলেও আমাদের সেই সুযোগ হয়নি। বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার জীবনকে দেশ ও মানুষের কল্যাণে উৎসর্গ করায়, পরিবারের বড় ছেলে শেখ কামালকে শৈশব থেকেই ক্রীড়া ও সংস্কৃতি চর্চার পাশাপাশি মায়ের সাথে পরিবারের অনেক দায়িত্বও পালন করতে হয়েছে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা জনাব সালমান ফজলুর রহমান এবং সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। শেখ কামালের জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা করেন শেখ কামালের ঘনিষ্ঠজন, বন্ধু ও সহযোদ্ধারা। 

আলোচনায় অংশগ্রহন করেন মুজিব বর্ষ উদযাপন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী, বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশনের মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজা,  বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন, বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি অন্জন চৌধুরী পিন্টু ও মিডিয়া ব্যাক্তিত্ব মোজাম্মেল বাবু। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন যুব ও ক্রীড়া সচিব আখতার হোসেন। আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল।

সভাপতির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী ছিলেন শেখ কামাল মহান মুক্তিযুদ্ধ, ছাত্র রাজনীতি, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড, খেলার মাঠ থেকে নাটকের মঞ্চ-সর্বত্র ছিল তার  দীপ্ত  উপস্থিতি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকের বুলেট তার শারীরিক মৃত্যু ঘটিয়েছে, কিন্তু তিনি মৃত্যুঞ্জয়ী হয়ে আছেন এ দেশের ক্রীড়ায়, সংস্কৃতিতে, সংগীতে। শেখ কামাল ছিলেন এ দেশের আধুনিক ক্রীড়াঙ্গণের রূপকার এবং আধুনিক ফুটবলের জনক। 

তিনি আরো বলেন, শহীদ শেখ কামাল তরুণ প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণার এক অনিঃশেষ উৎস। আমার বিশ্বাস, তার দেখানো পথ অনুসরন করেই ভবিষ্যৎ প্রজন্ম গড়ে তুলতে পারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজন্ম লালিত স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ।

আলোচনা অনুষ্ঠানে শেখ কামালকে নিয়ে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে নির্মিত "শেখ কামাল,  এক কিংবদন্তীর কথা" শীর্ষক তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল শেষে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত ‘শহীদ শেখ কামাল- আলোমুখী এক প্রাণ’ শীর্ষক স্মারকগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া শেখ কামালের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে অসহায় ও করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত ক্রীড়াবিদ ও ক্রীড়া সংগঠকদের আর্থিক অনুদান প্রদান করেন ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী।

বিকেল ৩টায় যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর কর্তৃক সারাদেশে এক লাখ চারাগাছ রোপন কর্মসূচির উদ্বোধন করেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী।

উল্লেখ্য, ১৯৪৯ সালের ৫ আগস্ট গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন শেখ কামাল। এবারই প্রথমবারের মতো সরকারিভাবে নানা আয়োজনে তার জন্মদিন উদযাপন করছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়।


   আরও সংবাদ