ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১ বৈশাখ ১৪৩২, ২৫ জ্বমাদিউল সানি ১৪৪৭

মণিরামপুরে ধর্ষণ মামলা থেকে বাঁচতে ভূয়া জন্ম সনদে বিয়ে


প্রকাশ: ২৭ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ পূর্বাহ্ন


মণিরামপুরে ধর্ষণ মামলা থেকে বাঁচতে ভূয়া জন্ম সনদে বিয়ে

মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি : মণিরামপুরে বহুল আলোচিত ধর্ষণের শিকার মাদ্রাসা ছাত্রীকে ভূয়া জন্ম সনদ দেখিয়ে বিয়ে করলেন একই মাদ্রাসার শিক্ষক ধর্ষক তরিকুল ইসলাম। 

গত ২৫ জুলাই মামলা থেকে বাঁচতে শিক্ষক তরিকুল ওই শিক্ষার্থীকে বয়স বেশি দেখিয়ে ভূয়া জন্ম সনদে বিয়ে করেছেন বলে অভিযোগ। যদিও শিক্ষক তরিকুলের প্রথম পক্ষের স্ত্রী ও ৩ কন্যা সন্তান রয়েছে। 

অপকর্মের কারণে মাদ্রাসা থেকে বরখাস্তও হন তিনি। ওই ছাত্রীর জন্ম সনদ উপজেলার ঝাঁপা ইউনিয়ন পরিষদের দেখানো হলেও ইউনিয়ন সচিব তাকে জন্ম সনদ দেয়া হয়নি বলে নিশ্চিত করেছেন।

জানা যায়, ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর উপজেলার ঝাঁপা বালিকা দাখিল মাদ্রাসায় নাইট কোচিং শেষে বাড়ি ফেরার পথে অপর শিক্ষক নজরুল ইসলামের সহযোগিতায় ধর্ষন করেন তরিকুল ইসলাম। পরে অচেতন ও রক্তাক্ত অবস্থায় মাদ্রাসার বাথরুম থেকে উদ্ধার করে যশোর আড়াইশ’ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করেন ভিকটিমের স্বজনরা। তখন এ ঘটনা জানাজানি হলে জড়িত থাকার অভিযোগে সহকারি মৌলভি নজরুল ইসলামকে মারধর দিয়ে মাদ্রাসা সুপার মাওঃ শাহাদাৎ হোসেনকে অবরুদ্ধ করে রাখে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসি। 

খবর পেয়ে তৎকালিন দায়িত্বরত সহকারি পুলিশ সুপার রাকিব হাসান, এ্যাসিল্যান্ড সাইয়েমা হাসান (তৎকালিন দায়িত্বরত), ওসি রফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থলে গিয়ে সুপারকে উদ্ধারসহ জড়িত শিক্ষকদের আটকে চিরুনি অভিযান চালান। 

ভিকটিমের পিতা শিক্ষক তরিকুল ইসলাম ও নজরুল ইসলামের নামে থানায় মামলা করেন। ওই বছরের ৬ অক্টোবর ভিকটিম শিক্ষার্থীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্নসহ ২২’ধারায় জবানবন্দী রেকর্ড করা হয়।

পলাতক আসামী ধরতে মরিয়া উঠে থানা পুলিশ। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারসহ পুলিশের ব্যাপক তৎপরতায় ৭ অক্টোবর মাদরাসা শিক্ষক নজরুল ইসলামকে খুলনা জেলার ডুমুরিয়া বাজার থেকে এবং পরদিন ৮ অক্টোবর থানার এসআই জহির রায়হান ও আকিকুর রহমান গোপন সংবাদের ভিত্তিতে যশোর সদর উপজেলার চাঁচড়া এলাকা থেকে তরিকুল ইসলামকে আটক করেন।

এদিকে মামলায় আটক তরিকুল ইসলাম সম্প্রতি জামিনে ছাড়া পেয়ে মামলা থেকে বাঁচতে ওই শিক্ষার্থীকে বিয়ে করতে মরিয়া উঠে। গত ২৫ জুলাই ভূয়া জন্ম সনদে বিয়ে পড়িয়েছেন পৌর নিকাহ্ রেজিস্ট্রার কাজী মাহবুবুর রহমান। 

তিনি জানান, জন্ম সনদে বয়স দেখে বিয়ে পড়ানো হয়েছে। ঝাঁপা ইউনিয়ন পরিষদের সচিব এনামুল হক বলেন, জন্ম সনদ নিতে দুই বার আবেদন করেন ওই শিক্ষার্থীর স্বজনরা। কিন্তু ৫ম  ও ৮ম শ্রেণি পাশের সার্টিফিকেট আনতে বলাই তারা আর আসেনি।

থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, ওই সময় ব্যাপক তৎপরতা চালিয়ে আলোচিত এ ঘটনায় জড়িত শিক্ষককে আটক করা হয়। 
 


   আরও সংবাদ