প্রকাশ: ২৪ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ পূর্বাহ্ন
কূটনৈতিক প্রতিবেদক : পশ্চিম গ্রীসের মানোলাদা নামক স্থানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশী শ্রমিক বসবাস করেন। তারা মূলত গ্রীক কৃষিখামার বিশেষত স্ট্রবেরি এবং তরমুজ খামারে কাজ করেন। এই শ্রমিকদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে উদ্যোগ নিয়েছে গ্রিসে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস এবং গ্রিসের স্থানীয় সরকার।
এ বিষয়ে গতকাল (২৩ জুলাই) গ্রীসে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জসীম উদ্দিন মেয়র ইয়ানিস লেন্তাসের সাথে এক বৈঠকে মিলিত হন।
ভার্দা শহরে অবস্থিত মিউনিসিপালিটি অফিসে এই বৈঠকে তারা বাংলাদেশী শ্রমিকদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সকল বিষয়ে আলোচনা করেন। দুই ঘণ্টা ব্যাপী দীর্ঘ বৈঠকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন, মানোলাদায় বসবাসরত শ্রমিকগণ গ্রীস ও বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছেন। এই করোনাকালীন সংকটের মধ্যেও তারা কঠোর পরিশ্রম করে গ্রীসের কৃষিতে অবদান রাখছেন।
শ্রমিকদের অবদানের কথা স্মরণ করে রাষ্ট্রদূত মেয়রকে তাদের আবাসন, স্বাস্থ্যসহ জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানান। যেসব বাংলাদেশী অনিয়মিতভাবে এখানে বসবাস করছেন, তাদেরকে গ্রীক সরকারের বৈধ ডকুমেন্টস প্রদানে সহায়তার জন্যও তিনি মেয়রকে অনুরোধ করেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এ বিষয়ে মেয়রকে শ্রমিকদের বাসস্থানসহ আবাসনের অন্যান্য দিক নিয়ে বেশ কিছু ছবি দেখিয়ে এ অবস্থার উন্নয়নে স্থানীয় খামার মালিকদের নিয়ে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান।
মেয়র ইয়ানিস বাংলাদেশী প্রবাসী শ্রমিকদের আবাসনের জন্য মিউনিসিপালিটি থেকে জমি দেয়ার আশ্বাস প্রদান করেন। প্রবাসী বাংলাদেশীদের চিত্ত বিনোদনের জন্য বিশেষ পার্ক তৈরি করার কথা বলেন মেয়র। বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের অনুরোধের প্রেক্ষিতে বৈধভাবে বসবাসরত বাংলাদেশী শ্রমিকগণ যেন কৃষিজমি লিজ নিতে পারেন, সে বিষয়ে জটিলতা দূর করতেও মেয়র আশ্বাস দেন।
মানোলাদায় বসবাসকারী প্রবাসী বাংলাদেশীদের জন্য একটি মসজিদ এবং কবরস্থানের ব্যবস্থা করার বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়। মেয়র এ বিষয়ে সকল ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন।
দুই দেশের নাগরিকদের মধ্যে যৌথ ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করে জনগণ পর্যায়ে যোগাযোগ বৃদ্ধি এবং তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব দৃঢ় করার লক্ষ্যে দূতাবাস এবং মিউনিসিপালিটি একযোগে কাজ করতে পারে বলে বৈঠকে আলোচনা হয়। বৈঠকে মেয়র মানোলাদায় বসবাসকারী প্রবাসী শ্রমিক এবং বাংলাদেশী ব্যবসায়ীগণ যেন স্থানীয় আইন মেনে চলেন, সে বিষয়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
রাষ্ট্রদূত এ বিষয়ে প্রবাসীদের সচেতন করতে বিশেষ সচেতনতা কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে মর্মে মেয়রকে অবহিত করেন।
বৈঠকে বাংলাদেশের দূতাবাসের কাউন্সেলর (শ্রম) ড. সৈয়দা ফারহানা নুর চৌধুরী এবং কাউন্সেলর সুজন দেবনাথ এবং মেয়র অফিসের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।