ঢাকা, শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৯ চৈত্র ১৪৩২, ২২ জ্বমাদিউল সানি ১৪৪৭

ডেঙ্গু প্রতিরোধে দুই সিটির কার্যক্রমে হাইকোর্টের অসন্তোষ


প্রকাশ: ১৮ অগাস্ট, ২০১৯ ০০:০০ পূর্বাহ্ন


ডেঙ্গু প্রতিরোধে দুই সিটির কার্যক্রমে হাইকোর্টের অসন্তোষ

ডেঙ্গু প্রতিরোধে দুই সিটি কর্পোরেশনের কার্যক্রম নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেন, দুই সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা যথাসময়ে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেয়নি। এটা নিলে হয়তো এরকম পরিস্থিতি হতো না।

আজ রোববার বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।

এসময় রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল (ডিএজি) ব্যারিস্টার এবিএম আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুল আলম।

আদালত বলেন, যাদের সঠিকভাবে বিষয়টি তদারকি করার দায়িত্ব ছিল তারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেননি। তাদের মানসিকতা ও দক্ষতার অভাব রয়েছে।

শুনানিকালে আদালত রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে কতজন মারা গেছে তা নিয়ে পত্রপত্রিকায় দুইরকম তথ্য দেখছি। সরকারি হিসাবে বলা হচ্ছে ৪৮ জন। কিন্তু বেসরকারি হিসাবে বলা হচ্ছে ৭২ জন। এটা নিয়ে দুইরকম তথ্য কেন? জবাবে ডিএজি বলেন, সরকারি হিসেবে ৪৮ জন। যারা ডেঙ্গুতে মারা গেছেন তাদের কারো কারো অন্য রোগ থাকতে পারে। কারো হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। তাই এটা পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিষয়।

এসময় আদালত বলেন, ধরে নিচ্ছি, ৪৮ জনই মারা গেছে। যারা মারা গেছে তাদের পরিবারের কি অবস্থা তা একবার ভেবে দেখুন। ডেঙ্গু এখন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ছে। যথাসময়ে যদি প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেওয়া হতো তাহলে হয়তো এত লোককে মরতে হতো না।

সিটি কর্পোরেশনের কার্যক্রম নিয়েআদালত বলেন, গত ফেব্রুয়ারিতে আমরা সতর্ক করেছিলাম। দুই সিটির সচিবকে ব্যবস্থা নিতে বলেছিলাম। কিন্তু আমাদের আদেশের পর দুই সিটির কর্তা ব্যক্তিদের কাছ থেকে যে ধরণের কথাবার্তা শুনলাম তা কারো কাম্য নয়।

আদালত বলেন, ডেঙ্গু মশার লার্ভা ও ডিম থাকে পানিতে। উনারা সেটা পরিষ্কার না করে রাস্তায় ময়লা ফেলে পরিষ্কার করলেন। এটা নেহায়েতই হাস্যকর।

কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই বছরের পর বছর একই ওষুধ ছেটানো হচ্ছে। অথচ ওই ওষুধে কাজ হচ্ছে না। একটি ওষুধ বারবার ব্যবহার করলে তা সহনীয় হয়ে যায়। এটা বুঝতে হবে। দেখুন না, এখন অ্যারোসল আর ঠিকমতো কাজ করে না। এসময় একজন আইনজীবী বলেন, অ্যারোসলে মশা মরে না।

আদালত বলেন, নিজেরা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করে জনগণের ওপর দায় চাপানো হচ্ছে। জনগণকে তাদের ঘরবাড়ি পরিস্কার করতে বলা হচ্ছে। আদালত বলেন, সত্যিকারে যেখানে এডিস মশা থাকে সেখানে ওষুধ ছেটালেইতো হয়। জনগণকে সচেতন হতে হবে-এটা ঠিক। কিন্তু সব দায় জনগণের- এমনটা ভাবার কোনো সুযোগ নেই।

এর আগে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করতে গেলে আদালত বলেন, আমরাতো কোনো রুল জারি করিনি। আরেকটি আদালত রুল দিয়েছে। সেখানে রিপোর্ট দিন। এসময় ডিএজি বলেন, এই আদালত মৌখিকভাবে এক আদেশে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ জানতে চেয়েছিলেন। তাই সরকার বিষয়টি জানিয়েছে।


   আরও সংবাদ