প্রকাশ: ১৮ অগাস্ট, ২০১৯ ০০:০০ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার : নাগরিকত্ব, সংগঠিত নির্যাতনের বিচার, নিজ গ্রামে বসবাসের অনুমতি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে মিয়ানমারে ফেরত যেতে চান না রোহিঙ্গারা।
রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের ঘটনা তদন্তে মিয়ানমারের একটি দল ঢাকায় অবস্থান করছে। আর ২২ আগস্ট আন্তর্জাতিক একটি সংবাদ সংস্থা রয়টার্সে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হতে পারে বলে প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ায় আবারও নড়াচড়া শুরু হয়েছে রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে।
আন্তর্জাতিক মহলের চাপে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে চুক্তি সাক্ষর করে মিয়ানমার- বাংলাদেশ। এ চুক্তি অনুযায়ী গতবছর ১৫ নভেম্বর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমার তারিখ নির্ধারণ করলেও শেষ সময়ে এসে বেঁকে বসে রোহিঙ্গারা।
নিরাপত্তাহীনতার উদ্বেগ, সংঘটিত হত্যাকান্ডসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের কোনও প্রতিশ্রুতি না থাকা, নিজ গ্রামে ফিরে যেতে না দিয়ে বদ্ধ শিবিরে আটকে রাখার আশঙ্কা, নাগরিকত্ব না দেওয়া ইত্যাদি কারণে মিয়ানমারে ফিরে যেতে চাননি উদ্বাস্তু রোহিঙ্গারা। এ কারণে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াও শুরু করা যায়নি।
এদিকে রোহিঙ্গাদের নিয়ে কাজ করা ব্র্যাকের এক কর্মকর্তা জান্নাত ইলা জানিয়েছেন সম্প্রতি রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে প্রত্যাবসন নিয়ে ফিসফাস শুরু হয়েছে। যেহেতু সরকারীভাবে কোনো ঘোষণা আসে নি তাই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াটি সবার কাছে অনিশ্চিত।
তিনি বলেন, নতুন করে অবশ্য প্রত্যাবাসন নিয়ে কাজ করা লোকজনকে বেশি বেশি যাওয়া আসা করতে দেখা যাচ্ছে শিবিরগুলোতে।
ইউনিসেফের এক কর্মকর্তা শামীম আহমেদ বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য গতবছর তৈরি করা নাফ নদীর সীমান্তে অবস্থিত কেরণতলী ঘাটটিতে অবশ্য সংস্কারের কাজ চলছে। তবে কোনো সংস্থার কাছেই নিশ্চিত খবর নেই।
অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের মত তারাও ফিসফাস শুনছেন। তবে এখনও জানেন না, কীভাবে কোন কোন শর্তে তাদের স্বদেশে ফিরিয়ে নিতে চায় মিয়ানমার।
বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশন (আরআরআরসি)। এই কমিশনের কমিশনার মোহাম্মদ আবুল কালাম বলেন, সরকার চেষ্টা করেই যাচ্ছে। তবে ঠিক কোন সময় প্রত্যাবাসন শুরু হবে সে বিষয়টি তারাও নিশ্চিত জানে না।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশন (ইউএনএইচসিআর) আরআরআরসি-এর পাশাপাশি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়টি দেখভাল করছে। এজন্য দেশে ফিরতে ইচ্ছুক রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রতিবেদন তৈরি করে সরকারের কাছে জমা দেওয়ার কথা রয়েছে তাদের। তবে বিষয়টি নিয়ে সংস্থাটির কোনও কর্মকর্তা কথা বলতে রাজি হননি।