ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ৪ বৈশাখ ১৪৩২, ২৭ জ্বমাদিউল সানি ১৪৪৭

এক নজরে ঢাকা সিটি নির্বাচন


প্রকাশ: ৩১ জানুয়ারী, ২০২০ ০০:০০ পূর্বাহ্ন


এক নজরে ঢাকা সিটি নির্বাচন

 

নিউজ ডেস্কঃ জলজট, ধুলি-দূষণের ঢাকা মহানগরে পাঁচ বছর পর মেয়র নির্বাচনে ভোট দিতে চলেছেন নগরবাসী, এমন এক সময়ে এই ভোট হচ্ছে যখন প্রাণঘাতী ডেঙ্গু রোগের দুঃসহ অভিজ্ঞতার ছয় মাসও পার হয়নি।

মশাবাহিত এই রোগে এ বছর আক্রান্তের সংখ্যা লক্ষাধিক, যা গত দুই দশকে মোট আক্রান্তের চেয়ে বেশি। সরকারি হিসাবে এই রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন দেড় শতাধিক মানুষ, যদি সারা দেশের হাসপাতাল ও চিকিৎসকদের কাছ থেকে আরও অনেকের  মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

ডেঙ্গুর ভয়াবহ বিস্তারের বছর পেরিয়ে এই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ঢাকার দুই মেয়র প্রার্থীর মধ্যে একজন নতুন এসেছেন। ঢাকা দক্ষিণ সিটি মেয়র সাঈদ খোকনকে রেখে এবার মেয়র প্রার্থী করা হয়েছে ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, যিনি ভবিষ্যৎ উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশের রাজধানীকেও সেইভাবে সাজাতে কাজ করার অঙ্গীকার করেছেন।

এই সিটি করপোরেশনে পরিবর্তন এসেছে আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপির প্রার্থীর ক্ষেত্রে। পাঁচ বছর আগে ভোটের দিন মাঝপথে নির্বাচন বর্জন করে পরাজিত মির্জা আব্বাসের জায়গায় এবার প্রার্থী করা হয়েছে তরুণ ইশরাক হোসেনকে। অবিভক্ত ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাক পুরান ঢাকার ঐতিহ্য সমুন্নত রেখে উন্নয়নের অঙ্গীকার করেছেন। 

এই সিটি করপোরেশন আলোচিত মেয়র প্রার্থী আছেন আরেকজন, জাতীয় পার্টির সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন।

পাঁচ বছর আগের ভোটে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে লড়ে মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন প্রয়াত পোশাক ব্যবসায়ী আনিসুল হক। এবার সেখানে নৌকার প্রার্থী আতিকুল ইসলামও পোশাক ব্যবসায়ী। আনিসুল হকের মৃত্যুর পর গত বছর অনুষ্ঠিত উপ-নির্বাচনে জয়ী হয়ে নয় মাস মেয়রের দায়িত্ব পালন করা আতিক এবারই প্রথম সব দলের অংশগ্রহণে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ভোটে লড়ছেন।

এই সিটি করপোরেশনে বিএনপির প্রার্থী তাবিথ আউয়াল পাঁচ বছর আগের ওই নির্বাচনেও লড়েছিলেন। সেবার ভোট শুরুর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেওয়া তাবিথ এবার শেষ পর্যন্ত লড়াইয়ে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন। মেয়র নির্বাচিত হলে সিটি করপোরেশনে দুর্নীতি রোধ করে নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।

ঢাকা উত্তরে মেয়র পদে লড়ছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবির প্রার্থী আহাম্মদ সাজেদুল হক রুবেল। পেশায় দন্ত্যচিকিৎসক রুবেল মেয়র নির্বাচিত হলে অনিয়ম-দুর্নীতি দমন করে সিটি করপোরেশন ভবন থেকে ‘পর্দা সরিয়ে’ নাগরিক সেবা নিশ্চিতে কাজ করার অঙ্গীকার করেছেন। এতদিন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মেয়ররা যেসব জায়গায় ব্যর্থ হয়েছেন, সেগুলো তুলে ধরে তাকে একবার ওই চেয়ারে বসিয়ে পরীক্ষা নিতে ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।   

এই দুই সিটি করপোরেশনে দুইজন মেয়র এবং ১৭২ জন (সাধারণ ও সংরক্ষিত মিলিয়ে) কাউন্সিলর বেছে নিতে শনিবার ভোট দেবেন প্রায় অর্ধকোটি ভোটার।
 

দুই  সিটি করপোরেশনে ২ হাজার ৪৬৮টি ভোট কেন্দ্রের ১৪ হাজার ৪৩৪টি ভোটকক্ষে সকাল ৮টা থেকে ভোট শুরু হয়ে বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলবে।

প্রথমবারের মতো দুই সিটিতেই একযোগে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট হচ্ছে।

দুই সিটি করপোরেশনের ভোটার রয়েছেন ৫৪ লাখ ৬৩ হাজার ৪৬৭ জন, প্রার্থী রয়েছেন সাড়ে সাতশ।

উত্তরে সাধারণ ওয়ার্ড ৫৪টি, সংরক্ষিত ওয়ার্ড ১৮টি এবং দক্ষিণে সাধারণ ওয়ার্ড ৭৫টি, সংরক্ষিত ওয়ার্ড রয়েছে ২৫টি।

সর্বশেষ ঢাকার দুই ভাগে ভোট হয়েছিল ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল। ২০১১ সালের ৩০ নভেম্বর ঢাকাকে উত্তর ও দক্ষিণে ভাগের পর এটাই দ্বিতীয় নির্বাচন।  এর আগে একক সিটি করপোরেশন হিসেবে ঢাকা মহানগরে নির্বাচন হয়েছিল ২০০২ সালে।


   আরও সংবাদ