প্রকাশ: ৩১ জানুয়ারী, ২০২০ ০০:০০ পূর্বাহ্ন
নিউজ ডেস্কঃ ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি-ডিএসসিসি) নির্বাচনে জিততে শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবে বিএনপি। দলটির বিশ্বাস, ধানের শীষের পক্ষে গণজোয়ার উঠেছে। তাদের নেতারা বলছেন, নির্বাচনে ‘ভোটচুরি’ ঠেকাতে পারলে বিএনপির মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের জয় নিশ্চিত। এক্ষেত্রে তাদের বড় দুশ্চিন্তা ইভিএম।
বিএনপির নেতারা মনে করছেন, ইভিএম (ইলেকট্রিক ভোটিং মেশিন) ভোটচুরি’ তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিহত করা না গেলে পরে প্রমাণ করার কোনো সুযোগ নেই। তাই ভোটের দিন সতর্ক থেকে ‘ভোটচুরি’ ঠেকানোই মূল চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে দলটি।
দলীয় সূত্র জানায়, ইভিএমে ‘ভোটচুরি’ ঠেকাতে বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছে বিএনপি। এজন্য দফায় দফায় বৈঠক করেছেন দুই সিটির নির্বাচনের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। দুই সিটিকে ছয়টি ইউনিটে ভাগ করে একজন সিনিয়র নেতার সমন্বয়ে ছয়জন করে নেতাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
এছাড়া প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিএনপির পাশাপাশি যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দলের কেন্দ্রীয় ও থানা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা থাকছেন এসব কমিটিতে। এছাড়া দুই সিটির জন্য নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয় এবং গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে থাকবে দুটি নির্বাচনী মনিটরিং সেল।
বিএনপি নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভোটের দিন এসব কমিটির সদস্যরা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিয়ে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে পাহারায় থাকবেন। ভোটারদের ভোট দেয়া নিশ্চিত করাসহ পরিস্থিতি নির্বিঘ্ন রাখতে নেতাকর্মী ও ভোটারদের সঙ্গে নিয়ে ভোর থেকে ফলাফল ঘোষণা পর্যন্ত কেন্দ্র পাহারা দেবেন এসব কমিটির সদস্যরা।
এ সময় কেন্দ্র দখল বা ‘ভোট কারচুরির’ ঘটনা ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে তারা কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেলে অবহিত করবেন। উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় তাৎক্ষণিক করণীয় সম্পর্কে তাদের পরামর্শ দেবেন কেন্দ্রীয় সেলের নেতারা।
জানা গেছে, নির্বাচন কাজে দায়িত্বপ্রাপ্তদের সমন্বয়ে ভোটের দিন প্রতিটি কেন্দ্র পাহারায় ত্যাগী ও সাহসী নেতাকর্মীদের নিয়ে কমিটি করা হয়েছে। এছাড়া ভোটকেন্দ্রের ভেতরে যারা পোলিং এজেন্ট থাকবেন, তাদের ডিজিটাল ভোট ‘কারচুপি’ কঠোরভাবে ঠেকাতে বিভিন্ন কলাকৌশল ইতোমধ্যে শেখানো হয়েছে। এ কাজে আইটিতে পারদর্শী বিএনপি এবং এর অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা সহায়তা করেছেন সংশ্লিষ্টদের।
প্রশিক্ষক নেতারা জানান, প্রতিটি কেন্দ্রে দুই সেট করে পোলিং এজেন্টকে ভোট জালিয়াতির আটটি উপায় চিহ্নিত এবং তা প্রতিরোধে ১০ দফা নির্দেশনাসহ প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। ভুয়া পুলিশ ও ভুয়া ভোটার, গণনা ও ফল ঘোষণা সম্পর্কে সচেতন করা হয়েছে প্রশিক্ষণে। এজেন্টদের ক্ষমতা ও দায়িত্ব সম্পর্কেও সচেতন করা হয়েছে।
এছাড়া নির্বাচন চলার সময় ভোটকেন্দ্রে কোনো ধরনের অনিয়ম, কারচুপি বা জালিয়াতির ঘটনা ঘটলে তাৎক্ষণিকভাবে সুনির্দিষ্ট করে তা লিখিত আকারে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জানানো, কেন্দ্রর বাইরে নজর রাখা, কাউকে অপরিচিত মনে হলে চ্যালেঞ্জ করা, কেন্দ্রের ভেতরে ঘটা ঘটনাপঞ্জির রেকর্ড রাখা, এজেন্টদের জাল ভোট শনাক্ত করে তার সংখ্যা, ভোটের ফলাফলে প্রাপ্ত ভোটের চূড়ান্ত হিসাব রাখাসহ নানা বিষয় হাতে-কলমে শেখানো হয়।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সুষ্ঠু ভোট হলে ধানের শীষের বিজয় সুনিশ্চিত। তাই যেন ভোটকেন্দ্র দখল বা নির্বাচনে কারচুপি করতে না পারে, সে ব্যাপারে আমরা সতর্ক আছি। ভোটের দিন কারচুপি ঠেকাতে যা যা করণীয় আমরা করব।
আগামী শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) ডিএনসিসি ও ডিএসসিসিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ডিএনসিসিতে বিএনপির মেয়র প্রার্থী হয়েছেন তাবিথ আউয়াল, আর ডিএসসিসিতে এ পদে দলটির সমর্থনে দাঁড়িয়েছেন প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন।