প্রকাশ: ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ পূর্বাহ্ন
যশোর প্রতিনিধি : অবশেষে যশোরের চৌগাছার নিরপরাধ আব্দুল আজিজ কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তিনি মুক্তি পান।
এর আগে চৌগাছা থানা থেকে পুলিশ প্রতিবেদন ও সিংহঝুলি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইব্রাহিম খলিল বাদল প্রতিবেদন দাখিল করেন যে,আটক আব্দুল আজিজ এসটিসি ৬১/১২ মামলার আসামী নয়। প্রকৃত আসামী আব্দুল আজিজ প্রবাসে আছেন।
আদালত প্রতিবেদন পাওয়ার পর আটক আব্দুল আজিজকে আজ মঙ্গলবার যশোরের মাননীয় চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাহাদৎ হুসাইন এর আদালতে উঠানো হয়। সেখানে আদালত আব্দুল আজিজের সাথে কথা বলে তার নাম, ঠিকানা, পেশাসহ অন্যান্য বিষয়ে খোঁজ খবর নেন। পরবর্তীতে আদালত এমিকাস কিউরি হিসেবে যশোর আইনজীবি সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহানুর আলম শাহিনের মতামত গ্রহণ করেন।
তিনি সংশ্লিষ্ট মামলার আসল আসামী আব্দুল আজিজেরও আইনজীবি। অ্যাডভোকেট শাহিন আদালতকে নিশ্চিত করেন আটক আব্দুল আজিজ ঐ মামলার আসামী নয়। সকল নথিপত্র যাচাইবাছাই করে মাননীয় আদালত পুলিশের ভুলে আটক আব্দুল আজিজকে মুক্তির আদেশ দেন।
আদালতের আদেশ কারাগারে পৌঁছানোর পর কারাকতৃপক্ষ সন্ধ্যায় আব্দুল আজিজকে মুক্তি দেন।অ্যাডভোকেট শাহিন ও আব্দুল আজিজের ভাইপো রাজু তার মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ঘটনার বিবরণে জানাযায় গত ৯ ডিসেম্বর যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার এক ডাকাতি মামলার প্রকৃত আসামি আহাদ আলী কারিগরের ছেলে আব্দুল আজিজের বদলে আহাদ আলী দফাদারের ছেলে আব্দুল আজিজকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায় পুলিশ। আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। তখন থেকে নিরপরাধ আজিজ কারাগারে রয়েছেন। এই বিষয়ে বিভিন্ন গনমাধ্যমে রিপোর্ট প্রকাশিত হলে টনক নড়ে পুলিশের।
২০০৯ সালের ২২ অক্টোবর যশোরের বাঘারপাড়ার নারিকেলবাড়িয়া গ্রামে নবকুমার সাহার বাড়িতে ডাকাতি হয়। ওই ঘটনায় নবকুমারের অজ্ঞাত আসামিদের নামে করা মামলায় ২০১১ সালের ৩০ মার্চ অভিযোগপত্র দেন তদন্ত কর্মকর্তা এসআই গাজী আব্দুল কাইয়ুম। সেখানে সাত নম্বর আসামি চৌগাছা উপজেলার সিংহঝুলি গ্রামের আহাদ আলী কারিগরের ছেলে আব্দুল আজিজ।
এ মামালার প্রকৃত আসামি আজিজ ২০১২ সালের ৫ মার্চ জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর নিয়মিত আদালতে হাজিরা দিতে থাকেন। তবে বছর দেড়েক আগে বিদেশ চলে যান তিনি। গরহাজির থাকায় গত ৭ নভেম্বর আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন জেলা জজ আদালত।
পরোয়ানা অনুযায়ী চৌগাছা থানার এএসআই আজাদ এক আজিজকে গ্রেফতার করতে গিয়ে আরেক আজিজকে ধরেন।
এদিকে জজ আদালত অবকাশকালীন বন্ধ থাকায় পুলিশ ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আব্দুল আজিজকে হাজির করে। ওই আদালত কারাগারে পাঠালে নিরপরাধ আব্দুল আজিজের কারাবাস শুরু হয়।