ঢাকা, সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৪ চৈত্র ১৪৩২, ১৭ জ্বমাদিউল সানি ১৪৪৭

খতনার সময় নড়াচড়া করায় শিশুকে ডাক্তারের চড়-থাপ্পড়


প্রকাশ: ৪ জুন, ২০১৯ ০০:০০ পূর্বাহ্ন


খতনার সময় নড়াচড়া করায় শিশুকে ডাক্তারের চড়-থাপ্পড়

অনলাইন ডেস্ক:খতনা করার সময় ব্যথায় নড়াচড়া ও কান্নাকাটি করায় বগুড়ায় মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে (ওটি) আয়মান আশরাফ (৫) নামে নার্সারি শ্রেণির এক শিশুকে চড়-থাপ্পড় ও নখের আঁচড়ে জখম করেছেন চিকিৎসক। কর্তব্যরত ওই চিকিৎসকের নাম নজরুল ইসলাম ফারুক।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, শনিবার (১ জুন) সকালে ওটিতে এ ঘটনার পর থেকে আয়মান আশরাফ আতঙ্কে রয়েছে। পরিবারের বাইরের কোনও মানুষ দেখলে সে ভয়ে আঁতকে উঠছে। রাতে ঘুমাতে পারছে না।

আয়মান আশরাফ নামে ওই শিশুটির বাবা ব্র্যাক ব্যাংকের ঢাকা প্রধান কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক আশরাফুল ইসলাম মুরাদের শ্বশুরবাড়ি বগুড়া শহরের মালতিনগর এলাকায়। স্ত্রী মাসুমা রহমান মিশুসহ সপরিবারে ঈদের ছুটিতে বগুড়ায় গিয়ে আয়মানকে খতনা করার উদ্যোগ নেন তারা। কিছুদিন আগে মিশু তার খালা সিনিয়র স্টাফ নার্স শাহানা পারভিন বকুলের মাধ্যমে আয়মানকে মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের রেজিস্ট্রার নজরুল ইসলাম ফারুককে দেখান এবং শনিবার সকালে খতনা করার সময় নিধারণ করেন। সকাল ১১টার দিকে আয়মানকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। এ সময় সেখানে অপরাজিতা নামে ঢাকার ইব্রাহিম মেডিক্যাল কলেজের এক ছাত্রী, নার্স বকুল ও অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

ওটিতে লোকাল অ্যানেসথেসিয়া দেওয়ার পর ডা. ফারুক অপারেশন শুরু করেন। কিন্তু ঠিকমতো অবশ না হওয়ায় আয়মান কান্নাকাটি ও নড়াচড়া শুরু করে। এ সময় ডা. ফারুক রেগে গিয়ে শিশুটির গালে ছয় থেকে সাতটি চড়-থাপ্পড় দেয় এবং তার উরুতে নখের আঁচড় দেন। সেখানে থাকা নার্সরা অনুরোধ করেও ওই চিকিৎসককে শান্ত করতে পারেননি উল্টো ডা. ফারুক নার্স ও অন্যদের ওটি থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। পরে আবারও লোকাল অ্যানেসথেসিয়া দেওয়ার পর শিশু আয়মানের খতনা করানো হয়।

অপারেশন থিয়েটার থেকে বের হওয়ার পর শিশু আয়মান বাবা-মাকে জানায়, ‘আর কখনও ওই ডাক্তারের কাছে যাবো না, ডাক্তার মারে’।

শিশুটির বাবা আশরাফুল ইসলাম মুরাদ ওই চিকিৎসকের বিচার চেয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. এটিএম নুরুজ্জামান ও আরএমও ডা. শফিক আমিন কাজলের কাছে অভিযোগ করেন এবং এ ব্যাপারে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া না হলে তিনি ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।

রবিবার (২ জুন) দুপুরে ঘটনাটি ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর অনেকের মাঝে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়।

অভিযুক্ত চিকিৎসক নজরুল ইসলাম ফারুকের মোবাইল ফোন বন্ধ ও হাসপাতালে না থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

হাসপাতালের আরএমও ডা. শফিক আমিন কাজল বলেন, ‘এ ঘটনায় আমরা খুবই বিব্রত। আমি ও তত্ত্বাবধায়ক তাকে ডেকে সাবধান এবং শিশুর পরিবারের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছি।’


   আরও সংবাদ