ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২ বৈশাখ ১৪৩২, ২৫ জ্বমাদিউল সানি ১৪৪৭

শিল্পকলায় আসছে জবি নাট্যকলার বিখ্যাত নাটক 'ডিজায়ার আন্ডার দ্য এলম্‌স'


প্রকাশ: ২৪ অক্টোবর, ২০২৫ ০১:৫২ পূর্বাহ্ন


শিল্পকলায় আসছে জবি নাট্যকলার বিখ্যাত নাটক 'ডিজায়ার আন্ডার দ্য এলম্‌স'

জবি প্রতিনিধি : বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে আসছে সাহিত্যে নোবেল প্রাপ্ত মার্কিন নাট্যকার ইউজীন ও নীলের রচিত বিখ্যাত নাটক 'ডিজায়ার আন্ডার দ্য এলম্‌স'। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের প্রযোজনায় নাটকটি অভিনীত হবে।

আগামীকাল শনিবার (২৫ অক্টোবর) ও পরদিন রোববার টিকিটের বিনিময়ে সন্ধ্যা ৭ টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে দুইদিন ব্যাপী প্রদর্শনী হবে নাটকটির। নাটকটি অনুবাদ করেছেন কবীর চৌধুরী। পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় রয়েছেন নাট্যকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রুবাইয়া জাবীন প্রিয়তা। 

নাটকের বিখ্যাত এফরায়েম ক্যাবট চরিত্রে অভিনয় করা শিক্ষার্থী তাকরিম আহমেদ বলেন, চরিত্রটি আমার কাছে সাধারণ কোনো চরিত্র নয়। বরং এক প্রজন্মের প্রতীক। মঞ্চে তার নিঃসঙ্গতা অনুভব করা সহজ ছিল না।

জমি মানেই তার জীবন, কিন্তু সেই বিশ্বাসই শেষ পর্যন্ত তার কবর। বাইরে দৃঢ়, ভেতরে অসহায়, এই দ্বৈততাই নাটকের ব্যথা। ক্যাবটের মতো মানুষ আজও আছে, যারা ভালোবাসতে চায় কিন্তু তা প্রকাশ করতে পারে না। আশা করি নাটকটি সবার ভালো লাগবে।

অ্যাবেন চরিত্রে অভিনয় করা মনন মোস্তাকিন বলেন, অ্যাবেন এমন এক ছেলে, যে ছোটবেলা থেকে মায়ের স্নেহ পায়নি। আর বাবার ওপর প্রচণ্ড রাগ জমে আছে। সেই রাগ আর ভালোবাসা দুইটাই তার মধ্যে লড়াই করে। এই দোটানার জায়গাটা মঞ্চে প্রকাশ করতে চেষ্টা করেছি। 

অ্যাবি চরিত্রে অভিনয় করা শিক্ষার্থী রোকসানা আক্তার সায়মা বলেন, অ্যাবি আসলে ভালোবাসা পেতে চায়। কিন্তু সমাজ তাকে সেই সুযোগ দেয় না। তাই সে যেমন ভালোবাসে, তেমন ভয়ও পায়। তার ভেতরে দোষ আর মায়া একসাথে কাজ করে। আমি অভিনয়ের সময় চেষ্টা করেছি যেন দর্শক ওর কষ্টটা বুঝতে পারে। অত্যন্ত সুন্দর ও বিখ্যাত এ নাটকটি দেখতে চলে আসুন শিল্পকলা একাডেমিতে।

নাটকটির নির্দেশক জবি নাট্যকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রুবাইয়া জাবীন প্রিয়তা বলেন, নোবেলজয়ী বিখ্যাত নাট্যকার ইউজিন ও নীল-এর  এ নাটকটি শুধু এক পারিবারিক সংঘাতের গল্প নয়। এটি মানুষের গভীরতম আকাঙ্ক্ষা, অপরাধবোধ ও মুক্তির তীব্র অনুসন্ধানের নাটক। এই নাটকে যে মানুষদের দেখি— তারা সবাই ভালোবাসা খোঁজে। কিন্তু তাদের ভালোবাসা মিশে থাকে অধিকার, ঈর্ষা ও দোষবোধের সঙ্গে। সেই মিশ্র অনুভূতিই এই নাটকের মূলে থাকা “ইচ্ছা” বা 'ডিজায়ার'-কে জটিল করে তোলে। এই নাটকের পটভূমি সম্পূর্ণ আমেরিকান। 

তিনি আরো বলেন, এই প্রযোজনার মাধ্যমে আমি দর্শকদের সামনে একটি আবেদন রাখতে চেয়েছি- মানুষ কি কখনো তার ইচ্ছার উর্ধ্বে উঠতে পারে? নাকি প্রতিটি ইচ্ছাই শেষ পর্যন্ত তাকে তার নিজের তৈরি কারাগারে বন্দি করে ফেলে? আমার অভিনেতারা, আলো-সঙ্গীত-ডিজাইনের সহকর্মীরা—সবাই এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে একসঙ্গে ভ্রমণ শুরু করেছে। এই ভ্রমণই আমাদের আসল প্রাপ্তি। দর্শক যদি সেই ভ্রমণে সামান্য সময়ের জন্যও আমাদের সঙ্গে অংশ নেন, তবেই আমাদের প্রয়াস সার্থক হবে।

এছাড়া নাটকে অভিনয় করেছেন নাট্যকলা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তাকরিম, মোস্তাকিন, সায়মা, শোভন, খুশি, মিঠুন, জ্যা চাকমা, অর্থি, পলক, রিভা, ইসরাত, সুরুজ ও তুলি। আবহ সঙ্গীতে আছেন নওমী, শোভন, পলক ও সুরুজ।

মঞ্চ নির্মাণে নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী স্পর্শ ও টনি। আলোক প্রক্ষেপণে আছেন খন্দকার রাকিবুল হক এবং রাজিন। নাটকের পোস্টার বানিয়েছেন সাদিয়া নিশা এবং প্রকাশনায় ছিলেন মুগ্ধ আনন।


   আরও সংবাদ