ঢাকা, সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩ চৈত্র ১৪৩২, ১৭ জ্বমাদিউল সানি ১৪৪৭

কোন অবস্থাতেই ফসলি জমি নষ্ট করা যাবে না: কৃষি উপদেষ্টা


প্রকাশ: ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ০২:৪৮ পূর্বাহ্ন


কোন অবস্থাতেই ফসলি জমি নষ্ট করা যাবে না: কৃষি উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক: কৃষি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, কোন অবস্থাতেই ফসলি জমি নষ্ট করা যাবে না। দুই ও তিন ফসলি জমিতে কোন স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না। কৃষি জমি সংরক্ষণে কঠোর বিধান রেখে ভূমি ব্যবহার ও কৃষি ভূমি সুরক্ষা অধ্যাদেশ প্রণয়ণের কাজ চলছে।

আজ বৃহস্পতিবার কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে বিগত এক বছরে মন্ত্রণালয়ের সাফল্য, অর্জন ও সার্বিক অগ্রগতি সম্পর্কে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, গত এক বছরে ৮৮ লাখ ৫৫ হাজার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে সার, বীজ ও চারা এবং অন্যান্য সহায়তা বাবদ ৮৯৩ কোটি ২০ লাখ কোটি টাকা প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। রাশিয়া থেকে বিনামূল্যে ৩০ হাজার মেট্রিক টন সার প্রাপ্তির কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। সার আমদানীর সিন্ডিকেট ভেঙে দেয়ায় সরকারের ২৩৩ দশমিক ৬১ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে। সার ডিলার নিয়োগ ও সার বিতরণ সংক্রান্ত সমন্বিত নীতিমালা-২০০৯ হালনাগাদ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে এবং পাটকলের অব্যবহৃত গুদামকে সার মজুতের জন্য ব্যবহার করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

উপদেষ্টা আরো বলেন, আন্তর্জাতিক ইসলামিক ট্রেড ফাইন্যান্স কর্পোরেশন বিএডিসিকে সার ক্রয়ে ২০০ মিলিয়ন ইউএস ডলার ঋণ প্রদানে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ইতোমধ্যে ১০০ মিলিয়ন ডলারের ঋণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে । জৈব সারের ব্যবহার বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বালাইনাশক বিধিমালা সংশোধন করা হচ্ছে। গত এক বছরে ২ হাজার ৬৪৬ দশমিক ১১ টাকা ব্যয়ে নয়টি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে এবং তিনটি পরিমার্জন ও দুইটি প্রকল্প বাতিল করা হয়েছে।

শাক-সবজি সংরক্ষণে ১০০টি মিনি কোল্ড স্টোরেজ স্থাপন করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি জানান, পেঁয়াজ ও আলু সংরক্ষণের জন্য এয়ারফ্লো মেশিন ও বিশেষ ঘর নির্মাণ করে দেয়া হচ্ছে। আলুর দাম হিমাগার গেইটে সর্বনিম্ন ২২ টাকা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে এবং কৃষকের কাছ থেকে ৫০ হাজার মেট্রিক টন আলু ক্রয় করা হবে বলে উপদেষ্টা জানান। উপদেষ্টা তার দায়িত্বকালীন সময়ে কৃষিপণ্য রপ্তানি আয় ১০% বৃদ্ধি এবং গাবতলীতে রপ্তানীর জন্য ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট নির্মাণ হচ্ছে বলে জানান।

তিনি বলেন, ফল ও সবজি চাষে উন্নত কৃষি চর্চার (জিএপি) অনুসরণ করা হচ্ছে এবং পনেরটি ফসলের জিএপি প্রোটোকল চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। দেশে উৎপাদিত আঁশ তুলাকে কৃষিপণ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে, যা গেজেটে প্রকাশিত হয়েছে। পরিবেশ রক্ষায় আকাশমণি ও ইউক্যালিপটাসের চারা ধ্বংস করা হয়েছে এবং ৩৩ লাখ দেশীয় জাতের ফলজ ও বনজ গাছ বিনামূল্য বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া, টেকসই, আধুনিক কৃষি ও সবার জন্য পুষ্টিকর খাবার নিশ্চিতে কৃষি উন্নয়ন রূপরেখা পরিকল্পনা ২০২৫-২০৫০ তৈরি করা হচ্ছে।

দেশের প্রতিটি ভূমি মৌজাকে ডাটাবেইজের আওতায় এনে সার, বীজ, বালাইনাশক, সেচ, ফসল বৈচিত্র্য, আবহাওয়া ও রোগ-বালাইসহ কৃষি সংশ্লিষ্ট সকল তথ্য সন্নিবেশিত করে একটি মোবাইল অ্যাপস ‘খামারি’ চালু   এবং কর্মকর্তাদের জন্য ‘খামারি অ্যাপস’ ও ‘ক্রপ জোনিং সিস্টেম’ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। কৃষকের পণ্য ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতকরণে প্রণোদনা হিসেবে কৃষি বিভাগের ট্রাক ও ট্র্যাকিং সিস্টেম ব্যবহারের, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরকে আধুনিকীকরণ এবং আন্তর্জাতিক বাজার গবেষণায় সম্পৃক্তকরণ এবং বীজ ব্যবস্থাপনা অনলাইনভিত্তিক করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে উপদেষ্টা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।


   আরও সংবাদ