প্রকাশ: ৪ অগাস্ট, ২০২৫ ০৮:৩৪ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, এখন শোনা যাচ্ছে একজন মেজর নাকি দেশে বসে ষড়যন্ত্র করছে সরকারের পতনের জন্য। এই সমস্ত চক্রান্ত আমরা বুঝি। এগুলো একটা বানানো নাটক শুরু হয়েছে যাতে নির্বাচনটা পিছানো যায়। যাতে নির্বাচনটা না হয়। তবে একটা কথা মনে রাখতে হবে দেশের মানুষ ১৭ বছর আন্দোলন করেছে ভোটের জন্য। এই নির্বাচন আমরা সরকারের কাছে আমরা আদায় করেই ছাড়ব। সরকারের পিছনে, ভিতর–বাহির যতই ষড়যন্ত্র চলুক কোন ষড়যন্ত্রেই কাজে আসবে না।
আজ সোমবার ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউটে জাতীয়তাবাদী যুবদল জুলাই- আগস্ট গণ-অভ্যুত্থান শোক ও বিজয়ের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ‘ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন ও আমার না বলা কথা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় গণঅভ্যুত্থানে যুবদলের ৭৮ জন শহীদ পরিবারকে সম্মাননা, পুরষ্কার ও আর্থিক অনুদান তুলে দেয়া হয়। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য একটা সুবর্ণ সুযোগ এসেছে। এই সুযোগকে নষ্ট করার জন্য সরকারের মধ্যে আর সরকারের বাহির থেকে বেশ কিছু ষড়যন্ত্র আসছে। কথায় কথায় তারা বিএনপির বিরুদ্ধে কথা বলছে, বিএনপিকে খাটো করে কথা বলছে। তারাই ধরেই নিয়েছে আগামীতে বিএনপি ক্ষমতা আসবে। অথচ আমরা কখনই এ কথা বলি নাই বিএনপি ক্ষমতায় যাচ্ছে। বিএনপির বারবার দেশের মানুষের ভোটের অধিকারের কথা বলছে। সোস্যাল মিডিয়ার ঊদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, যাদের কিছু দিন আগে মুসলমানি হয়েছে তারা বলে, হাসিনা গেছে যে পথে, তারেক যাবে সেই পথে।’
তিনি বলেন, ‘আগামীতে প্রয়োজন পরলে আরও ১৭ বছর আন্দোলন করবো কিন্তু কোন অরাজক পরিস্থিতি কিংবা স্বৈরশাসককে আমরা প্রশয় দিবো না। স্বৈরশাসক বলছি এ কারণে যে কয়েকটা বাচ্চা ছেলে যে কথা বলবে তাই দেশের মানুষ মেনে নিবে। বাকিদের তাদের চাকর বাকর মনে করে, দেশের মানুষকে তারা মানুষ মনে করছে না। দেশের নেতৃবৃন্দকে তারা নেতা মনে করে না। তারা গদির লোভ পেয়ে আর ক্ষমতা ছাড়তে চাচ্ছে না।’
তিনি বলেন, আমরা সবসময় এই সরকারের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছি। আজকে জুলাই সনদসহ বহু কিছুতে বিএনপি ছাড় দিয়েছে। তারপরও অনেকে বলছেন যদি এইটা না হয় তাহলে নির্বাচন হবে না, যদি ঐটা না হয় তাহলে নির্বাচন দেয়ার পরিবেশ থাকবে না। এক ফ্যাসিবাদকে হটিয়ে আরেক ফ্যাসিবাদ চাই না। আমরাও বলছি এক ফ্যাসিবাদ তাড়িয়ে আরেক ফ্যাসিবাদ রাখব না। আপনাদের এসব বক্তব্যে মনে হয়, সরকারের ভিতর থেকে এসব কথা বলা হচ্ছে। আপনাদের বয়স, মেধা আর অভিজ্ঞতায় আমার মনে হয় না এই সমস্ত কথা আপনাদের মগজ থেকে আসছে। এটা অন্যজনের প্ররোচিত কথাবার্তা আপনারা বলছেন।
তিনি বলেন, যদি কেউ মনে করেন জুলাই আগস্টের আন্দোলনে সরকারের পতন হয়েছে তবে এটি ভুল। বিএনপির অনেকেই আছে যাদের কারও মাথায় গুলি লেগেছে, কারও পায়ে লাগছে। সতের বছর কি আমরা আন্দোলন করি নাই। যদি জুলাই আগস্ট না হতো তাহলেও আন্দোলন করে বিএনপি সরকারকে পতন করতো। এর আগে ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশেই সরকারের পতন হয়ে যেত কিন্তু চক্রান্তের কারণে আন্দোলন সফল হয় নাই।
সেদিনের সমাবেশ থেকে যদি ঘোষণা দেয়া সম্ভব হতো তাহলে আর সরকার থাকে না। সেদিন যেভাবে গুলি করেছিল বিএনপির মিছিলে, এতে বিএনপির নেতাকর্মীরা আহত হয়েছিল তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। সেদিন আমরা মঞ্চে গুলির তোড়ে আর গ্যাসের কারণে টিকে থাকতে পারি নাই। তবে শেষ পর্যন্ত মহাসচিবসহ আমরা মঞ্চে ছিলাম। এই আন্দোলন ছিল সরকারের বিরুদ্ধে, গণতন্ত্র আর বাকস্বাধীনতার পক্ষে। আমরা ১৭ বছর পরিশ্রম করে গাছে পানি দিলাম, আপনার ফল খাচ্ছেন। এখন বলছেন বিএনপি নাকি স্বৈরাচার কিন্তু আমরাতো সরকারেই গেলাম না এ পর্যন্ত।