ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ মাঘ ১৪৩১, ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

গুলশানে ‘দীপ্ত শপথ’ গুঁড়িয়ে নিষিদ্ধ হিযবুত তাহরীরের পোস্টার


প্রকাশ: ২৯ অগাস্ট, ২০২৪ ০১:১৫ পূর্বাহ্ন


গুলশানে ‘দীপ্ত শপথ’ গুঁড়িয়ে নিষিদ্ধ হিযবুত তাহরীরের পোস্টার

নিজস্ব প্রতিবেদক: গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় নিহত পুলিশ কর্মকর্তার স্মরণে নির্মিত ভাস্কর্য ‘দীপ্ত শপথ’ গুঁড়িয়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন হিযবুত তাহরীরের পোস্টার লাগানো হয়েছে। কখন বা কে বা কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। গুলশান থানায় এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে দায়িত্বশীল কেউ বক্তব্য দিতেও চাননি।

বাধন মুন্সি নামে একজন নিজের ফেইসবুক পেইজে লিখেন, হোলি আর্টিজানে নিহত পুলিশ অফিসার স্মরণে গুলশানে নির্মিত মনুমেন্ট ভেঙে নিষিদ্ধ ‘জঙ্গি সংগঠন’ হিযবুত তাহরীর তাদের পোস্টার লাগিয়েছে।

সবশেষ মঙ্গলবার রাতে দেখা যায়, ভাস্কর্য ‘দীপ্ত শপথ’ ভাঙচুরের অংশ বিশেষ পড়ে আছে। হিযবুতের পোস্টারও রয়েছে।

২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে একদল উগ্রবাদী সশস্ত্র তরুণ রাজধানীর গুলশান-২ এর ৭৯ নম্বর সড়কের ৫ নম্বরে হোলি আর্টিজান বেকারি নামে একটি রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়া মানুষদের জিম্মি করে।

তখন রোজার মাস। আর ওই বেকারি ছিল বিদেশিদের পছন্দের জায়গা। নিজেদের অবস্থান জানান দিতে ওই রেস্তোরাঁকেই বেছে নেয় জঙ্গিরা। পাঁচ তরুণের ওই দলটি সশস্ত্র অবস্থায় হোলি আর্টিজান বেকারিতে ঢুকে পড়ে। গুলি চালিয়ে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে ১৭ বিদেশি নাগরিকসহ ২০ জনকে হত্যা করে।

নিহতদের মধ্যে নয়জন ইতালির, সাতজন জাপানের, একজন ভারতীয়, দুজন বাংলাদেশি, একজন বাংলাদেশি-আমেরিকান নাগরিক ছিলেন। এর বাইরে হামলা ঠেকাতে গিয়ে নিহত হন দুই পুলিশ কর্মকর্তা। ২০১৮ সালে নিহত পুলিশ কর্মকর্তাদের স্মরণে পুরাতন গুলশান থানার সামনে ‘দীপ্ত শপথ’ নামে একটি ভাস্কর্য উদ্বোধন করেন তৎকালীন ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার।

গত ৫ অগাস্ট প্রবল গণ আন্দোলনে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকেই দেশে ভাস্কর্য গুঁড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা চোখে পড়ছে। সবচেয়ে বেশি ভাঙা হয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি রক্ষায় অনেক ভাস্কর্যও ভেঙে দেওয়া হয়েছে।

সেদিন থেকেই নিষিদ্ধ হিযবুত তাহরীর প্রকাশ্যে মিছিল করা শুরু করেছে। গত ১০ অগাস্ট জুমার নামাজের পর সংগঠনের নেতাকর্মীরা রাজধানীর বায়তুল মোকাররম থেকে মিছিল করে। এরপর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশও করে তারা।

২০০৯ সালের ২২ অক্টোবর আওয়ামী লীগ সরকার হিযবুত তাহরীরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। সে সময় সরকারের তরফে বলা হয়, ‌এ সংগঠনটির কার্যক্রম দেশে জননিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ।

হিযবুত তাহরীর বাংলাদেশে ইসলামি খেলাফত প্রতিষ্ঠার কথা বলে সক্রিয় হয় বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে। বিশ্বের পাশাপাশি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বেশ কিছু দেশেও উগ্রবাদ ছড়ানোর অভিযোগে এই সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।


   আরও সংবাদ