প্রকাশ: ১৭ জুন, ২০২২ ২২:০৬ অপরাহ্ন
নিজম্ব প্রতিবেদক: রাজধানী বাড্ডা থানার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, ঢাকা মহানগর উত্তরের আওয়ামী লীগের সদস্য ও বাড্ডা থানার বেরাইদের সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম কর্তৃক তিতাস গ্যাস সংযোগ দেয়ার নাম করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও ওই এলাকার সাবেক চেয়ারম্যানের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও টাকা ফেরতের দাবি জানিয়েছে ভুক্তভোগীরা।
শনিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচা বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনে (ক্রাব) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে ভুক্তভোগী বিপ্লব।
একটি হিসাবে দেখা গেছে, দীর্ঘ ১২ বছর ধরে বাসাবাড়িতে অবৈধ গ্যাস ব্যবহার করে আসছে এলাকাবাসি। দুই চুলা ৯৭৫ টাকা ধরে এক পরিবার বছরে ১১ হাজার ৭০০টাকা গ্যাস বিল দেননি তিতাসকে। এক বছরে তিন হাজার পরিবার ৩ কোটি ৫১ লাখ টাকা বিল পরিশোধ করেনি এলাকাবাসি। আর ১২ বছরে এলাকাবাসির কাছে ৪২ কোটি ১২ লাখ টাকা বিল পাবে তিতাস।
তাদের অভিযোগ থেকে জানা গেছে, তিন হাজার পরিবারের কাছ থেকে গড়ে ২৫ হাজার টাকা করে বাড্ডা থানার বেরাইদের সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম গ্যাস ডিষ্ট্রিবিউশন ক্যাশ মেমো দিয়ে টাকা প্রায় সাত কোটি টাকা নিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীদের পক্ষে লিখিত বক্তব্যে বিপ্লব বলেন, বাড্ডা থানার বেরাইদ এলাকার বাসিন্দা। বেরাইদ এলাকার প্রায় তিন হাজার মানুষকে তিতাস গ্যাস সংযোগ দেয়ার নামে বেরাইদ এলাকার বাড্ডা থানার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, ঢাকা মহানগর উত্তরের আওয়ামী লীগের সদস্য ও সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ করেন।
তিনি বৈধভাবে গ্যাস সংযোগ দেয়ার কথা বলে অতিরিক্ত পাইপ সংযোগ করে অবৈধভাবে প্রায় তিন হাজার পরিবারকে গ্যাস লাইন সংযোগ দেন। গ্যাস সংযোগ দেয়ার সময় প্রত্যেক পরিবারের কাছ থেকে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা করে নিয়েছেন। সেই সময় চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় জাহাঙ্গীর আলমের লোক তাজম আলীর মাধ্যমে প্রত্যেককে রশিদ দিয়ে টাকা নিয়েছেন।
তিনি বলেন, যখন আমরা জানতে পারলাম আমাদের তিতাস গ্যাসের লাইন সংযোগ অবৈধ, তখন জাহাঙ্গীর আলমের কাছে জানতে চেয়েছিলাম কেন অবৈধ গ্যাস লাইন দেয়া হলো। তখন সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম আমাদের বলেছেন অবৈধ গ্যাস লাইন বৈধ করে দেয়া হবে। তিনি গ্যাস লাইন বৈধ করে না দেয়ার কারণে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ আমাদের গ্যাস লাইন বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এতে করে আমরা এলাকাবাসী বিপাকে পরেছি।
গ্যাস লাইন সংযোগ দেয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, দুর্নীতিবাজ সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। এছাড়া আমাদের কাছ থেকে নেয়া টাকা ফেরত দেয়ার দাবী জানাচ্ছি। সরকারের কাছে আকুল আবেদন প্রায় তিন হাজার পরিবারকে বৈধভাবে গ্যাস লাইন সংযোগ দেয়ার বিনিতভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি।
গণমাধ্যমের করা এক প্রশ্নের জবাবে বিপ্লব বলেন, গত ১২ বছর আগে ২৫-৩০ হাজার টাকা দিয়ে গ্যাসের সংযোগ নেন তারা। তবে এসময়ের মধ্যে একটি টাকাও বিল দেননি তারা। চলতি মাসের ৫ জুন পর্যন্ত তারা এই গ্যাস ব্যবহার করে এসেছেন।
গ্যাসের বিল পরিশোধ না করে চালিয়েছে এলাকাবাসি। এত বছর আপনাদের কাছে গ্যাসের বিল জন্য কতৃপক্ষ আসল না। কিন্তু এ নিয়ে কোনো খোঁজ নিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে এ বিষয়ে আর কোনো কথা বলতে রাজি হননি বিপ্লব। তবে চলতি মাসে গ্যাসের লাইন তিতাস কতৃপক্ষ কেটে দিলে তারা এটা নিয়ে নড়েচড়ে বসে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত বাড্ডা থানার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বাড্ডা থানার বেরাইদের সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম ঢাকাটাইমসকে বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় আমাকে হেও করার জন্য এসব করছে ঢাকা-১১ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্যের লোকজন। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দিয়েছে বিপ্লব এমপির কোম্পানিতে চাকুরি করে। এছাড়া সংবাদ সম্মেলনে কথা বলা বিপ্লবদের বাসায় তিতাসের বৈধ্য সংযোগ রয়েছে।
স্থানীয় আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য লোকজনে আমার ছোট ভাইকে মেরে দিয়েছে। সেই মামলার চার্জশীট দিয়েছে পুশিল। এছাড়া আগামী মাসে সম্মেলনকে কেন্দ্র করে উঠে পরে লেগেছে। এছাড়া তিন হাজার পরিবার থেকে টাকা নেয়ার অভিযোগ করা হচ্ছে, এই এলাকায় তো এত লোক বসবাসও করে না।