Severity: Warning
Message: mysqli::real_connect(): Headers and client library minor version mismatch. Headers:100324 Library:30120
Filename: mysqli/mysqli_driver.php
Line Number: 201
Backtrace:
File: /home/bnnews24/public_html/application/controllers/SS_shilpi.php
Line: 6
Function: __construct
File: /home/bnnews24/public_html/index.php
Line: 316
Function: require_once
প্রকাশ: ১০ জুন, ২০২২ ০৮:৪৪ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: সিঙ্গাপুরে প্রায় প্রতিবছরই একটি নির্দিষ্ট মৌসুমে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। তবে এ বছর সেই সময়ের অনেক আগেই শুরু হয়েছে এডিস মশার প্রকোপ। তার চেয়েও আশঙ্কা কথা, মৌসুম শুরুর আগেই গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন সেখানে। ফলে কিছুদিন পরে কী পরিস্থিতি হবে, তা রীতিমতো ভয় জাগাতে শুরু করেছে সিঙ্গাপুরে।
সিএনএনের খবর অনুসারে, দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার ছোট্ট দেশটিতে ২০২১ সাল জুড়ে মোট ৫ হাজার ২৫২ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছিল। কিন্তু চলতি বছরে এরই মধ্যে ১১ হাজারের বেশি মানুষ এতে আক্রান্ত হয়েছেন।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, এই পরিস্থিতি শুধু সিঙ্গাপুরের জন্য নয়, গোটা বিশ্বের জন্যই দুশ্চিন্তার বিষয়। কারণ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আগামী বছরগুলোতে এ ধরনের রোগের প্রাদুর্ভাব আরও নিয়মিত হয়ে উঠতে পারে।
ডেঙ্গু কোনো ছোটোখাটো রোগ নয়। এতে ফ্লুর মতো উপসর্গ, যেমন- তীব্র জ্বর, মাথাব্যথা এবং শরীরে ব্যথা দেখা দেয়। গুরুতর অবস্থায় রক্তপাত, শ্বাসকষ্ট, অঙ্গহানি, এমনকি মৃত্যুও ঘটতে পারে।
সিঙ্গাপুরের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ডেসমন্ড ট্যান বলেছেন, দেশে ডেঙ্গুর সংক্রমণ দ্রুত বাড়ছে। এটি নিয়ন্ত্রণ এখন জরুরি পর্যায়ে চলে গেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাম্প্রতিক বিরূপ আবহাওয়ার কারণে সিঙ্গাপুরে ডেঙ্গু পরিস্থিতি বেশি খারাপ হয়েছে। তাদের সমস্যাটি অন্যদের জন্যেও সতর্কসংকেত হতে পারে। কারণ, আরও অনেকে দেশ দীর্ঘায়িত উষ্ণ আবহাওয়া ও বজ্রবৃষ্টির সম্মুখীন হয়, যা মশা এবং ভাইরাস উভয়কেই ছড়াতে সহায়তা করে।
গত জানুয়ারি মাসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) একটি বৈশ্বিক ডেঙ্গু প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এটি এখন ১০০টিরও বেশি দেশে আঞ্চলিক রোগের রূপ নিয়েছে। গত ৫০ বছরে সংক্রমণ ৩০ গুণ বেড়েছে। ডেঙ্গু এখন নতুন নতুন এলাকায় ছড়ানোর সঙ্গে কেবল রোগীর সংখ্যাই বাড়ছে না, বিস্ফোরক আকারে প্রাদুর্ভাবও ঘটছে।
ডব্লিউএইচও’র তথ্যমতে, ২০১৯ সালে বিশ্বে রেকর্ড ৫২ লাখ ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছিল। ওই বছর এশিয়াজুড়ে প্রাদুর্ভাবের কারণে হাজার হাজার মানুষ মারা যায়। ফিলিপাইনে ডেঙ্গুতে শত শত প্রাণহানি হয়, আরও লক্ষাধিক মানুষ ঝুঁকিতে পড়ে। দেশটি এটিকে জাতীয় মহামারি ঘোষণা করেছিল। একই সময় বাংলাদেশের হাসপাতালগুলোতে রোগীদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা যায়। আর আফগানিস্তানে প্রথমবারের মতো ডেঙ্গুর সংক্রমণ রেকর্ড করা হয়।
এর পরের বছরই সিঙ্গাপুরের ইতিহাসে ভয়াবহতম প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। ২০২০ সালে নগররাষ্ট্রটিতে ৩৫ হাজার ৩১৫ জন এ রোগে আক্রান্ত হন, মারা যান অন্তত ২৮ জন।
এ বছর সিঙ্গাপুরে এখন পর্যন্ত মাত্র একজন ডেঙ্গুতে মারা গেলেও আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কোনো ঝুঁকি নিতে চায় না। সিঙ্গাপুর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, এ বছর ২৮ মে পর্যন্ত প্রায় ১১ হাজার ৬৭০ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন, এদের মধ্যে প্রায় ১০ শতাংশ রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে।
তবে সর্বোচ্চ সংক্রমণের মৌসুম মাত্র শুরু হওয়ায় বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ বছর সিঙ্গাপুরে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যায় নতুন রেকর্ড গড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ডিউক-এনইউএস মেডিকেল স্কুলের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো এবং উদীয়মান সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ রুক্লান্তি ডি আলউইসের মতে, সিঙ্গাপুরে ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধির পেছনে সাম্প্রতিক উষ্ণ ও আর্দ্র আবহাওয়ার পাশাপাশি নতুন শক্তিশালী ভাইরাস স্ট্রেইনের (ধরন) মতো একাধিক কারণ থাকতে পারে। তবে পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ করেছে জলবায়ু পরিবর্তন।
তিনি বলেন, অতীতের ভবিষ্যদ্বাণীমূলক মডেলগুলো দেখিয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন শেষ পর্যন্ত ভৌগলিক এলাকা বাড়িয়ে দেবে (যেখানে মশার বংশবৃদ্ধি হয়), সেইসঙ্গে ডেঙ্গু সংক্রমণের মৌসুমগুলোকেও দীর্ঘায়িত করবে।