ঢাকা, রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩ চৈত্র ১৪৩২, ১৬ জ্বমাদিউল সানি ১৪৪৭

কামু বাহিনীর দৌরাত্মে এলাকা ছাড়া অর্ধশত পরিবার


প্রকাশ: ১০ জুন, ২০২২ ০৬:৪৫ পূর্বাহ্ন


কামু বাহিনীর দৌরাত্মে এলাকা ছাড়া অর্ধশত পরিবার

নিজস্ব প্রতিবেদক: মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানের চিহ্নিত সন্ত্রাসী একাধিক হত্যা মামলার আসামি কামিজ উদ্দিন ওরফে কামু বাহিনী বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের কারণে এলাকায় এখন আতঙ্কের নাম কামু বাহিনী। বেপরোয়া এই কামু বাহিনীর অত্যাচার, নির্যাতনে প্রায় অর্ধশত পরিবার এলাকা ছাড়া হয়ে আছে। স্থানীয় লোকজন এ বাহিনীর অত্যাচার, নির্যাতন থেকে মুক্তি পেতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সহায়তা চেয়েছেন। 

মুন্সিগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) আবদুল মোমেন বলেন, কোন বাহিনী গজিয়ে উঠে সাধারণ মানুষকে নির্যাতন বা বে আইনী কর্মকান্ড এটা হতে পারে না। আমি এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেব। 

সিরাজদিখান উপজেলা চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন বলেন, কামু বাহিনী অত্যাচারের কথা এখানকার সকলেই জানে। প্রানভয়ে কেউ মুখ খোলেনা। একাধিক হত্যা মামলার আসামী হয়েও প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
 
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সিরাজদিখান উপজেলার বালুচর ইউনিয়নের পুর্ব চান্দেরচর গ্রামে গতবছর ৮ নভেম্বর জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে সন্ত্রাসী কামিজ উদ্দিন বাহিনীর হামলায় নিহত হন আমির আলী। বর্তমানে নিহতের পরিবারকে একের পর এক হুমকি দিয়ে এলাকা ছাড়া করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

নিহতের স্ত্রী আনোয়ারার অভিযোগ, কামিজ উদ্দিন কামু বাহিনীর ভয়ে আমরা এলাকা ছাড়তে বাধ্য হইছি। আমার স্বামীকে হত্যা করেছে। আমার বড় মেয়েকে অপহরণ করেছে। তিন বছর তার কোনো খোঁজ পাইনি। এখন আমার মেঝ মেয়ের উপর লোলুপ দৃষ্টি পড়েছে ওই বাহিনীর সদস্যদের। এখন মামলা তুলে নিতে  দিন রাত বাড়ীতে এসে নানা হুমকি দিচ্ছে। 

আমীর আলী হত্যার ঘটনায় মামলা হলেও জামিনে বেরিয়ে কামুর লোকজন আবারো মেতে উঠেছে ভয়ংঙ্কর সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে। কামু বাহিনীর অত্যাচারে বাড়ি ছাড়া তাদের মধ্যে ফারুক, সুজন,রিয়াদ, ইসরাফিল, নিহত মিলনের স্বজন রনি,আলী ইসলামসহ আরো অনেকে। 

স্থানীয় সূত্র জানায়, ২০২১ সালের ২৪ মার্চ পাইনেরচর এলাকায় মিলন নামের এক যুবককে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে কামু বাহিনী। ওই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরাও ভয়ে তার বিরুদ্ধে মুখ খোলেনা। এছাড়াও সাধারণ মানুষের জমির মাটি নিয়ে অন্যের কাছে বিক্রি, জমি দখল তার বাহিনীর লোকজনের নৈমিত্তিক ঘটনা। 

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, এই কামু বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। কেউ কথা বললেই তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন মিথ্যা মামলা হামলা বা কখনো হত্যার  হুমকিতে পড়তে হচ্ছে। পাশাপাশি পরিবার নিয়ে এলাকায় বসবাস অনিরাপদ হয়ে দাড়িয়েছে। 

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় কামুর লোকজন আরো বেপরোয়া হয়ে নিরীহ মানুষের ভিটেমাটি জমি এমনকি ঘরবাড়ির জিনিষপত্র ছিনিয়ে নিচ্ছে। কামু বাহিনীর অথ্যাচারের শিকার অসংখ্য মানুষ এসব সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে র্যাব-১০ এর অধিনায়ক ডিআইজি মাহফুজুর রহমান বলেন, আমরা বিষয়টি দেখবো। আইনশৃঙ্খলা পরিপন্থি কাজ করলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।


   আরও সংবাদ