প্রকাশ: ৯ জুন, ২০২২ ১৬:২৭ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: টিপু হত্যাকাণ্ডে শুটার মাসুম ওরফে আকাশকে জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে মুসার নাম। তবে প্রধান আসামি সুমন সিকদার মুসা দেশের বাইরে চলে যাওয়ায় মামলার তদন্তে হিমশিম খেতে হয় ডিবিকে। গতকাল বৃহস্পতিবার ডিবিতে নিয়ে আসার পরে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মুসা স্বীকার করেছেন, হত্যাকাণ্ডে তার সংশ্লিষ্টটা আছে।
শুক্রবার সকাল ১১টায় মিন্টু রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিবি প্রধান এ কে এম হাফিজ আক্তার।
ডিবি প্রধান বলেন, ‘টিপু হত্যার প্রধান শুটার আকাশকে গ্রেপ্তারের পরে তার জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে এই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা ও সমন্বয় করেছে মুসা।’
ডিবি প্রধান বলেন, ‘মুসাকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আজকে আদালতে তোলা হবে রিমান্ডের জন্য। ১৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হবে।’ এতে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে বলে মনে করেন ডিবি প্রধান।
শাহজাহানপুর আমতলা এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু হত্যাকাণ্ডের মাস্টার মাইন্ড মুসাকে গতকাল ওমান থেকে দেশে ফিরিয়ে এনেছে পুলিশ। গত ৩ জুন ওমানে গ্রেপ্তার হন সুমন শিকদার ওরফে মুসা। তাকে দেশে ফেরাতে পুলিশের তিন সদস্যের একটি টিম যায় ওমানে। সর্বশেষ ৯ জুন মুসাকে নিয়ে দেশে ফিরে আসে পুলিশের টিম।
টিপু হত্যাকাণ্ডে সাথে জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তাররা হলেন- শুটার মাসুম মোহাম্মদ আকাশ, আরফান উল্লাহ দামাল, নাসির উদ্দিন ওরফে কিলার নাসির, ওমর ফারুক, মোরশেদুল আলম কাইল্লা পলাশ, আবু সালেহ শিকদার ওরফে শুটার সালে, নাসির উদ্দিন মানিক, মোঃ মারুফ খান, মশিউর রহমান ইকরাম, ইয়াসির আরাফাত সৈকত, সেকেন্দার শিকদার, হাফিজুল ইসলাম হাফেজ ও সুমন সিকদার মুসা।
এই হত্যাকাণ্ডে মূসার ভূমিকা কি ছিলো? সে কি ভাবে সমন্বয় করেছিলো- এমন প্রশ্নের জবাবে ডিবি প্রধান বলেন, আমরা মাসুম মোহাম্মদ আকাশকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়েছি তখন মাসুম রিমান্ডে পরিকল্পনাকারী ও সমন্বয়ক হিসেবে মূসার নাম বলেছে। যেহেতু সে মূল ভূমিকায় ছিলেন। নিজেই গুলি করেছে। তাই মাসুমের জবানবন্দি ছাড়াও আমাদের তদন্তে মূসার নাম এসেছে। এছাড়া এই ঘটনার আগেও মোচা বাবু হত্যা এবং আগেও কিছু ঘটনা ঘটেছে।
প্রতিটি জিনিস ধরে আমরা আগাচ্ছি। মূসাকে আদালতে হাজির করে রিমান্ডে আনা হবে। তখন অনেক প্রশ্নের উত্তর জানার চেষ্টা করা হবে। মাসুমের জবানবন্দিতে অনেক কিছু এসেছে। এবার মূসাকে জিজ্ঞাবাদে জানা যাবে আরও কারা কারা জড়িত। কার কি ভূমিকা ছিলো। সব বিষয়গুলো জানতে মূসাকে রিমান্ডে আনতে হবে।
আরেক সন্দেভাজন মোল্লা শামিম দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। মূসার মতো তাকেও আনা হবে কি না জানতে চাইলে গোয়েন্দা প্রধান বলেন, মোল্লা শামীম পালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু বিষয় আছে। সে কি ভাবে পালিয়েছে এটি হওয়ার যায়নি। আমরা শুনেছি। এটা নিয়ে কাজ কিরছি। সে পাসপোর্ট ব্যবহার করে গেছে নাকি বিনা পাসপোর্টে গেছে সে বিষয়গুলো জানতে হবে।
মূসাকে দেশে আনা হয়েছে ২০ ঘন্টা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে তার কাছ থেকে কি জানা গেলো? আমরা প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদে ও গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের কাছ থেকে বেশ কিছু তথ্য পেয়েছি। মূসাকে রিমান্ডে আনার পর সেগুলো আবার মিলিয়ে দেখা হবে। এর আগে কিছু বলা যাচ্ছে না।
টিপু হত্যার পরেও তার পরিবার বারবার হুমকি পাচ্ছিল। কারা হুমকি দিচ্ছে এ বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া গেছে কি না জানতে চাইলে- এই ঘটনায় একটি জিডি হয়েছে। আমরা স্থানীয় থানায় ও ডিসিকে বলা হয়েছে টিপুর স্ত্রীকে যেনো নিরাপত্তা দেওয়া হয়।
নিহত টিপুর স্ত্রী বলেছেন মূসা মূল পরিকল্পনাকারী হতে পারে না। এর পেছনে অন্য কেউ আছে। এই দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে ডিবি প্রধান বলেন, এটি মামলার তদন্তের একটি পার্ট। আমরা সবার কথাগুলো গুরুত্বসহকারে দেখছি। যেহেতু নিহতের স্ত্রী বকেছে, মূসা হতে পারে না, অন্য কেউ হতে পারে। যেহেতু তিনিও একজন রাজনৈতিক নেতা। তাই সব কিছু আমরা আমলে নিয়ে আমরা তদন্তকাজ চালিয়ে যাচ্ছি।