ঢাকা, রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩ চৈত্র ১৪৩২, ১৬ জ্বমাদিউল সানি ১৪৪৭

ধর্ষণের কথা ফাঁস করে দিতে চাওয়ায় ছয় টুকরা হলেন জোৎস্না


প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২২ ০৯:১৯ পূর্বাহ্ন


ধর্ষণের কথা ফাঁস করে দিতে চাওয়ায় ছয় টুকরা হলেন জোৎস্না

নিজস্ব প্রতিবেদক: বেশ কিছুদিন ধরে শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন জোৎস্না। সমস্যার কথা শুনে স্থানীয় ফার্মেসি মালিক জিতেশ চন্দ্র গোপকে তাকে ফার্মেসিতে যেতে বলেন। এরপর ফার্মেসিতে গেলে পালাক্রমে ধর্ষণের শিকার হন ওই ভূক্তভোগী নারী। ধর্ষণের কথা সবাইকে জানিয়ে দেওয়ার কথা বললে জিতেশসহ তার সহযোগীরা জোৎস্নাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে বলে জানিয়েছে সিআইডি।

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরের একটি ফার্মেসির ভেতরে প্রবাসীর স্ত্রী শাহনাজ পারভীন জোৎস্নার (৩৫) নামের এক নারীর ছয় টুকরা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

ওই ঘটনায় জড়িতদের গতকাল শুক্রবার রাজধানীর ভাটারা নুরেরচালা এলাকায় অভিযান চালিয়ে জিতেশকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জগন্নাথপুর পৌর এলাকায় অভিযান চালিয়ে অনজিৎ ও অসীত গোপকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আজ শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) মালিবাগ সিআইডির সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এতথ্য জানান সিআইডির এলআইসি শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএসপি) মুক্তা ধর।

গ্রেপ্তাররা হলেন- জিতেশ চন্দ্র গোপ (৩০), অনজিৎ চন্দ্র গোপ (৩৮) ও অসীত চন্দ্র গোপ (৩৬)।

তিনি বলেন, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর থানার পৌরসভা ব্যারিস্টার আবদুল মতিন মার্কেটের অভি মেডিকেল হল নামের একটি ওষুধের দোকান থেকে শাহনাজ পারভীন জোৎস্না নামের এক নারীর ছয় টুকরা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত নারী জগন্নাথপুর থানার নারকেলতলা গ্রামের সৌদি প্রবাসী ছরকু মিয়ার স্ত্রী। এ ঘটনায় নিহতের ভাই হেলাল উদ্দিন বাদী হয়ে ১৭ ফেব্রুয়ারি জগন্নাথপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। 

এসএসপি মুক্তা ধর বলেন, ওষুধ কেনার সুবাধে অভি মেডিকেল হলের মালিক জিতেশের সঙ্গে শাহনাজ পারভীন জোৎস্নার সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। জোৎস্না কিছুদিন ধরে শারীরিক গোপন সমস্যায় ভুগছিলেন। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি জিতেশ জোৎস্না মায়ের প্রেশার মাপার জন্য তাদের বাড়িতে যায়। তখন জোৎস্না তার গোপন সমস্যার কথা জিতেশকে জানালে তিনি তাকে ফার্মেসিতে যেতে বলেন। 

ওইদিন বিকেলে জোৎস্না জিতেশের দোকানে গেলে তাকে দোকানে কাস্টমার রয়েছে বলে অপেক্ষা করতে বলে সময় ক্ষেপণ করতে থাকেন। এদিকে রাত গভীর হলে জোসনার বাসায় যাওয়ার অস্থিরতা বেড়ে যায়। তখন ওই ফার্মেসীর মধ্যে জোৎস্নাকে একটি ঘুমের ওষুধ খেতে দেয় জিতেশ। এতে জোৎস্না ঘুমিয়ে পড়লে।

পরে জিতেশ ও তার দুই সহযোগী অনজিৎ চন্দ্র গোপ ও অসীত গোপ তাকে ধর্ষণের পরিকল্পনা করে। এরপর রাত গভীর হলে আশেপাশের দোকান বন্ধ হয়ে যায়। তখন জিতেশসহ তারা এনার্জি ড্রিংকস পান করে জোৎস্নাকে জোরপূর্বক সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে। 

ধর্ষণের বিষয়টি শাহনাজ তার পরিবারকে জানিয়ে দেবে বললে তখন, জিতেশ ও তার সহযোগীরা জোৎস্নার গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ও তার মুখে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে ওই নারীর লাশ ছয় টুকরা করে মাছের ঘেরে ফেলে দেওয়ার পরিকল্পনা করে বলে জানান সিআইডির এই কর্মকর্তা।

নিহত জোৎস্না গত ২০১৩ সাল থেকে পৌর শহরের নিজের বাসায় দুই ছেলে, এক মেয়ে, বৃদ্ধা মা ও ভাই-বোনদেরকে নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। তার স্বামী সৌদি আরব প্রবাসী।


   আরও সংবাদ