ঢাকা, রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩ চৈত্র ১৪৩২, ১৬ জ্বমাদিউল সানি ১৪৪৭

সামাজিক মাধ্যমে পরিচয়ের পরে বিভিন্ন বাহিনীর নামে প্রতারণা


প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারী, ২০২২ ০৭:৫০ পূর্বাহ্ন


সামাজিক মাধ্যমে পরিচয়ের পরে বিভিন্ন বাহিনীর নামে প্রতারণা

নিজস্ব প্রতিবেদক: সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে বিভিন্ন জনের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলে চক্রটি। পরে কৌশলে বিভিন্ন সময় আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ধারণ করে ভুক্তভোগীদের হেনস্তা ও ব্ল্যাকমেল করে থাকে। এই সব কর্মকাণ্ডে তারা ভুয়া সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিত বলে জানিয়েছে র‍্যাব। 

গতকাল শনিবার রাত থেকে আজ শনিবার বেলা ১টা পর্যন্ত রাজধানীর ফার্মগেট ও মহাখালী এলাকায় অভিযান চালিয়ে ট্রান্সজেন্ডার নারীকে (বিউটি ব্লগার) যৌন নির্যাতন ও হত্যাচেষ্টার ঘটনার মূল হোতা ইশতিয়াক আমিন ফুয়াদসহ তিনজনকে তাদের গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। 

পরে আজ রোববার বিকেল ৪টায় রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। 

গ্রেপ্তাররা হলেন-ফুয়াদ আমিন ইশতিয়াক সানি (২১), সাইমা শিকদার নিরা আরজে নিরা (২৩) ও আবদুল্লাহ আফিফ সাদমান রিশু (১৯)। তাদের কাছ থেকে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া মোবাইল উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত অবৈধ ওয়াকিটকি সেট, খেলনা পিস্তল, মোবাইল উদ্ধার করা হয়েছে। 

তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে গ্রেপ্তাররা একটি সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের সদস্য। এদের মধ্যে ইশতিয়াক এই চক্রের মূল হোতা। এ ছাড়া আরজে নীরা ও অপর সদস্য সাদমান আফিফ রিশু তার অন্যতম সহযোগী হিসেবে কাজ করত। তা ছাড়া চক্রটি গত ২ বছর ধরে নানাবিধ কৌশলে জিম্মি, ব্ল্যাকমেল ও প্রতারণা করে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিত। 

র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, চক্রটির অপকর্মের জন্য তাদের ভাড়া বাসা নিয়ে জোরপূর্বক আপত্তিকর ভিডিওগুলো ধারণ করে ব্ল্যাকমেল করত। এ ছাড়া অনলাইনেও ভিকটিমদের ফাঁদে ফেলত তারা। চক্রের সদস্যরা রাজধানীর বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার সময়ে তাদের পরস্পরের সঙ্গে পরিচয় হয়। এরই মধ্যে তারা প্রচারণায় হাত পাকা করে ফেলেছে। 

তিনি বলেন, ভুক্তভোগীর সঙ্গে কিছুদিন পূর্বে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিকটিমের সঙ্গে সাদমান আফিফ রিশুর পরিচয় হয়। পরে ওই পরিচয়ের সূত্রে ধরে ভাটারা এলাকার (বসুন্ধরা) একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে একটি রেস্টুরেন্টের সামনে রিশুর সঙ্গে ভুক্তভোগী সাক্ষাৎ করেন। পরে সারপ্রাইজ দেওয়ার কথা বলে ওই বিউটি ব্লগারকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ইশতিয়াকের ভাড়া বাসায় নিয়ে যায়। ওই সময় ইশতিয়াক, নিরা ও রিশু জোরপূর্বক ভুক্তভোগীকে মারধর, শ্লীলতাহানি ও যৌন নিপীড়ন করার পাশাপাশি ভিডিও ধারণ করেন। 

এ সময় তারা ভুক্তভোগীর সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন, স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয়। এ ছাড়া আইন-শৃঙ্খলা ও সামরিক বাহিনীর ভুয়া পরিচয় দিয়ে মামলায় জড়িয়ে দেওয়ার দেখিয়ে এক লাখ টাকা দাবি করেন। পরে ভুক্তভোগীকে থানায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে রামপুরায় নামিয়ে দেয়। গ্রেপ্তার আসামি ইশতিয়াকের বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় প্রতারণাসহ ভুয়া পরিচয়ের কারণে ২টি মামলা রয়েছে। ওই মামলায় সে কারাভোগ করেছে বলে জানান র‍্যাবের এই কর্মকর্তা। 


   আরও সংবাদ