প্রকাশ: ১৯ জানুয়ারী, ২০২২ ১০:১২ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: মির্জা মুকুল। ল্যান্ড ম্যাজিস্ট্রেট! বাংলাদেশ মেরিন একাডেমিতে ট্রেনিং করিয়ে অস্ট্রেলিয়া পোর্টে চাকরিতে নিয়োগ দিতে তার জুড়ি নেই! রাজধানী থেকে ভুয়া ল্যান্ড ম্যাজিস্ট্রেট ও অস্ট্রেলিয়ায় পোর্টে চাকরি দেওয়ার নামে অর্থ আত্মসাৎকারী এক প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ৪৩৫ বাড়ির দ্বিতীয়তলায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। পরে আজ বুধবার (১৯ জানুয়ারি) রাজধানীর মালিবাগ সিআইডির সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসেন।
তার কাছ থেকে ২৬টি পাসপোর্ট,৩টি অটো সিল, বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি ট্রেনিং পাসের কার্ড ৩৫ টি, বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি ট্রেনিংয়ের ভুয়া যোগদানপত্রের কপি ৭ টি, বাংলাদেশ সরকার ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর লেখা ও ছবি সংবলিত পাসপোর্টের আবেদন ফরম ২৫ টি, মেরিন একাডেমি চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থির চিত্র ১৫ টি, প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
.jpeg)
ইমাম হোসেন বলেন, মির্জা মুকুল দীর্ঘদিন ধরে স্বপ্নবাজ বেকারদের অস্ট্রেলিয়ার পোর্টে চাকরি দেওয়ার নাম করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। আবদুল কাদের নামের এক ভুক্তভোগীর মামলার বিষয়টি তদন্ত করতে গিয়ে মুকুলকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদ ও তদন্ত সাপেক্ষে জানা যায় মুকুল ও পলাতক অন্য আসামিরা একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র। তারা দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ মেরিন একাডেমিতে ট্রেনিং করিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় পোর্টে চাকরির ভুয়া নিয়োগপত্র তৈরি করে প্রত্যন্ত গ্রামের সহজ সরল লোকজনদের প্রতারিত করে টাকা আত্মসাৎ করে।
সিআইডি জানায়, আবদুল কাদের ও মির্জা মুকুল একই এলাকায় থাকায় তাদের প্রায়ই দেখা হতো। এ সময় মুকুল নিজেকে ল্যান্ড ম্যাজিস্ট্রেট হিসাবে পরিচয় দিত। বাদীকে জানায় যে, তার সঙ্গে সরকারের উচ্চপর্যায়ে জানা শোনা আছে। তার কাছে সরকারিভাবে অস্ট্রেলিয়ায় লোক পাঠানোর নির্ভরযোগ্য মাধ্যম আছে এবং এই বিষয়ে বাদীর পরিচিত বন্ধু ও স্বজনদের সরকারি খরচে পাঠানোর প্রস্তাব করে। যাদেরকে পাঠানো হবে তারা মেরিন টু মেরিন অর্থাৎ অস্ট্রেলিয়ার শিপিং পোর্টে কাজ করবে।
প্রতারক আরও ভুক্তভোগীদের জানায়, অস্ট্রেলিয়া পৌঁছাতে একজনের মোট ৮ লাখ টাকা খরচ হবে। যাদেরকে পাঠানো হবে তাদের প্রথমে চট্টগ্রাম মেরিনে এক মাসের ট্রেনিং করতে হবে। এভাবে সে ভিকটিমসহ কয়েকজনের মাধ্যমে ৩৬ জনকে অস্ট্রেলিয়ায় পাঠানোর জন্য প্রলুব্ধ করেন। তাদের কাছ থেকে মোট ৫৭ লাখ ৬০ হাজার টাকা নেন। তবে অস্ট্রেলিয়ায় পাঠানোর কোনো অগ্রগতি জানাতে পারেননি। পরে তার প্রতারণার বিষয়টি জানতে পারেন ভুক্তভোগীরা।
সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি ইমাম হোসেন জানান, মুকুল আগে ওমান থাকতেন। তিনি ৯ বছর ওমানের সালাহ সি-পোর্টে শ্রমিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সেখান থেকে মেরিনভিত্তিক প্রতারণার পরিকল্পনা করেন। ভুয়া কাগজপত্র তৈরিতেও দক্ষ তিনি।