প্রকাশ: ১৯ জানুয়ারী, ২০২২ ০৯:৫০ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: পেশায় রং মিস্ত্রীর সহকারী ছিলেন আব্দুল করিম। সহকারী হলেও কাজের যন্ত্রপাতি ছিল করিমের। তারপরও মিস্ত্রী মনির তাকে দৈনিক কম মজুরি দিত। তাই তার সঙ্গে কাজে যেতে আপত্তি জানায় করিম। এতেই এলোপাতাড়ি মারপিট করলে আ.করিমের মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছে সিআইডি।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে অভিযান চালিয়ে গত ৫ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ ওই ঘটনায় শরীয়তপুরের গোসাইরহাট থেকে মনিরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ বুধবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খায়রুল আমিন।
তিনি বলেন, ঘটনার দিন সকাল ৭টায় করিমের বাসায় আসে সহকর্মী রংমিস্ত্রী মনির। মনির হোসেনের সাথে কাজে যেতে অনিহা প্রকাশ করেন করিম। কারণ হিসেবে বলেন, তার যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে মনির কাজ করলেও করিমকে মজুরি কম দেওয়া হত। এমন অভিযোগ তোলায় করিমকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মেরে গুরুতর আহত করে মাটিতে ফেলে দিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। পরে করিমের ডাক চিৎকারে তার পরিবারের সদস্যরা এসে তাকে উদ্ধার করে জোবেদ আলী মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য দিলে তারা পরীক্ষার টাকা সংগ্রহে করিমকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। বাড়িতে নেওয়ার কিছুক্ষণ পরই করিম মারা যান। ওই ঘটনায় নিহতের স্ত্রী মোসা. নারগিস মনিরের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মনির জানায় প্রায় ৮ বছর ধরে করিম ঢাকা, নরসিংদী ও নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান করে রংমিস্ত্রির কাজ করে আসছিল। তার সাথে প্রায় ৪ বছর ধরে কাজের সুবাদে মনিরের পরিচয় হলে সে করিমের সহকারী হিসেবে কাজ করতো। তাদের উভয়ের মধ্যে কাজের মজুরিসহ বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে মনোমালিন্য দেখা দেয়।
তিনি জানান, এক সাথে কাজের পরিপ্রেক্ষিতে দৈনিক হাজিরা চার'শ টাকা এবং সহকারী হিসেবে মনির তার নিজের জন্য দৈনিক হাজিরা পাঁচ'শ টাকার নতুন একটি কাজ ঠিক করে। এদিকে করিম হেড মিস্ত্রী এবং তার যন্ত্রপাতি দিয়েই মূলত ঠিকাদারীর কাজ করা হয়। তবু তার দৈনিক হাজিরা কম বিধায় সে মনিরের সাথে কাজে যেতে অস্বীকৃতি জানান। তখন মনির হোসেন উত্তেজিত হয়ে করিমকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মেরে গুরুতর আহত করে মাটিতে ফেলে দিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায় এবং উক্ত আঘাতের কারণেই তার মৃত্যু হয়।