প্রকাশ: ১৯ জানুয়ারী, ২০২২ ০৯:৩৭ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রতারক তারেক সরকার বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পরিচয়ে সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের কাছে ফোন করে নানান তদবির বাণিজ্য করতে গিয়ে ধরা পড়েছেন। তবে এবার আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক পরিচয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিবকে ফোন করে চাকরির সুপারিশ করতে গিয়ে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন ওই প্রতারক।
আজ বুধবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর মিন্টু রোডে ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিএমপির মিডিয়া মুখপাত্র উপ-কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ ফারুক হোসেন।
ডিসি ফারুক হোসেন জানান, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক পরিচয়ে দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব আক্তার হোসেনকে ফোন করেন তারেক সরকার। নিজেকে নানক পরিচয় দিয়ে একটি চাকরির তদবির করেন। কিন্তু তার আচরণ সন্দেহ হওয়ায় বিষয়টি পুলিশকে জানান আক্তার হোসেন। বিষয়টি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) মিরপুর বিভাগকে। প্রযুক্তি ব্যবহার করে তদন্তের মাধ্যমে তারা জানতে পারে তারেক একজন প্রতারক। সে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করে আসছিল। তার বিরুদ্ধে ৩টি প্রতারণা মামলাও রয়েছে। জাহাঙ্গীর কবির নানকের ব্যবহৃত ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন নম্বর ক্লোন করে সচিবকে ফোন করেন তারেক।
ডিসি বলেন, রাজধানীর পল্টন এলাকা থেকে গ্রেপ্তারের পর তারেক প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গোয়েন্দা পুলিশকে জানিয়েছে, তারেক নরসিংদী জেলা জাতীয়তাবাদী প্রচারদলের সদস্য সচিব। নিজেকে বিএনপি নেতা খায়রুল কবির খোকনের এপিএস বলে পরিচয় দেয়। সে ২০০৬ সালে কারারক্ষী পদে নিয়োগ পায় এবং ২০২০ সালে একজন সংসদ সদস্যকে আইজি প্রিজন্স পরিচয়ে ফোন করার অপরাধে চাকরি চলে যায়। চাকরি হারিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতার নাম ব্যবহার করে সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের ফোন দিয়ে তদবির বাণিজ্যে করে আসছিল তারেক। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের মধ্যে নিয়োগ সংক্রান্ত বিভিন্ন কাগজ পত্রাদি (যেমন- এডমিট কার্ড, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি নিয়োগ প্রতি আর্থিক লেনদেনের হিসাবসহ বিভিন্ন তথ্য পাওয়া যায়।
ফারুক হোসেন বলেন, তারেকের বিরুদ্ধে নরসিংদী মডেল থানায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইন ও টাঙ্গাইল সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন মামলা রয়েছে। এ ছাড়া রাজধানীর গুলশান থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা রয়েছে। এ মামলায় সে ৬ মাস কারাভোগ করে জামিনে মুক্ত হয়।
বিএনপি নেতার পিএস পরিচয় ব্যবহার করার বিষয়ে কোনো বক্তব্য পাওয়া গেছে কি না জানতে চাইলে ফারুক হোসেন বলেন, তদন্তের প্রয়োজনে যদি পিএস পরিচয়ের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে বিএনপি নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। বিএনপি নেতা পরিচয় দিলেও তার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
তারেক কারারক্ষী চাকরি নেওয়ার সময়ে কোনো সুপারিশ ছিল কি না জানতে চাইলে ফারুক হোসেন বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। গ্রেপ্তার তারেকের বিরুদ্ধে রমনা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।